নায়ক দেবকে দেখতে সাঁতরে আসেন ৫০০ লোক!

২০১৪ সালে সমরেশ মজুমদারের উপন্যাস অবলম্বনে ‘বুনো হাঁস’ নামে সিনেমা নির্মাণ করেন পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী। ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা দেব।
ভারতের পাশাপাশি সিনেমাটির বড় একটি অংশের শ্যুটিং হয় বাংলাদেশে। সম্প্রতি আনন্দবাজারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পরিচালক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা। ছবির ‘হারিয়ে ঠিকানা খোঁজে ঘর’ গানটির বেশিরভাগ শ্যুটিং হয়েছে পদ্মা নদীর পাড়ে। অনিরুদ্ধ জানান, দেবের শ্যুটিংয়ের খবর পেয়ে ৫০০ মানুষ নাকি সাঁতার কেটে এসেছিল।

অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী লিখেছেন, পদ্মায় নৌকো নিয়ে ঢুকে একটা চর, সেখানে সূর্যাস্তের সময় দেব বসে আছে, বাবার কথা মনে পড়ায় মাটি হাতে নিয়ে মাথায় মাখছে, এটাই শট। বাংলাদেশে সবাই বলেছিল, দেবকে রাস্তায় বের করবেন না, কেলেংকারি হবে। পুলিশ তো ছিলই, প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেও সিকিয়োরিটির লোক চলে এসেছিল। হঠাৎ দেখি, অন্তত ৫০০ লোক সাঁতরে আসছেন। কোনও মতে শট শেষ করে, নৌকোয় ঠেলে তুললাম দেবকে। পাড়ে গেলাম, সেখানে ২৫-৩০ হাজার লোক। পুলিশ লাঠিচার্জ করছে। দেব আর ইন্দ্রাণীকে পুলিশের গাড়িতে ঠেলে তুলে, আমিও উঠলাম। সে দিন মনে হয়েছিল, বাঁচব না।

এ বছর বলিউডে ‘পিংক’ ছবি নির্মাণ করে সাফল্য পেয়েছেন অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী। তিনি আরও লিখেছেন, সঙ্গে দুজন সাদা পোশাকের সিকিয়োরিটি সব সময় ছিল। আমরা থানায় ঢুকে গেলাম। সেখানে মেক-আপ ভ্যানটা ছিল, তাতে দেবকে তুলে দেওয়া হল। চার দিকে লোক, সবাই ভ্যানের গায়ে ধড়াম ধড়াম মারছে। পুলিশ বলল, আপনারা এতে করেই এক্ষুনি চলে যান। গাড়ি কোনও মতে বেরিয়ে হাইওয়েতে পড়ল। সেখানেও বাইক নিয়ে লোকের তাড়া। খানিক পরে, গাড়ি যখন ফুল স্পিডে, ভ্যানের দরজায় বার বার ধাক্কা: ‘খুলুন, খুলুন!’ উন্মাদ ফ্যানের দল তাড়া করে, ভ্যানের দরজাতেও ঝুলছে! ঠিক করলাম, খুলব। যেই কেউ ভেতরে আসবে, ঝাঁপিয়ে পড়ব। আমার অ্যাক্টরকে তো আমাকে বাঁচাতে হবে! গাড়ি দাঁড় করাতে বললাম। দরজা খুলতে, দেখি, সেই সিকিয়োরিটির লোক দুজন! হাঁপাচ্ছে, চোখ লাল। আমি হতভম্ব: আপনারা এটা কী করলেন? ছুটন্ত মেক-আপ ভ্যানের দরজায় রড ধরে ঝুলে ঝুলে আসছেন, মরে যেতেন তো! ওঁরা উত্তর দিলেন, ‘দাদা, আমাদের একটা দায়িত্ব আছে তো!’ এখনও মনে হলে গায়ে কাঁটা দেয়। এই ভালবাসা জীবনে ভুলব না।



মন্তব্য চালু নেই