নতুন বছরকে শুভ দেখতে এই পাঁচটি বিষয়কে না বলুন
ইংরেজি নববর্ষে রেজলিউশন নেওয়ার রীতি রয়েছে। কিন্তু বাংলা নববর্ষকে আমরা আর একটা ছুটির দিনের বাইরে তেমন কিছু ভাবি কি? পয়লা জানুয়ারি মদ বা সিগেরেট ছেড়ে দাওয়ার প্রতিজ্ঞা অনেকেই করি। কিন্তু বাংলা নববর্ষে তেমন কোনও প্রতিজ্ঞার কথা মাথায় রাখি না। অথচ, কয়েকটা এমন বিষয় আমাদের দৈনন্দিনের সঙ্গে এমন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে, তাদের ছাড়তে পারলে জীবনের মানেটাই বদলে যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন লাইফস্টাইল বিশেষজ্ঞ শন রোজেনবার্গ।
রোজেনবার্গের মতে, কয়েকটি বাক্য আমাদের চরিত্রকে এতটাই প্রভাবিত করে যে তাদের জন্য আমাদের জীবনের অর্থটাই ভিন্ন খাতে বইতে শুরু করে। তাই নববর্ষের রেজলিউশন হিসেবে এই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে দেখতে পারেন। বলা যায় না, হয়তো বদলে গেল আপনার জীবনের ছন্দ।
দেখা যাক, কী সেই বাক্যগুলি।
• ‘আর একটা সুযোগ দিন’— পারিবারিক পরিসরেই হোক অথবা কর্মক্ষেত্র, এই বাক্যটি আমরা যে কোনও ভুলের পরে উচ্চারণ করেই থাকি। কিন্তু ভেবে দেখুন, এই বাক্যের পিছনে কি কোনও সুযুক্তি রয়েছে? ভুলের পরে আর একটা সুযোগ মনে কি সেই ভুলটা আবার করার সুযোগ দেওয়া? যদি তা-ই হয়ে থাকে, তবে এই বাক্যটিকে কেন প্রয়োগ কি আমরা? একে বার বার ব্যবহার করে নিজের ভুলকেই প্রশ্রয় দিয়ে চলেছি না তো?
• ‘সময়ে সবই সয়ে যাবে’— সান্ত্বনাবাক্য হিসেবে সবথেকে বেশি চলিত এই বাক্যটি আমরা এমন পরিসরে ব্যবহার করি, যেখানে সেই মানুষটি উপস্থিত থাকেন না, যাঁকে সান্ত্বনা দিতে কথাটি বলা হয়েছে। সেদিক থেকে দেখলে এই বাক্যটি উচ্চারণ করে আমরা নিজেদেরকেই সান্ত্বনা দিই। সন্তান হারানোর ব্যথাই হোক অথবা সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়ার সংবাদ, সেই মানুষটিই এর প্রকৃত মর্ম বুঝতে পারেন, যাঁর এই অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ। একথাও ঠিক, সময় সবকিছুকে ভোলাতে পারে না। বিশেষ করে প্রিয়জন হারানোর বেদনাকে তো নয়ই। সুতরাং এই বাক্যকে পরিহার করলে অন্তত নিজের কাছেই সৎ ও স্বচ্ছ থাকা যায়।
• ‘আমার বাবাকেও এটা করতে দেখেছি, আমি কেন করব না’— আপনার বাবা অথবা প্রণম্য কারোকে যদি কোনও অপরাধ করতেও আপনি দেখে থাকেন, সেটা কিছুতেই আপনার জীবনের উদাহরণ হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তাছাড়া এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে, বাবার আমল, সমাজ-সংসার আর আপনার পরিমণ্ডল এক নয়। সেই কালে সেই সমাজে আপনার কোনও গুরুজনের করে যাও কোনও কাজ আজকে শোভন না-ও হতে পারে।
• ‘এই বয়সে আর নতুন করে কি নিজেকে বদলাতে পারব’— কেন পারবেন না? নিশ্চয়ই পারবেন। কেবল এই বাক্যটি বলা বা ভাবা বন্ধ করে দিন। মনে রাখবেন, অনেকেই জীবনের প্রধান পর্যায়গুলো পার হয়ে এসে নিজেকে বদলেছেন। অনেক বৃদ্ধই কম্পিউটার শেখেন আজও। নিজেকে যুগোপযোগী করে রাখেত অনেকেই রপ্ত করেন স্মার্টফোনের কৃৎকৌশল। নাট্যকার বাদল সরকার জীবন সায়াহ্নে ভর্তি হয়েছিলেন তুলনামূলক সাহিত্যের এমএ কোর্সে। আপনি কেন পারবেন না?
• ‘আশা করি এ কথায় কিছু মনে করছেন না’— আপনি ভালভাবেই জানেন, এই বাক্যটির পরে আপনি যা বলবেন, তা মনে করার মতোই। যাঁকে উদ্দেশ্য করে এই বাক্যটি বলা, তিনি আপনার বক্তব্যে অবশ্যই কিছু মনে করবেন। তাঁকে সাবধানবাণী শোনানোর কোনও মানে হয় কি? তার চাইতে যদি অপ্রিয় কথা বলতেই হয়, সেটা নৈর্ব্যক্তিক ভাবেই বলুন। কে কী মনে করল না করল, তা নিয়ে মাতা না ঘামনোই বাল। আর যদি আপনার কথাটি তেমন অপ্রিয় হয়ে তাকে, তা হলে তা না বলাই ভাল।
এই অভ্যেস বজায় রাখলে আপনার পারিপার্শ্বিকের উপরে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য আর সেই প্রভাব অবশ্যই শুভ, জানাচ্ছেন শন রোজেনবার্গ।
মন্তব্য চালু নেই