নতুন করে আসছে ও প্রিয়া তুমি কোথায়

আসিফ আকবর। বাংলা গানের যুবরাজ বলা হয় তাকে। ২০০১ সালে প্রকাশিত তার প্রথম সংগীত অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’। অ্যালবামের টাইটেল ট্র্যাকটি দিয়ে রাতারাতি পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি।

এই গান কম উন্মাদনা হয়নি। শ্রোতারা গানটিকে এতটাই পছন্দ করেছিলেন যে প্রত্যেকেই এই অ্যালবামটি সংগ্রহ করে রাখতে গিয়ে একজন শিল্পীর সর্বোচ্চ সংখ্যক অ্যালবাম ব্রিক্রির রেকর্ড উপহার দিয়েছেন আসিফ আকবরকে। গানটির জনপ্রিয়তাকে মাথােয় রেখে চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছিলেন শাহাদাৎ হোসেন লিটন। সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ঢাকাই ছবির তুমুল জনপ্রিয় জুটি রিয়াজ-শাবনূর। একটি বিশেষ চরিত্রে ছিলেন শাকিব খানও।

ব্যক্তি আসিফেরও খুব প্রিয় এবং আবেগের গান ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’। এবার গানটিকে নতুন করে উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন শিল্পী। আসছে ঈদ উপলক্ষে চ্যানেল নাইনের জন্য তানভীর খানের পরিকল্পনা ও পরিচালনায় নির্মিত হয়েছে ‘কুক স্টুডিও’র আদলে মিউজিক ফিউশন অনুষ্ঠান ‘পাওয়ার লাউঞ্জ’। পাওয়ার এনার্জি ড্রিংস ও ভিশনের সৌজন্যে ছয় দিনব্যাপি এই অনুষ্ঠানে দেশের জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা শিল্পীদের পরিবেশনায় জনপ্রিয় গানগুলিকে ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হবে। তারমধ্যে আইয়ূব বাচ্চু, সুমনা হক, ন্যানসির মতো তারকা শিল্পীদের পাশাপাশি গাইবেন আসিফ আকবরও। তিনি এখানে ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ এবং ‘আমার পাগলা ঘোড়া রে’ গান দুটির জন্য নতুন করে কণ্ঠ দিয়েছেন।

গেল বুধবার (৭ সেপ্টম্বর) বিকেল থেকে তিনি রাজধানীর তেঁজগাওস্থ চ্যানেল নাইনের স্টুডিওতে এই দুটি গানের রেকর্ড ও শুটিংয়ে অংশ নেন। এ প্রসঙ্গে আসিফ আকবর বলেন, ‘নতুন যে কোনো কিছু করতেই আমার খুব ভালো লাগে। আমি এনজয় করি। এই কাজটিও দারুণ অভিজ্ঞতার। নিজের প্রিয় দুটি গানকে নিয়ে নতুন আঙ্গিকে হাজির হবো।’

আসিফ আরো বলেন, ‘কুক স্টুডিও’র ব্যাপারটি আমার খুব ভালো লেগেছিলো। চমৎকার আয়োজনে প্রচুর বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গান করার ইচ্ছে আমার হয়েছিলো। পরবর্তীতে বাংলাদেশেও একই আদলে একটি অনুষ্ঠান চোখে পড়েছে। কিন্তু সেখানে প্রচুর সমালোচনা উঠেছে আয়োজেনর নানা ভুল নিয়ে। বিশেষ করে মূল শিল্পীদের বসিয়ে রেখে পরিচালক নিজের গলা শুনিয়ে যাচ্ছেন। এটা বিরক্তিকর। সেই তুলনায় ‘পাওয়ার লাউঞ্জ’ শিল্পী প্রধান আয়োজন।’

তিনি আরো বলেন, ‘একটি বিষয় বলতেই হয়, এই আয়োজন অনেক ব্যায়সাপেক্ষ। তানভীর খান সাহসী মানুষ, গানকে পাগলের মতো ভালোবাসে বলেই তিনি প্রায় সময় গান নিয়ে এমন পাগলামি করেন। এজন্যই তাকে এতো ভালোবাসি। তবে যারা গানের পৃষ্ঠপোষকতা করতে পছন্দ করেন তারা এখানে এগিয়ে আসতে পারেন। নতুন প্রজন্মকে গানের শ্রোতা বানাতে এই আয়োজনটি বেশ সফল হবে।’

নতুন করে পুরনো গানগুলো প্রিয় শিল্পীদের কাছে ভালোবাসা পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেনে আসিফ আকবর।

এদিকে অনুষ্ঠানটি নিয়ে এর পরিকল্পক ও পরিচালক তানভীর খান বলেন, ‘মিউজিক নিয়ে বরাবরই ব্যতিক্রম কিছু করতে আমার ভালো লাগে। যখন দেখলাম কুক স্টুডিও’র আদলে বিশ্বজুড়েই গানের ফিউশনের একটা ট্রেন্ড চলছে এবং আমাদের বাংলাদেশি শ্রোতারাও সেগুলো গ্রহণ করছেন তখন আমিও ক্লোজআপকে সঙ্গে নিয়ে তিনটি পর্ব করেছিলাম। এবারে আয়োজনের চতুর্থ পর্ব এটি। তবে ‘পাওয়ার লাউঞ্জ’র প্রথম পর্ব। ঈদে দর্শক-শ্রোতাদের ব্যতিক্রমী বিনোদন দিতেই এই আয়োজন করেছি। প্রথমে গানগুলো চ্যানেলে প্রচার হবে। যেদিন যে গানগুলো প্রচার হয়ে যাবে সেদিনই গানগুলো ইউটিউবে প্রকাশ করা হবে।’

তানভীর আরো বলেন, ‘ফিউশন মূলত সুর, তাল ও সঙ্গীতের সম্মিলন। সে ভাবনা থেকে বিভিন্ন দেশের শিল্পী-বাদকদের নিয়ে জনপ্রিয় কোনো গানের ফিউশন করা হয়। তবে এখানে আমরা দেশীয় যন্ত্রশিল্পিী, কণ্ঠশিল্পীদের নিয়ে কাজ করেছি। এর বেশ কিছু কারণ আছে। বিদেশি যারা ফিউশন করতে এসে আমাদের দেশীয় শিল্পীদের সঙ্গে বাজিয়েছেন তারা বারবার একটা কথা বলেন যে, ‘ব্যাকরণ মেনে হয়তো আমরা গানের সঙ্গে বাজিয়ে যাই কিন্তু সংগীতের যে অনুভব সেটা পাই না। ভাষাটা বুঝতে অসুবিধা হয় বলেই ‘ফিল’টা আসে না। অথচ সংগীতে ‘ফিল’টাই মূল।’

তিনি জানালেন, ‘এখানে সর্বমোট ২৩টি গানের ফিউশন ভিডিও নির্মাণ করা হবে। আধুনিক, ফোক, ব্যান্ডসহ নানা ঘরানার গান থাকবে। প্রবীন-নবীন শিল্পীদের একটা কম্বিনেশন থাকবে। যেমন আসিফ আকবরের গান দুটিতে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা শাহরিয়ার রাফাতও তার নিজের গানের কিছু অংশ গেয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস শ্রোতাদের মন ভরাবে ‘পাওয়ার লাউঞ্জ’।

তিনি নিশ্চিত করেছেন, চ্যানেল নাইনের ঈদ-উল-আযহার ৬ দিনব্যাপী আয়োজনের প্রতিদিনই সম্প্রচার করা হবে রাত ৯টা ১৫মিনিটে। এখানে আরো গাইবেন সুমনা হক, তাহসান, মিলা, ন্যান্সি, বারী সিদ্দিকী, শফি মন্ডল, তপু, দিনাত জাহান মুন্নি, শূন্য, বেলাল খান, তন্ময় তানসেন, ইমরান, রমা প্রমূখ।



মন্তব্য চালু নেই