নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে নূর হোসেন

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়েছে আলোচিত সাত খুন মামলার মূল আসামি নূর হোসেনকে। শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম তাকে পুলিশ লাইনে নেয়। বেলা দেড়টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হবে। এজন্য আদালতপাড়ায় নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা।

শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১ কার্যালয় থেকে তাকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর এক ঘণ্টা পর সকাল সোয়া ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে পৌঁছায় নূর হোসেনের গাড়ি বহরটি। বর্তমানে তাকে পুলিশ লাইনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

আদালতে তোলার পর নূর হোসেনের রিমান্ড চাওয়া হবে কিনা এ নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ভিন্ন মত তুলে ধরেছেন।

জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, রিমান্ডের ব্যাপারটি পুরোটাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার উপর নির্ভর করছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিনি যদি রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তাহলে করতে পারেন। বিষয়টি একান্তই তার বিষয়।

তবে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার বলেন, নূর হোসেনকে রিমান্ডে নেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ তার বিরুদ্ধে মোট ১৩টি মামলা আছে। সব মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। আর যে মামলায় পরোয়ানা জারি হয় সে মামলায় রিমান্ডে নেওয়ার সুযোগ নেই।

এর আগে শুক্রবার সকাল ৭টা ৫মিনিটে র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার সময় র‌্যাবের পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) মুফতি মাহমুদ খান বলেন, মেডিকেল চেকআপের জন্য নূর হোসেনকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি।

সংক্ষিপ্ত এই ব্রিফিং শেষে নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর তাকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ রওনা হয় পুলিশ।

এর আগে র‌্যাবের হেফাজতে সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে তাকে র‌্যাব-১ কার্যালয়ে আনা হয়। তাকে নিয়ে আসা গাড়িটির সঙ্গে ছিলো আরও চারটি গাড়ি।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০মিনিটের দিকে বেনাপোল চেকপোস্টের জিরো পয়েন্ট দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা নূর হোসেনকে বিজিবি সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে।

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নূর হোসেনকে হস্তান্তরকালে উপস্থিত ছিলেন- যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোকলেসুর রহমান, আলোচিত সাত খুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশিদ, যশোর ২৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর লেয়াকত হোসেন, যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাব্বি হাশমি, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি অপূর্ব হাসান, বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি তরিকুল ইসলামসহ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লারলামাপাড়া থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দনসরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।

এরপর ২০১৪ সালের ১৪ জুন কলকাতার দমদম বিমানবন্দরেরকাছে কৈখালি এলাকার একটি বাড়ি থেকে দুই সহযোগীসহ তাকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।



মন্তব্য চালু নেই