নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধর : বাঁশখালির ১৪ ইউনিয়নের ভোট স্থগিত
বাঁশখালিতে ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগের পর সেখানে ১৪ ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক কর্মকর্তা আবদুল বাতেন। আগামী ৪ জুন শেষ ধাপে বাঁশখালিতে এই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
এর আগে দুপুরে বাঁশখালি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম তাকে প্রকাশ্যে মারধর করার অভিযোগ করেন স্থানীয় সাংসদ মুস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে।
তবে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের অভিযোগ, বুধবার বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ওই সাংসদ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মারধর করেন।
জাহিদ হোসেন বলছেন, ৪ নম্বর বাহারছড়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থী তাজুল ইসলাম ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা (প্রিজাইডিং অফিসার) নিয়োগের জন্য তাকে ‘একটি তালিকা’ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ’আমি ওই তালিকা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারিনি। সকালে এমপি আমাকে ইউএনও কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ না দেওয়ার কারণ জানতে চান। এক পর্যায়ে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন’। সাংসদের সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজনও তখন তাকে মারধর করেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ওই ঘটনার সময় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ইউএনও) তার কার্যালয়ে ছিলেন না। তবে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তাজুল ইসলাম সেখানে ছিলেন বলে জানান জাহিদ।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল বাতেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ঘটনাটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দাপ্তরিকভাবে জানানো হয়েছে। এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া এমপির বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা সংসদ সংসদ ডাকছেন উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তরে গেলে সেখানে আগে থেকে অবস্থানরত সাংসদ মুস্তাফিজুর রহমান তাদের দেওয়া তালিকানুযায়ি প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ না দেওয়ায় কারণ জানতে চান। এক পর্যায়ে সাংসদ নিজেই নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধর শুরু করেন।’
আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যা বলা হচ্ছে সব মিথ্যা কথা।’
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তাজুল দাবি করেন, নামের তালিকা দেওয়ার বিষয়টির কোনো ‘সত্যতা নেই’।
এদিকে এমপির হাতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ ওঠার পর এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরো পড়ুন
মন্তব্য চালু নেই