‘নির্দেশ পেলেই আন্দোলনে নামবে জামায়াত’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সরকারবিরোধী আন্দোলনের বর্তমান চাবিকাঠি আপাতত ২০ দলীয় জোট নেত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার হাতে। তার নির্দেশের বাইরে এককভাবে আর কোনো আন্দোলনের উদ্যোগ নিচ্ছেন না দলটির ঊর্ধ্বতন নেতারা। প্রতিবেদককে জামায়াতের প্রভাবশালী দুই নেতা এ তথ্য জানিয়ে বলেন, পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে সময়োপযোগী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন ২০ দলীয় জোটনেত্রী। সে সময় পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তবে আপাতত একক কোনো কর্মসূচি ডাকার পক্ষে মত দিচ্ছে না জামায়াত।
এদিকে যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপিল শুনানি শুরু হয়েছে। আদালতের রায় দেখে এককভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি। দলটির প্রচার বিভাগের এক নেতা বলেন, ২০ দলের বাইরে সরকারবিরোধী আন্দোলন এখনো জোরদারের পক্ষে সাড়া দিচ্ছেন না দলের মফস্বল নেতারা।
তিনি বলেন, আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে বাস্তবায়ন না করলে মাঠে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সে কারণে জামায়াত এখন পুরোপুরি খালেদা জিয়ার উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে। দলটির কর্মপরিষদের এক সদস্য ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা শিকার হচ্ছেন জামায়াত নেতারা। এ ছাড়া হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে বিনা বিচারে বছরের পর কারাগারে আটক রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নেতা বলেন, আটক এসব নেতার পরিবার-পরিজন আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের কেউ দেখার নেই। ঢাকা মহানগরের এক নেতা বলেন, সম্প্রতি জেলা ও অনেক কেন্দ্রীয় নেতা দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সরকারবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচি না দিয়ে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় জামায়াত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা দিলে তা বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেয়া হয় তৃণমূল নেতাদের। কিন্তু তারা ঘোষিত আন্দোলন বাস্তবায়নের জন্য যখন মাঠে নামার পরিকল্পনা গ্রহণ করে তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে জেলে প্রেরণ করে। তখন ষোষিত আন্দোলন বাস্তবায়ন হয় না।
এ ব্যাপারে জামায়াতের উপ-দফতরের এক নেতা বলেন, এসব কারণে সব কিছু বিবোচনা করে বিএনপির আন্দোলনের ওপর নজর দিচ্ছে জামায়াত। যৌথ আন্দোলনের মাধ্যমে রাজপথে সরকারকে মোকাবিলা করা হবে। জামায়াত সংশ্লিষ্ট ইস্যু ছাড়া এককভাবে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করবে না।
নাম গোপন রাখার শর্তে এই নেতা বলেন, ৩ সিটি নির্বাচন বর্জন করার পর হরতালসহ বিক্ষোভ কর্মসূচির পক্ষে ২০ দলের একাধিক প্রভাবশালী নেতা ২০ দলীয় জোট নেত্রীকে আহ্বান করলেও তিনি সাড়া দেননি। কী কারণে সাড়া দেয়া হয়নি জানতে চাওয়া হলে এই নেতা বলেন, আগামী দিনের সব আন্দোলন কর্মসূচি এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন ম্যাডাম খালেদা জিয়া। এই নেতা আরো বলেন, সম্প্রতি এ বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান তার সঙ্গে কথা বলে যৌথ আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অন্যদিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান, কারচুপি ও ভোট ডাকাতির মহা-উৎসবের অভিযোগ এনে নির্বাচন বাতিলের দাবি করে জামায়াত। দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান নির্বাচনের দিন এ অভিযোগ করে অবিলম্বে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানান। একইভাবে নির্বাচনের দিন বিএনপির সঙ্গে ভোট বর্জনের সমর্থন দেয় জামায়াত।-মানবকণ্ঠ
মন্তব্য চালু নেই