নিষ্ক্রিয়দের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান

বিএনপি জোটের চলমান আন্দোলনের ফল যৌক্তিক পর্যায়ে না পৌঁছানো পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে দলের নিষ্ক্রিয় নেতাদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
শুক্রবার বিকেলে বেগম খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতাকর্মীদের এ আহ্বান জানান।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে সঙ্কটের মূল উৎস উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘সঙ্কটের স্রষ্টা শেখ হাসিনা।’
সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য সংসদের চলতি অধিবেশনে সংবিধান সংশোধন করে দ্রুত নির্বাচনের তাগিদও দিয়েছেন তিনি। আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ৪৫তম স্বাধীনতা দিবস জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করবে।
দেড় মাসের বেশি সময় পর শুক্রবার গণমাধ্যমের সামনে হাজির হন তিনি। বিকেলে ৪টায় এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা দেরিতে। সংবাদ সম্মেলন শেষ সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নও নেননি বেগম জিয়া।
বিএনপি জোটের চলমান আন্দোলনে ক্ষয়-ক্ষতির কোনো দায়ভার নেননি বেগম খালেদা জিয়া। এ সংক্রান্ত দায় তিনি একতরফা সরকারের ওপর চাপিয়েছেন।
তবে, আন্দোলনের মাধ্যমে দিন পরিবর্তন হলে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেছেন, ‘গত ৫ জানুয়ারি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করে পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু তিনি প্রতিশ্রুতি রাখেননি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আলোচনার ভিত্তি হিসেবে ৭ দফা তুলে ধরি। তারা সঙ্গে সঙ্গে তা নাকচ করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে সঙ্কট নিরসন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ভোটাধিকারসহ জনগণের সব অধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ আমাদের সামনে খোলা রাখা হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে কর্মসূচি দিয়েছি।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিএনপির গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে জঙ্গিরূপ দেয়ার জন্য সরকার নাশকতা করছে এবং বিএনপিকে দায় দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং তাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বন্ধু রাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনসহ যারা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাদের সাধুবাদ জানাই।’
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, ‘দলীয় বিবেচনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ফলে তারা বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে দমন পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যে সারা দেশে যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর হয়রানি বন্ধ করতে হবে। বিচার বহির্ভূত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ুম, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এবং শাইরুল কবীর খান।



মন্তব্য চালু নেই