নূর হোসেনকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ আদালতের

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার মামলার প্রধান আসামি ভারতের কলকাতায় গ্রেপ্তারকৃত নূর হোসেনকে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা তথা ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপমের গত ১০ আগস্ট দেওয়া এ আদেশটি মঙ্গলবার সাত খুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মামুনুর রশিদ মন্ডলের হস্তগত হয়েছে।

এর আগে গত ২৭ মে নূর হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে ইন্টারপোল রেড ওয়ারেন্ট জারি করে। রেড ওয়ারেন্টভুক্ত করতে গত ২২ মে পুলিশ সদর দপ্তরকে চিঠি দেয় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ প্রশাসন। পরে পুলিশ সদর দপ্তর রেড ওয়ারেন্টের জন্য ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়। এছাড়া নূর হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারির পর আদালতের নির্দেশে তার অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়।

এদিকে সাত খুনের পর এত দেরি করে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরে আনতে তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান।

তিনি বলেন, সাত খুনের পরে সাড়ে তিন মাস পর তদন্তকারী কর্মকর্তার আদালতে এ আবেদন প্রমাণ করে সরকার নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কালক্ষেপন করে। কারণ ভারতে গ্রেপ্তারকৃত নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে আদালতের নির্দেশনা প্রয়োজন। কিন্তু প্রশাসন ও পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। তবে সরকারের বিভিন্ন স্তরের মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতারা নূর হোসেনকে ফিরিয়ে আনার যেসব উদ্যোগের কথা বলেছেন সেগুলো লোক দেখানো মাত্র। এতে করে বিচারকাজ বিলম্বিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৪ জুন ভারতে দুইজন সহযোগীসহ নূর হোসেন গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়। এরইমধ্যে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তাকে ভারতে গ্রেপ্তারের পর ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনতে আদালতে কোন আবেদন করা হয়নি। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই আবেদন করে।

গত ১০ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রূপম ওই আবেদনের আদেশে নূর হোসেনকে দ্রুত দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেন।
ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

গত ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহূত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজন। এরপর ৩০ এপ্রিল ছয়জনের এবং ১ মে আরেকজনের লাশ ভেসে ওঠে শীতলক্ষ্যায়।

এ ঘটনায় আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ র‌্যাব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে হাইকোর্টের নির্দেশে ৭ মে শাহজাহান আলী মোল্লাকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর পর র‌্যাব-১১-এর সাবেক তিন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। তারা কারাগারে রয়েছেন। আর নূর হোসেন ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।



মন্তব্য চালু নেই