নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কথা শুনতে চান না সুরঞ্জিত

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাপরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে বিরোধ মিটে গেছে। তাই বিএনপির কাছে নির্বাচন নিয়ে এখন কোনো কথা শুনতে চান না তিনি।

বাংলাদেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রবিষয়ক মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সাম্প্রতিক এক জনমত জরিপের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিএনপির উদ্দেশে একথা বলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের কথা নয়, আমেরিকার প্রতিষ্ঠানের জরিপ বলেছে, সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। সুতরাং বিএনপির নির্বাচন প্রশ্নে আর কথা থাকার কথা নয়।’

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন প্রশ্নে এখন জনমত হচ্ছে। নির্বাচন এখন দরকার নাই। গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচন ঠিক সময়েই হোক।

শুক্রবার দুপুরে কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় সুরঞ্জিত এসব কথা বলেন।

সুরঞ্জিত বলেন, বিএনপির মওদুদ সাহেবও বলেছেন, আমরা আন্দোলন করছি, সরকারের বিরুদ্ধে নয়; গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য। এখন জনগণও চায় গণতন্ত্রের স্বার্থে ঠিক সময়েই নির্বাচন হোক। তাই বিএনপির কাছে আশা করবো, মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিরোধটা এখানেই মিটে গেছে, এনিয়ে তাদের কাছ থেকে আর কোন কথা শুনবো না।

আইআরআই এর জরিপে বলা হয়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জনসমর্থন বেড়েছে। সরকারের প্রতি ৬৬ শতাংশ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন পৌঁছেছে ৬৭ শতাংশে।

সিলেট শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সংকট নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সমস্যাটা সংকটে পরিণত হওয়ার আগেই বিষয়টা শেষ করেন।কারণ ভিসি এই অভিযোগে অভিযুক্ত।তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে ছাত্রদের দিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এতে হয় তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে সরে যাবেন, না হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলবো, তাকে সরিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।

সংসদে লতিফ সিদ্দিকীর পদত্যাগ এবং টাঙ্গাইল-৪ সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়টি অবশেষে ইতি হয়েছে।এ নিয়ে আজকের পত্রিকাতেও নিউজ আছে। তিনি পার্লামেন্টে বক্তব্য দিয়ে বিষয়টি শেষ করেছেন।

ঠিক আছে, তবে বিষয়টি যেভাবে সমাপ্তি করেছেন, তা গণতান্ত্রিকভাবেও হয় নাই, সাংবিধানিকভাবেও হয় নাই।কারণ মাননীয় স্পিকার তার বিষয়টি সুরাহা করার জন্য ইসিতে পাঠিয়ে দিলেন। নির্বাচন কমিশন তার বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে আদালত বানিয়ে তার শুনানি করলেন। হঠাৎ করে ইসি আবার স্পিকারের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি(লতিফ সিদ্দিকী) যেহেতু পদত্যাগ করতে চান, তাই স্পিকারের কাছেই করতে হবে। এই এখতিয়ার ইসির নাই।ইসির এমন সাংবিধানিক আদেশ দেয়ার আগে অ্যাটর্নি জেনারেলসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল বলেও যোগ করেন সুরঞ্জিত।

তিনি আরো বলেন, আমি আশা করেছিলাম, তিনি যেহেতু পদত্যাগ করতে চান তাহলে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র দিলেই, স্পিকার ছুলেই তার পদত্যাগ কার্যকর হবে। এজন্য আবার সংসদে পাঠিয়ে দেওয়া এই অধিকার ইসির নাই।

রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিয়ে সরকার এবং মেয়রদের উদ্দেশ্যে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, খাল বন্ধ হয়ে গেছে এই অজুহাত দিয়ে চোখ বন্ধ থাকলে কেমন করে বন্ধ খাল খুলবে। প্রয়োজনে আইন করে যেসব ব্যবসায়ীরা খাল বন্ধ করেছে টাস্কফোর্স করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।এক্ষেত্রে ড্যাবকে কাজে লাগাতে হবে।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষকলীগ নেতা আবদুল হাই কানু, সাম্যবাদী দলের নেতা হারুন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু একাডেমির হুমায়ুন কবির মিজী প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই