নেবুতলার জঙ্গি আস্তানায় কিছুক্ষণ পর অপারেশন
ঝিনাইদহের সদর উপজেলার নেবুতলায় অপারেশন শুরু হবে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায়। পুলিশ প্রতিবেশীদের বাড়ির গৃহপালিত পশু নিয়ে বাড়ি ত্যাগ করতে বলেছে। সম্প্রতি নেবুতলায় মৃত শরাফত হোসেনের বাড়িতে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে শরাফত হোসেনের দুই ছেলে শামীম (২২), হাসান (৩৫) ও তাদের এক বন্ধুকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। বন্ধুটির নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ বন্ধু প্রায় ৭ মাস আগে এসে তাদের বাড়িতেই থাকতো। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
নেবুতলা গ্রামের হায়দার আলী জানান, মৃত শরাফত আলী প্রায় ২০ বছর আগে সদর উপজেলার কামারকুণ্ডু এলাকা থেকে নেবুতলায় এসে বসবাস শুরু করেন। প্রায় ১০ বছর আগে মারা যান শরাফত হোসেন। শরাফত হোসেনের বড় ছেলে হাসান রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। আর ছোট ছেলে শামীম ঝিনাইদহ পলিটেকনিকে পড়াশোনা করে।
তিনি আরো জানান, শরাফত হোসেনের দুই ছেলেকে কখনো কোনো আড্ডা দিতে দেখিনি।
জসিম উদ্দিন নামের একজন জানান, শরাফত হোসেনের দুই ছেলে যে জঙ্গিবাদে জড়িত এটা পুলিশের অভিযান দেখেই টের পেলাম। এর আগে এমন কোনো কার্যক্রম দেখিনি। শরাফত হোসেনের ছোট ছেলে শামীম অনেক মেধাবী। পড়ালেখায় সে অনেক ভালো। আর বাবা শরাফত মারা যাওয়ার পর বড় ছেলে হাসান রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসারের হাল ধরেন।
খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. দিদার আহমেদ রোববার দুপুরে মহেশপুরের বজরাপুর গ্রামের জঙ্গি আস্তানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সদর উপজেলার নেবুতলা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৮টি বোমা, ১টি নাইন এমএম পিস্তল ও ৬টি গ্রেনেড পাওয়া গেছে। এরপর সন্ধ্যায় ডিআইজি মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর গ্রামের জঙ্গি আস্তানার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন। তিনি ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে সদর উপজেলার নেবুতলায় অভিযান চালানো হবে।
এর আগে ২২ এপ্রিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের ঠনঠনেপাড়ায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। অভিযানের নাম ছিল ‘অপারেশন সাউথ প’ বা দক্ষিণের থাবা। প্রায় ৪ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের অভিযানে ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে বিস্ফোরক তৈরি রাসায়নিক ভর্তি ২০টি ড্রাম, একটি সেভেন পয়েন্ট সিক্স বোরের পিস্তল, একটা ম্যাগাজিন, সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পাঁচটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়।
অপারেশন ‘সাউথ প’ সমাপ্ত ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদ জানান, বাড়িটিকে জঙ্গিদের বোমা তৈরির কারখানা বলা যেতে পারে। এ বাড়িতে তিন-চার জন জঙ্গি ছিল। তারা আগেই পালিয়ে গেছে। বাড়িটিতে জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিভাগীয় পর্যায়ের লোকজন আসা যাওয়া করত বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য চালু নেই