নিঃস্ব হয়েছিলেন যেসব বলিউড তারকা
অনেকের ধারণা, বলিউড মানেই লাইমলাইটের মধ্যমণি হয়ে থাকা, গ্ল্যামার, পার্টি, পেজ থ্রি, প্রচুর সম্পদ। ঠিক, কিন্তু এর আড়ালেও আরও এক বলিউড লুকিয়ে থাকে। সেই চিত্রটা খুব একটা আলো ঝলমলে নয়।
জীবনে চড়াই-উতরাই তো রয়েছেই। কিন্তু তাই বলে বলিউড দুনিয়ার ঝলমলে তারকাদেরও কখনো কখনো হতে হয়েছে নিঃস্ব, যা বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়। হারাতে হয়েছে মাথা গোঁজার শেষ সম্বলও। বন্ধুর সহায়তা এবং প্রতিভার জেরে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। দেখে নিন এমন তারকাদের তালিকা যাঁরা এক সময় সব হারিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন।
অমিতাভ বচ্চন: বলিউডের সব থেকে বড় তারকা। শুধু তাঁর নামের জোরে কত ছবি যে হিট করে গিয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। তবে নিজের প্রোডাকশন হাউজ ABCL পুরোপুরি ফ্লপ করায় বিরাট অঙ্কের ঋণের বোঝা চাপে বিগ বি-র মাথায়। ৯০-এর দশকের সেই অর্থের পরিমাণ ছিল ৯০ কোটি রূপিরও বেশি। নিজের বসত বাড়িও ব্যাংকে বন্ধক রেখেছিলেন তিনি। সে সময় ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ সঞ্চালনার দায়িত্ব পান তিনি। বিরাট সাফল্যের মুখ তো দেখেই সেই শো, সঙ্গে তাঁর যাবতীয় ঋণ থেকেও বেরিয়ে আসেন তিনি।
প্রীতি জিনতা: এক সময় তাঁর গালের টোল দেখে লাখো পুরুষের বুকে আন্দোলন শুরু হয়ে যেত। একের পর এক হিট দিয়ে এক নম্বর নায়িকার দৌড়েও ছিলেন প্রীতি। তবে হঠাতই বলিউড থেকে হারিয়ে গেলেন তিনি। নেস ওয়াদিয়ার সঙ্গে প্রেমও ভাঙল। নিজের প্রোডাকশনে ‘ইশ্ক ইন প্যারিস’ ছবি তৈরি করে ফেরার চেষ্টা করেন, তবে তা একেবারে ফ্লপ করে। সে সময় ঋণে ডুবে গিয়েছিলেন প্রীতি। পারিশ্রমিক না পেয়ে ছবির চিত্রনাট্যকার আব্বাস টায়ারওয়ালা প্রীতির নামে মামলাও করেন। আদালতেও প্রীতির বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়ে যায়। সে সময় সালমান খান সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
গোবিন্দা: এক সময়ের হিরো নম্বর ওয়ান বলিউডের মূল স্রোত থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন ঋণের জালে। বলিউড ছেড়ে রাজনীতিতেও ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তা সফল হয়নি। ‘পার্টনার’ ছবিতে অভিনয় করে ফের একবার বলিউডে সফল ভাবে কামব্যাক করেন। ধীরে ধীরে তিনি তাঁর সব ঋণ পরিশোধ করেন।
শ্বেতা বসু প্রসাদ: ছোট থেকেই বলিউডে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন শ্বেতা। অসামান্য অভিনয়ের সুবাদে জাতীয় পুরস্কারও জেতেন তিনি। তবে এমন একটা সময় আসে যখন সত্যিই প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন শ্বেতা। পরে দক্ষিণী ছবিতেও ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করেন তিনি। তার মধ্যেই যৌন কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হন। এখন ফের একবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি।
জ্যাকি শ্রফ: চিত্র নির্মাতা সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার কাছে থেকে এক সময় অনেক অর্থ ঋণ করেছিলেন বলিউডের ‘জগ্গু দাদা’। তবে সে টাকা কিছুতেই পরিশোধ করতে পারছিলেন না তিনি। ২০০৮ সালে সাজিদ তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও ভাবেন। ঋণ শোধ করার জন্য নিজের ফ্ল্যাটও বিক্রি করে দেন জ্যাকি। তবে তাও ঋণের জালে আটকে পড়েছিলেন। তাঁকেও সে সময় সাহায্য করেন সালমান। আর্থিক দিক থেকে তো বটেই, নিজের প্রোডাকশনের ছবিতে কাজ দিয়েও জ্যাকিকে ফের মূল স্রোতে ভিরিয়ে আনেন।
এ কে হাঙ্গাল: শোলে, নকম হারাম-এর মতো হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন। সিরিয়াল থেকে সিনেমা, থিয়েটার সবেতেই স্বচ্ছ্ন্দ এই স্টার শেষ বয়সে এসে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলেন। ৯৫ বছর বয়সে অসুস্থ অবস্থায় কপর্দকহীন হয়ে পড়ে ছিলেন লোক চক্ষুর আড়ালে। সে সময় তাঁকে সাহায্য করেন জয়া বচ্চন, সালমান খানের মতো সহৃদয় ব্যক্তিরা।
মন্তব্য চালু নেই