নারীদের যৌন শীতলতার কারণ! জেনে নিন
বিয়ের কিছুকাল পর অনেক স্বামীদেরই অভিযোগ করতে দেখা যায় যে, শারীরিক কোন সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও বিছানায় শীতল আচরণ করেন, অনীহা দেখান বা যথেষ্ট সক্রিয় নন। ফলে দাম্পত্যে অশান্তি অবধারিত ভাবেই হচ্ছে। অনেক নারী নিজেও বোঝেন নিজের এই সমস্যাটা, কিন্তু কাকে বলবেন বা কী করবেন, সেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না। আমাদের এই ফিচার সেইসব নারীদের জন্য, যারা শারীরিক ভাবে সুস্থ হওয়া সত্ত্বেও শীতল যৌন আচরণ করে থাকেন।
বয়সের পার্থক্য ব্যবধান তৈরি করে :
আপনার স্ত্রীর বয়স যদি অনেক কম হয়ে থাকে কিংবা আপনার সাথে বয়সের পার্থক্যটা বেশী হয়ে থাকে, তবেও তিনি যৌনতায় শীতল আচরণ করতে পারেন আর এটাই স্বাভাবিক। আমাদের দেশে বহু মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয় কিশোরী বেলায় কিংবা সদ্য তারুণ্যে, যখন হয়তো যৌনতা সম্পর্কে তার কোন ধারণাই জন্মায়নি ভালভাবে। এক্ষেত্রেও সর্ব প্রথম পরামর্শ হচ্ছে তাঁকে জোর করবেন না, অযথা রাগ দেখাবেন না। এতে যৌনতা বিষয়টি তার কাছে অনেক বেশী ভীতিকর হয়ে দাঁড়াবে। ধৈর্য ধরুন। স্ত্রীকে ভালবাসুন, তার সাথে প্রেম করুন। এক পর্যায়ে যখন তিনি নিজেই আগ্রহী হবেন আপনাকে কাছে পেতে, তখন যান।
তিনি একটু বেশী লজ্জা পান :
লজ্জা নারীর ভূষণ, এমন হতেই পারে যে তিনি একটু বেশী লজ্জা পান যৌন সম্পর্কে খোলামেলা হতে। মনে রাখবেন, আমাদের দেশের মেয়েরা পশ্চিমা দেশের মেয়েদের মত নন। বেশিরভাগ সাধারণ মেয়েরই বিয়ের আগে যৌনতা সম্পর্কে কোন ধারণা থাকে না আমাদের দেশে। এছাড়া পশ্চিমা মেয়েদের মত আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক কিছুই করতে পারেন না যৌনতার ক্ষেত্রে, এবং বিষয়টা কেবলই স্বভাব সুলভ লজ্জার কারণে। এক্ষেত্রে স্বামী হিসাবে তাঁকে চাপ দেবেন না। আপনি যা চান সেটা করার জন্য পীড়াপীড়ি করবেন না। বরং তার অনেক প্রশংসা করুন বিশেষ মুহূর্তে। আস্তে আস্তে তার লজ্জা কেটে যাবে।
তিনি ভালোবাসার অভাব অনুভব করেন :
যৌনতায় নারীর সক্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে একটি বড় ভূমিকা রাখে ভালোবাসা। তিনি আপনাকে যত বেশী ভালবাসবেন এবং আপনি যত বেশী ভালোবাসা ও আদর দেখাবেন, স্ত্রী ততটাই সক্রিয় হয়ে উঠবেন যৌনতার ক্ষেত্রে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেবল যৌনতার নয়, ভালোবাসার। দুজনের মাঝে মানসিক ভালোবাসার একটি মজবুত সেতু রচনা করুন। দেখবেন যৌনতা এমনিতেই উচ্ছল হয়ে উঠেছে। মানসিক প্রেম যৌনতায় খোলামেলা ও প্রাণবন্ত হতে সহায়ক।
অতীতের কোন কাহিনী :
নারী হয়ে জন্মালে ছেলেবেলায় যৌন হয়রানির সম্মুখীন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। এবং এই কারণেও অনেক নারীর যৌনতার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে যায় ও একরকম ভীতির জন্ম নেয় মনে যৌনতা ও পুরুষ সম্পর্কে। এক্ষেত্রে আপনিই একমাত্র পারেন ভালোবাসা দিয়ে এই ভীতি দূর করতে। আপনার ভালোবাসায় আপনার প্রতি আস্থা জন্মাবে তার এবং অতীতের স্মৃতি মুছে যাবে।
ক্লান্তি, সন্তান, মানসিক চাপ ইত্যাদি :
আপনি হয়তো ভাবছেন- “দিন শেষে বাসায় এসেছি, ও কেন সঙ্গ দেবে না আমাকে?” এই ভাবনার মাঝে আপনি ভুলে যাচ্ছেন যে সারাটা দিন আপনার স্ত্রীও মারাত্মক পরিশ্রম করে এসেছেন। হতে পারেন তিনি একটু বেশী ক্লান্ত হয়ে গেছেন বলেই যৌনতা নিয়ে বিশেষ আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন না। সংসার, সন্তান, শ্বশুরবাড়ি, হয়তো নিজের কোন ব্যক্তিগত কষ্ট বা অফিসের স্ট্রেস- কতকিছুই থাকতে পারে একজন মানুষের জীবনে। আর ক্লান্ত দেহে মনের মাঝে অনেক ভাবনা নিয়ে আসলেই যৌনতায় মেতে ওঠা যায় না। অন্তত নারীরা তো পারেনই না। এক্ষেত্রে দুজনে কোথাও বেড়িয়ে আসুন, সমস্যা মিটে গেলেও যেতে পারে। যৌন জীবনে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে একান্তে ছুটি কাটাবার সুযোগ হলে।
নিজেকে নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন :
ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে যৌনতায় সক্রিয় হন না, কারণ একটাই আর তা হলো নিজের ওপরে আস্থার অভাব। নিজেকে যথেষ্ট আকর্ষণীয় মনে না করা, কিংবা স্বামী হাসবেন কিনা ইত্যাদি ভেবে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। এক্ষেত্রে আপনি তাঁকে জড়তা কাটাতে সাহায্য করুন, বিশেষ মুহূর্তে পরার জন্য আকর্ষণীয় পোশাক কিনে দিন আর মাঝে মাঝেই জানান যে কী করলে তাঁকে আরও ভালো লাগবে এবং আপনাদের সম্পর্ক আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। দেখবেন দ্বিধা কেটে যাবে সহসাই।
যৌনতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণার অভাব :
অনেক নারীই যৌনতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণার অভাবে বুঝে উঠতে পারেন না আসলে কী করা উচিৎ আর কীভাবে। অনেকেই ভাবেন যৌনতার ক্ষেত্রে বেশী সক্রিয় হলে স্বামী তাঁকে বেহায়া বা নির্লজ্জ ভাববেন। স্ত্রীর এইসব ভুল ধারণা দূর করুন আপনি নিজেই। তাঁকে পর্যাপ্ত যৌন শিক্ষা দিতে পারেন। নিজে মুখে বলতে সংকোচ বোধ করলে নানান রকম বইপত্র ও ম্যাগাজিন কিনে দিতে পারেন। আপনি যা জানেন, স্ত্রী সেটা জানলে আপনাকে তার বুঝতে সুবিধা হবে।
এগুলো গেলো খুবই সাধারণ কারণ। যে কোন মানুষেরই যৌন শীতলতার অন্তরালে থাকতে পারে গুরুতর মানসিক কিংবা শারীরিক সমস্যা। সাধারণভাবে সমাধান না হলে অবশ্যই অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। এক্ষেত্রে লজ্জা পাবার কিছুই নেই।
মন্তব্য চালু নেই