নারীরা যেভাবে গোটা বছর সুস্থ থাকতে পারে তার স্বাস্থ্যগত টিপস
একযোগে একাধিক কাজ করতে হিমশিম খায় মানুষের মস্তিষ্ক। তবে নারীরা মাল্টিটাস্কিংয়ে বেশ পারদর্শী। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, পুরুষদের চেয়েও এ কাজে দক্ষ নারীরা। সংসার সামলানোসহ ক্যারিয়ার চালিয়ে নিতে নারীদের প্রচুর খাটনি করতে হয়। অথচ তারা মোটেও স্বাস্থ্যসচেতন নন। এখানে বিশেষজ্ঞরা নারীদের জীবনযাপনে কিছু অভ্যাসযোগের পরামর্শ দিয়েছেন। এতে করে সারাবছর দিব্যি সুস্থ থাকবেন তারা।
১. ফিটনেসে প্রধান্য দিন : প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম বেশ কাজে দেবে। অ্যারোবিক এবং অন্যান্য ব্যায়ামের মিশ্রণে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং বিশেষ কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব। ক্যালোরি গ্রহণ এবং পোড়ানোর ভারসাম্য করে ওজন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
২. স্বাস্থ্যকর খাবার খান : আয়রন, ফোলিক এসিড এবং ক্যালসিয়াম গ্রহণ করুন। নারীদেহে এগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। এ ছাড়া কৃত্রিম চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাবার ইত্যাদি এড়িয়ে চলা জরুরি বিষয়। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ডায়রিয়া, কনস্টিপেশন, বাওয়েল সিনড্রোম, হার্টবার্ন, কোলোরেক্টাল ক্যান্সার ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
৩. কোলেস্টরেল পরীক্ষ করুন : অকিরিক্ত কোলেস্টরেল রক্তবাহী নালীগুলোকে সরু করে দেয়। বছরের পর বছর এমন হতে থাকলে এক সময় আথ্রোক্লেরোসিস দেখা দেয়। নিম্নমাত্রার ফ্যাট, কোলেস্টরেল এবং ধূমপান ত্যাগের মাধ্যমে এসব সমস্যাকে বিদায় জানানো সম্ভব।
৪. ধূমপান ত্যাগ : আধুনিক বহু নারী ধূমপানের অভ্যাস গড়ে তোলেন। ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো নতুন করে বলার কিছু নেই। এর জন্যে নারীদের ফুসফুসে ক্যান্সার, সারভিকাল ক্যান্সার এবং ওভারিয়ান ক্যান্সার ব্যাপক হারে দেখা দেয়।
৫. অ্যালকোহল ত্যাগ : পুরুষের দেহে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই অ্যালকোহল পুরুষের দেহে খুব দ্রুত পানির সঙ্গে মিশে যায়। নারীদের দেহে অ্যালকোহল তাই অল্প সময়েই ক্ষতির মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।
৬. বিষণ্নতা দূরীকরণ : এটি বেশ ক্ষতিকর রোগ। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় বিষণ্নতা মা এবং শিশুর দারুণ ক্ষতিসাধন করতে পারে। তাই বিষণ্নতা থেকে বাঁচতে প্রয়োজন সাইকোথেরাপি।
৭. ইউটিআই ইনফেকশন : ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন সব বয়সী নারীদের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর। দ্রুত পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
৮. থায়রয়েড টেস্ট : সময়মতো থায়রয়েড গ্রন্থির পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাইপোথায়রোডিজম পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এতে ওজন, ত্বক, চুল ওবং গর্ভধারণেও ঝামেলা হতে পারে। প্রতি ছয় মাস অন্তর রক্ত পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
৯. যৌন শিক্ষা : যৌনবাহিত রোগ সম্পর্কে বহু নারী অজ্ঞ। অস্বাস্থ্যকর যৌনতা, একাধিক যৌন সঙ্গী বা ঝুঁকি সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ধারণা না থাকায় যৌনরোগে আক্রান্ত হন অসংখ্য নারী। রুবেলা এবং এইচপিভি ভ্যাক্সিনসহ অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা নেওয়াটা জরুরি বিষয়।
১০. ক্যান্সারের ঝুঁকি পরীক্ষা : নারীদের নিয়মিত স্তন, যোনিপথ এবং ত্বক পরীক্ষা করা উচিত। পেরিয়ডিক ক্যান্সার পরীক্ষার জন্যে ম্যামোগ্রাফির মতো স্ক্রিনিং টেস্ট করিয়ে নেওয়া ভালো।
১১. নিয়মিত চেকআপ : ২০-৩০ বছর বয়সী বহু নারী পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যায় পড়েন। তাদের পক্ষে গর্ভধারণও ঝামেলাপূর্ণ হয়ে যায়। আবার গর্ভপাতের মতো ঘটনাও ঘটে। এ জন্যে নিয়মিত গাইনোলজিক্যাল পরীক্ষা নিয়মিত করিয়ে নেওয়াটা জরুরি। কোনো সমস্যা ধরা পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সহজেই সুস্থ থাকতে পারেন।
মন্তব্য চালু নেই