নিয়মিত সকালে লেবু পানি পান করলে আপনার শরীরে ঘটে যে ২৯ টি ম্যাজিক!
লেবু, সাধারণত আমরা খাবারের স্বাধ বাড়াতে এবং গরমের দিনে সরবত তৈরী করতে ব্যবহার করি। কিন্তু আমরা কি জানি এর উপকারীতা কত? লেবুর গুনাগুন প্রচুর, বিশেষ করে এর ভিটামিন সি এবং খনিজ উপাদান সমূহ আমাদের প্রচুর উপকার করে। হৃদযন্ত্রের ধড়ফড়ানি কমানো থেকে ফুসফুসকে ঠিক ভাবে কাজ করতে পর্যন্ত সাহায্য করে লেবু।
সকাল সকাল লেবু পানি পান করা যে ভালো, এটা অনেকেই জানেন। কিন্তু জানেন কি, আসলে কেন ভালো? যদি নিয়মিত রোজ সকালে এক কাপ লেবু পানি পান করেন, আপনাদের দেহ পাবে জাদুকরী উপকারিতা। জেনে নিন বিস্তারিত।
১) লেমন, অর্থাৎ পাকা লেবুতে থাকে ইলেকট্রোলাইটস ( যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি)। সকাল সকাল লেবু পানি আপনাকে হাইড্রেট করে, শরীরে যোগান দেয় এইসব প্রয়োজনীয় উপাদানের যা দেহের পানিশূন্যতা দূর করে
২) হাড় জয়েনট ও মাসল পেইন কমায় দ্রুত।
৩) ঘন ঘন কৃমির আক্রমনে ক্লান্ত? প্রতিদিন একগ্লাস লেবু পানি পান করুন, আর কৃমির সাথে যুদ্ধ জয় করুন!
৪) অন্য যে কোন খাবারের চাইতে লেবু পানির ব্যবহারে লিভার অনেক বেশী দেহের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করতে পারে।
৫) লেবু পানি টক্সিক উপাদান দূর করে লিভারকে পরিষ্কার রাখে।
৬) পেট পরিষ্কার ও ভালো টয়লেট হতে সহায়তা করে।
৭) লেবুপানি আমাদের দেহের মেটাবোলিজম বৃদ্ধি করে ও লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
৮) আপনার নার্ভাস সিস্টেমে দারুণ কাজ করে। সকাল সকাল লেবুর পটাশিয়াম আপনার বিষণ্ণতা ও উৎকণ্ঠা দূর করতে সহায়ক।
৯) লেবু পানি শরীরের রক্তবাহী ধমনী ও শিরাগুলোকে পরিষ্কার রাখে।
১০) উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
১১) শরীরের পি এইচ লেভেল উন্নত করে। পি এইচ লেভেল যত উন্নত, শরীর রোগের সাথে লড়াই করতে তত সক্ষম।
১২) ইউরিক এসিড সমস্যা দূর করতে সহায়ক।
১৩) লেবুপানি দেহের ত্বকের জন্য খুবই ভাল। লেবুর ভিটামিন সি উপাদান দেহের ত্বক ও টিস্যুর জন্য খুব জরুরি। তাই ত্বকের যে কোন সমস্যা রোধ করতে প্রতিদিন লেবুপানি পান করুণ। আপনার ত্বককে করে তোলে সুন্দর ও পরিষ্কার।
১৪) বুক জ্বলা পড়া দূর করে। যাদের এই সমস্যা আছে রোজ আধা কাপ পানির মাঝে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
১৫) কিডনী ও প্যানক্রিয়াসের পাথর দূর করতে অসাধারণ কার্যকর।
১৬) ওজন দ্রুত কমাতে সহায়তা করে। লেবুতে থাকে পেকটিন ফাইবার যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।
১৭) গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই ভালো লেবু পানি। এটা শুধু নারীর শরীরই ভালো রাখে না। বরং গর্ভের শিশুর অনেক বেশী উপকার করে। লেবুর ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম শিশুর হাড়, মস্তিষ্ক ও দেহের কোষ গঠনে সহায়তা করে। মাকেও গরভকালে রোগ বালাই থেকে দূরে থাকে।
১৮) দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। দাঁত ব্যথা কমায়।
১৯) ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে, ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
২০) মেটাবলিজম বা হজমশক্তি বাড়ায়। এতে ওজন কমাতেও প্রভাব পড়ে।
২১) লেবুপানি দেহের গিটে গিটে ব্যথা দূর করে।
২২) লেবু পানি আমাদের দেহের প্রদাহ দূর করে, গলা ব্যথা, টনসিলের সমস্যা, শ্বাসযন্ত্রের ইনফেকশনও সাড়িয়ে তোলে।
২৩) লেবুপানি দেহের ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রনে রাখে। রোজ পান করলে হাই ব্লাড প্রেশার ১০% কমে যায়।
২৪) দেহের কোন অংশ পুড়ে গেলে তা লেবুপানি দিয়েই চিকিৎসা করা যাবে। আধা গ্লাস পানির সাথে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে পোড়া ত্বকে লাগিয়ে নিন। এছাড়া লেবু পানি নতুন কোষগুলোকে সজীব করে তোলে বিধায় যে কোন ক্ষত দ্রুত নিরাময় হয়।
২৫) লেবুপানি পিত্তথলী, অগ্নাশয় ও কিডনির পাথর রোধ করে।
২৬) লেবুপানি ক্যানসার রোগও প্রতিরোধ করে। লেবুতে আছে এলকালাইন উপাদান এবং বিজ্ঞানীরা বলেছেন ক্যানসারের কোষ এলকালাইন উপাদান এর সাথে থাকতে পারেনা।
২৭) মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
২৮) সকাল সকাল চা বা কফি পান করে দিন শুরু করেন ? বদলে এই লেবু পানি পান করে দেখুন। নিজের এনার্জিতে নিজেই বিস্মিত হবেন! আপনার নার্ভাস সিস্টেমে দারুণ কাজ করে। সকাল সকাল লেবুর পটাশিয়াম আপনার বিষণ্ণতা ও উৎকণ্ঠা দূর করতে সহায়ক।
২৯) যাদের ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগার অভ্যাস আছে, তারা ভালো থাকবেন। সহজে ঠাণ্ডা লাগবে না বা সর্দি-কাশি হবে না।
কীভাবে পান করবেন:– বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, গরম পানির সাথে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করলেই সেটা খুব স্বাস্থ্যকর। আসলে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল! গরম পানিতে লেবু ও মধু উভয়েরই গুণাবলী নষ্ট হয়ে যায়। গরম পানি নয়, সামান্য উষ্ণ পানি বা এই গরমের দিনে কক্ষ তাপমাত্রার পানিতেই মিশিয়ে নিন লেবুর রস। লাইম নয়, লেমনের রস। পাকা, অর্থাৎ পেকে হলুদ হয়ে যাওয়া লেবুর রস। নাহলে খালি পেটে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে! আপনার ওজন যদি ১৫০ পাউনডের কম হয়, তাহলে অর্ধেক লেবুর রস এক গ্লাস পানিতে মেশাবেন। আর যদি ১৫০ পাউনডের বেশী হয়, তাহলে মেশাবেন পুরো একটা লেবুর রস।
মন্তব্য চালু নেই