বাঁধন কর্মীদের মারধর
নালিশ করলে পা ভেঙে দেবে ছাত্রলীগ
ছাত্রলীগ কর্মীদের কাছে ইফতার পার্টি উপলক্ষে টাকা চাওয়ায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন কর্মীদের মারপিট ও লাঞ্ছিত করলেন রাবি ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ডিল্স। শুধু মারপিট নয়, কারও কাছে এ বিষয়ে নালিশ করলে তাদের হাত-পা ভেঙে দেয়ারও হুমকি দেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মাদার বখ্শ হলে এ ঘটনা ঘটে। ডিল্সের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর ও লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ রয়েছে।
হল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার মাদার বখ্শ হল শাখা বাঁধনের উদ্যোগে হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। এজন্য বৃহস্পতিবার বাঁধনকর্মীরা হলের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানান। ইফতারের খরচ তুলতে সবাইকে সামর্থ অনুযায়ী টাকা দেয়ার অনুরোধ করেন তারা। হলে থাকা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কাছেও তারা একই কথা বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন ছাত্রলীগ নেতা ডিল্স।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডিল্সের নেতৃত্বে অনিক, তরিকুলসহ ছাত্রলীগের ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী বাঁধন কর্মীদের হলের ছাদে ডেকে নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে ডিল্সসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা বাঁধনকর্মী স্বপন, সাদ্দাম, মোশরফসহ অন্যদের এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পর মারেন। পরে বাঁধনের রাবি জোনের নেতারা তাদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বাঁধন রাবি জোনের উপদেষ্টা রাকিব হাসান বলেন, ‘একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে বাঁধন সবসময় ছাত্রলীগের সহযোগিতা পেয়েছে। কিন্তু এই নেতা বরাবরই আমাদের কাজে বাধা দিয়ে আসছে।’
বাঁধন কর্মীদের ওপর এমন নির্যাতন দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থ গ্রহণ করবে।’
তবে বাঁধন কর্মীদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করলেও তাদের ছাদে ডেকে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন ডিল্স। তিনি বলেন, ‘ইফতার পার্টির জন্য বাঁধনের ছেলেদের প্রতি রুম থেকে চাঁদা তুলতে নিষেধ করা হয়েছিলো। কিন্তু তারপরও তারা রুমে রুমে চাঁদা তোলে। এ নিয়ে তাদের সাথে শুধু আলোচনা করা হয়েছে।’
রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মিজানুর রহমান রানা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
উল্লেখ্য, রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ডিল্স মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে বারবার সমালোচিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষার্থীদেরও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া হলের কর্মচারীদের মারধর ও জোর করে ডাইনিংয়ে ফ্রি খাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এদিকে হলের ক্যান্টিনে ২০ হাজার টাকার বেশি বাকি রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাওয়ার পরও হলে থাকা এ নেতা গত ২ ফেব্রুয়ারি বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকোর্স বিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন তিনি। এরপর কিছুদিন শান্ত থাকলেও তিনি আবারো নতুন করে শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার শুরু করেন।
মন্তব্য চালু নেই