নেতাদের যে বার্তা দিলেন খালেদা
জনমত জোরালো করতে সফর কর্মসূচির পাশাপাশি আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক তিনটি বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রথম দুইটি বৈঠকে নেতাদের মতামত শুনে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দিলেও স্থায়ী কমিটির বৈঠকটি ছিল ব্যতিক্রম। বৈঠকের পুরো সময়জুড়ে নীতিনির্ধারক ফোরামের ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন খালেদা জিয়া। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নীতিনির্ধারণী বিষয় ও আন্দোলন কর্মসূচিতে তাদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় তিনি ক্ষুব্ধ। রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা মনে করেন, এ ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যমে নেতাদের প্রতি কিছু বার্তা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। বার্তাগুলো কি এ নিয়ে রীতিমতো আলোচনাও জমে উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যমে দলের নিষ্ক্রিয়, আঁতাত ও কোন্দলপ্রবণ নেতাদের সতর্ক করেছেন খালেদা জিয়া। বার্তা দিয়েছেন, শীর্ষ নেতাদের গতিবিধি নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে। দায়িত্ব পালনে কার্যকর ভূমিকা না রাখলে কঠোর হবেন তিনি। কারণ সারা দেশে বিএনপির প্রতি সাধারণ মানুষের সমর্থন থাকলেও নেতাদের অদক্ষতা ও সুবিধাবাদী মনোভাবের কারণে আন্দোলন সাফল্যের মুখ দেখছে না। স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে ঢাকা মহানগর নেতাদের প্রতি একটি বার্তা রয়েছে খালেদা জিয়ার। অন্তর্কোন্দল ও গ্রুপিংয়ের কারণে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন তিনি। এটা মহানগর নেতাদের প্রতি সতর্কবার্তা। তিনি মনে করছেন, চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য ঢাকা মহানগরে দ্রুত দলের কমিটি পুনর্গঠন কাজ সম্পন্ন করা প্রয়োজন। আগামীদিনের আন্দোলনে ঢাকা মহানগরকেই পালন করতে হবে মূল ভূমিকা। তারা যেন ঐক্যবদ্ধভাবে তার প্রস্তুতি নেয়। নেতাকর্মীদের তিনি বার্তা দিয়েছেন, আগামীতে দীর্ঘমেয়াদি সময়সাপেক্ষ নয়, স্বল্পমেয়াদি কার্যকর কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনে সফলতা আনতে চায় বিএনপি। তাই নেতাকর্মীরা যাতে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে যে কোন কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেয়। সেই জন্য জনসংযোগের মাধ্যমে জনমত জোরালো করাতে যাতে প্রাধান্য দেয়। এবারের আন্দোলনে আর পিছপা হওয়া যাবে না। ভালোভাবে আটঘাট বেঁধেই রাজপথে নামতে হবে। এজন্য নানামুখী আন্দোলন কৌশল ও পাল্টা কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে। বৈঠকে খালেদা জিয়া অতীত আন্দোলনে ঢাকার ব্যর্থতাকে এখন প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এবার আন্দোলনে ঢাকা আর ব্যর্থ হবে না বলেও সারাদেশের তৃণমূল নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করছেন। তিনি অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে খোঁজ-খবর নিয়ে সরকারের দুর্নীতির তথ্য-প্রমাণ যোগাড়ের তাগিদ দিয়েছেন। এছাড়া উপর্যুপরি মিথ্যা মামলা দায়ের, স্পর্শকাতর মামলা নেতাদের জড়ানোর মাধ্যমে নেতৃত্বকে আইনি জটিলতায় জড়িয়ে ফেলার বিষয়টি গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছে শীর্ষ নেতৃত্বকে। বিশেষ করে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ৮ই নভেম্বরের সমাবেশ করতে না পারা ও এ নিয়ে নেতাদের নীরবতা কষ্ট দিয়েছে খালেদা জিয়াকে। গতকাল দলের স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য ও কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠকে খালেদা জিয়ার বক্তব্য এবং বিক্ষুব্ধতার বিষয়টি এভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। এদিকে বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে দলের জাতীয় কাউন্সিলের ব্যাপারে আলোচনা ওঠলেও সার্বিক পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। তবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই আরও কয়েকটি জেলা সফর করবেন খালেদা জিয়া। এছাড়া সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা না হলেও স্বল্প সময়ের আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। চূড়ান্ত আন্দোলনে পথযাত্রা, গণকারফিউ, স্বেচ্ছায় কারাবরণ, হরতাল, অবরোধ, ঘেরাওয়ের মতো লাগাতার কর্মসূচি দেয়া হতে পারে।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পদ এবং দায়িত্ব অনুযায়ী যথাযথ ভূমিকা পালন করছে না নেতারা। নেতারা দলীয় স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। অনেকের ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে সমঝে চলার অভিযোগও উঠেছে। নেতাদের অনেকের সঙ্গে কর্মী ও সাধারণ মানুষের যোগাযোগ নেই বললেই চলে। স্বাস্থ্যগত কারণেও অনেকে নিষ্ক্রিয়। কিন্তু কেউ পদ ও দায়িত্ব ছাড়তে রাজি নয়। আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় হলেও অন্তর্কোন্দলের মাধ্যমে দলীয় সিদ্ধান্তের বিপরীতে নানা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে তারা সক্রিয়। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, আন্দোলন কৌশল প্রণয়নে দায়িত্বশীল নেতারা বাস্তবভিত্তিক পরামর্শ, প্রস্তাবনা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বৈঠকে নীতিনির্ধারক ফোরামের নেতারা আন্দোলন কর্মসূচিতে ভূমিকা রাখার কথা বললেও বাস্তবে তারা নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করেন। তৃণমূল কর্মীদের মনোভাবকেই ধারণ করছেন খোদ খালেদা জিয়াও। বৈঠকে খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আপনারা কী করছেন? সঠিক কোন পরামর্শ দিতে পারছেন না। কিভাবে আন্দোলনকে জোরালো করা যায় সে ব্যাপারে আপনাদের সুনির্দিষ্ট কোন ভূমিকা নেই। সংগঠন গোছাতে পারছেন না। শীর্ষ নেতারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। কোন দায়িত্বই সঠিকভাবে পালন করতে পারছেন না। আপনারা পদ ও দায়িত্ব অনুযায়ী ভূমিকা রাখতে না পারলে ছেড়ে দেন। নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্য হিসেবে আপনাদের ভূমিকা হতাশাজনক। আন্দোলন কর্মসূচি দিলে আপনারা কেউ রাজপথে নামছেন না। আগামী দিনে আপনারা নামেন আর না নামেন দেশবাসীকে নিয়ে আমি রাজপথে নামবো। সবকিছু আমাকে কেন করতে হবে? এভাবে চলতে পারে না।’
দলীয় সূত্র জানায়, ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর হঠাৎ করে আন্দোলন থেকে সরে আসায় সারা দেশে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা নেমে আসে। নেতাদের মধ্যে তৈরি হয় নিষ্ক্রিয় মানসিকতা। সুযোগটি কাজে লাগায় সরকার। পরে মামলা-হামলা ও প্রতিবন্ধকতার জালে আটকে ফেলে নেতাদের। এতে আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিপন্থি পেশাজীবী ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি উঠে আসে। বিষয়টি খালেদা জিয়াও উপলব্ধি করেছেন। তারই রেশ ধরে দলের সিনিয়র নেতাদের পর স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘৫ই জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পর আন্দোলন কর্মসূচি থেকে সরে আসা একটি ভুল ছিল। নির্বাচনের পর এই আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত না করে অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি লাগাতার চালিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। মাঠের নেতারা আমাকে সেটাই জানিয়েছেন।’ তিনি এ জন্য নেতাদের অভিযুক্ত করে বলেছেন, ‘আপনারা কেউ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেননি। অথচ সারা দেশের মানুষ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত। তারা আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের নেতৃত্ব দিতে পারছেন না। এখন নতুন করে আন্দোলন করার ক্ষেত্রে কিভাবে অগ্রসর হওয়া যায়, তাই চিন্তা করুন।’ এদিকে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ ও হতাশ সারা দেশের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি নাটোর সমাবেশে জেলা বিএনপির সভাপতি তার বক্তব্যে খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকায় আন্দোলন গড়তে ব্যর্থ হলে আমাদের ডাক দেবেন আমরা ঢাকা ঘেরাও করব। পাশাপাশি ব্যর্থ কেন্দ্রীয় নেতাদেরও ঘেরাও করব।’ সূত্র জানায়, বিদেশীরা বলছে, বিরোধী দল হিসেবে সুনির্দিষ্ট ইস্যুতে কার্যকর আন্দোলন গড়তে পারছে না বিএনপি। ওদিকে সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বাধীন ঢাকা মহানগর কমিটি নিয়ে দলীয় ফোরামে ছিল ব্যাপক সমালোচনা। ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন প্রতিহত আন্দোলনে ব্যর্থতার তীরবিদ্ধ ছিল সে কমিটি। পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক করে ৪ মাস আগেই হাইপ্রোফাইল কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম থেকেই অনৈক্য তৈরি হয় সে কমিটিতে। দীর্ঘদিনেও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাংগঠনিকভাবে গুছিয়ে উঠতে পারেনি মহানগর বিএনপি। উল্টো কিছু কিছু এলাকায় প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তিনি জবাব চেয়ে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মহানগর কমিটির পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেননি। ঢাকা মহানগর কমিটি অগোছালোর কারণে আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’ এসময় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস এর ব্যাখ্যা দিতে চাইলে খালেদা জিয়া ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন।
বিশেষ করে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ৮ই নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না পারা ও এ ব্যাপারে নেতাদের নীরবতা মানসিকভাবে কষ্ট দিয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। বিষয়টি তিনি সহজভাবে নিতে পারেননি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ঢাকা মহানগরী বিএনপি কিছুই করতে পারছে না। তারা না পারছে আন্দোলন করতে, না পারছে মহানগরীর সাংগঠনিক কমিটি নিয়ে কাজ করতে।’ এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত মামলার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে খালেদা জিয়াকে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে দুইটি দুর্নীতি মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যসহ শতাধিক কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে নানা মামলায় এখন বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সর্বশেষ গাজীপুর, সিলেট সিটি মেয়র ও হবিগঞ্জ সিটি মেয়রকে জড়ানো হয়েছে স্পর্শকাতর মামলায়। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আইনি জটিলতায় আটকে যাবে বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম ও নির্বাচনী প্রস্তুতি। স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রশ্ন তুলেছেন, কেন সিনিয়র নেতারা সোচ্চার হননি। বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘সরকার একের এক মিথ্যা মামলা দিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের আইনি জটিলতায় জড়িয়ে ফেলছে। আমার বিরুদ্ধেও মিথ্যা দুর্নীতির মামলার বিচার শুরু হয়েছে। কিন্তু আপনারা কেউ এর সোচ্চার প্রতিবাদ করতে পারেননি।’
সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকাকে ঘিরেই সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে চায় বিএনপি। ঢাকাকে প্রাধান্য দিয়ে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচি নির্ধারণ ও প্রস্তুতির জন্যই দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন খালেদা জিয়া। জনসমর্থনকে কাজে লাগিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনে সফল হতে চায় বিরোধী জোট। স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য সেই ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও জনগণের দুর্ভোগ এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। বৈঠক সূত্র জানায়, আন্দোলন ইস্যুতে নানা প্রস্তাবনা আলোচনায় এলেও সুনির্দিষ্ট কোন কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়নি। সারা দেশে চলমান গণসংযোগ শেষে আগামী মাসের ডিসেম্বরের শেষ দিকে ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। সে মহাসমাবেশ থেকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে ডিসেম্বরে সরকারকে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিতে পারে বিরোধী জোট। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান না হলে জানুয়ারিতে আন্দোলনে যাওয়ার ছক কষছে তারা। সূত্র জানায়, দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনের পরিবর্তে বিএনপি এবার দুই থেকে তিন সপ্তাহের শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে চায়। স্বাভাবিকভাবেই এ আন্দোলন হবে রাজধানী কেন্দ্রিক। রাজধানীতে আন্দোলন জমিয়ে তুলতে পারলে সারাদেশে তার রেশ ছড়িয়ে পড়বে। বৈঠকে কয়েকজন নেতা ঢাকায় মহাসমাবেশের পরামর্শ দিলে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এখনও ঢাকা মহানগর অগোছালো। আগে আপনারা ঢাকা মাহনগর কেন্দ্রিক গণসংযোগ বাড়ান। তিনি ঢাকা মহানগরে আন্দোলনের পক্ষে জনমত গঠনে জনসংযোগের ওপর জোর দেন।’ আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিটি সমাবেশ ও মতবিনিময়ে বক্তব্য দিচ্ছেন খালেদা জিয়া। তার এ বক্তব্যের বেশির ভাগই সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গণমাধ্যমকে। অথচ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অতীতে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তারা সঠিক তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে নিজেরা প্রতিবাদ করতে পারছেন না। দলীয় ফোরামেও তথ্য প্রমাণ যোগাড় করে দিয়ে সহযোগিতা করছেন না। এ ব্যর্থতার জন্য নেতাদের ভর্ৎসনা করেছেন খালেদা জিয়া। বৈঠকে তিনি বলেছেন, আপনারা বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন সরকার এত বড় বড় দুর্নীতি করছে সেগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশিতও হচ্ছে। দলীয় ফোরামে পর্যালোচনা এবং প্রমাণ জোগাড় করে সহযোগিতা করছেন না।
মন্তব্য চালু নেই