নারীদের পিরিয়ড, মাসিক বা ঋতুস্রাবের সময় যে সমস্ত লক্ষন দেখা যায়
পিরিয়ড, মাসিক বা ঋতুস্রাব নারীদের দেহে খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। শারীরবৃত্তীয় নিয়মে নির্দিষ্ট সময় পর পর মেয়েদের পিরিয়ড হয়ে থাকে। এ সময়ে শরীরে বিভিন্ন হরমোনাল পরিবর্তন হয় বলে মেয়েদের মধ্যে কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন দেখা দেয়। যেমন পেটব্যথা, মাথাব্যথা, গা ব্যথা, মন খারাপ, খিটখিটে মেজাজ, রাগ ইত্যাদি। এগুলো মোটেও অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে চিন্তার কথা তখনই যখন তা সীমা অতিক্রম করে। কিছু শারীরিক অথবা মানসিক সমস্যা অধিক মাত্রায় দেখা দিলে অতিসত্বর চিকিত্সকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
জ্ঞান হারানো
পিরিয়ডের সময় যা নিঃসরণ হয়, তা রক্ত ছাড়া আর কিছু নয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে অনেকেরই শরীর দুর্বল লাগে। কিন্তু যদি এই দুর্বলতার কারণে জ্ঞান হারান তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
বমি
দুর্বলতা, মাথা ঘোরা ইত্যাদির কারণে বমি বমি ভাব হতেই পারে। কিন্তু যদি বারবার বমি হতে থাকে তাহলে চিকিত্সকের সাথে যোগাযোগ করুন। বিশেষ করে যদি পেট বা মাথা ব্যথার কারণে বমি হতে থাকে তাহলে তা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়। এসব ক্ষেত্রে ভিন্নতর চিকিত্সার প্রয়োজন হতে পারে।
জ্বর
পিরিয়ডের সময় শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি থাকে। কিন্তু এই উত্তাপ যদি ১০২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিত্সকের কাছে যান। নিজে নিজে ওষুধ খেয়ে ফেলবেন না।
মাথাব্যথা
পিরিয়ডের সময় মাথা ধরা, মাথা ঝিমঝিম করা বা মাথায় চাপ অনুভব করাটা স্বাভাবিক। মাথাব্যথা প্রচণ্ড আকার ধারণ করলে চিকিত্সকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। বিশেষ করে যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে। কারণ মাইগ্রেনের সাধারণ ওষুধ এ সময় কাজ নাও করতে পারে।
জমাটবাঁধা রক্ত নিঃসরণ
পিরিয়ডের বেশি ব্যথা হওয়ার একটি অন্যতম কারণ হলো চাপ চাপ রক্ত যাওয়া বা জমাটবাঁধা রক্ত নিঃসরণ। মাঝে মাঝে এমন হতেই পারে। কিন্তু যদি পরপর কয়েকবার পিরিয়ডের সময় তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। এটি জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে কোনো সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
প্রচণ্ড পেটব্যথা
পিরিয়ডের সময় পেটব্যথা কমবেশি সব মেয়েদেরই করে। তবে প্রচণ্ড রকমের পেটব্যথা করলে তার কথা আলাদা। প্রচণ্ড এই ব্যথা হতে পারে হরমোন, জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের সমস্যার কোনো লক্ষণ। তাই পিরিয়ডের সময় প্রচণ্ড পেটব্যথা হলে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।
দীর্ঘমেয়াদী বিষণ্নতা ও রাগ
মাসের এই বিশেষ দিনগুলোতে অনেকেই বিষণ্ন থাকেন। তেমন কোনো কারণ ছাড়াই মন থাকে খারাপ। তবে এই মন খারাপ যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে তাহলে তা ডিপ্রেশন রোগে রূপান্তরিত হতে পারে।
একই কথা রাগের ক্ষেত্রেও। পিরিয়ডের সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া রাগ হয়ে যেতে পারে আপনার রোগ। রেগে গিয়ে চিত্কার-চেঁচামেচি, ভাঙ্গচুর করার অভ্যাস থাকলে চিকিত্সকের পরামর্শ নেয়াটাই ভালো।
মন্তব্য চালু নেই