নকল হাঁটু লাগাতে হবে মাশরাফিকে!

মাশরাফি বিন মর্তুজার হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের সংখ্যা অসংখ্য। শল্যবীদের ছুরির নীচে তাকে কতবার যেতে হয়েছে, তা হিসেব কষতে অনেককেই পরিসংখ্যান নিয় বসতে হয়। এক হিসেবে অন্তত ১০বার দুই হাঁটুতে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে দেশ সেরা এই পেসারকে।

এতবার অস্ত্রোপচার করার পরও দিব্যি খেলে যাচ্ছেন মাশরাফি এবং এখনও নিজের সেরাটা দিয়ে বার বার বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন বিশ্ব দরবারে। ভাবলে অবাকই হতে হয়। মাশরাফির হাঁটুতে বার বার অস্ত্রোপচার করা অস্ট্রেলিয়ান শল্যবীদ ডাঃ ডেভিড ইয়াং অবাকই হন, তার এই লড়াকু মানসিকতা দেখে। বিশেষ করে সিরিঞ্জ দিয়ে হাঁটুতে জমে থাকা পানি বের করতে হয় বলেও যখন একজন ক্রিকেটার মনের জোর দিয়ে মাঠে লড়াই করে যেতে পারেন, তখন অবাক হওয়ারই কথা।

এ তো গেলো মাশরাফির লড়াকু মানসিকতা এবং হাঁটু নিয়ে তার লড়াই করার কথা। কিন্তু, মাশরাফি ভক্তদের অনেকেই হয়তো জানেন না, ৪০ বছর বয়সের পর হয়তো পঙ্গুই হয়ে যেতে হবে তাকে। চলাফেরা করতে হবে হুইল চেয়ারে করে।

রোববার একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাশরাফি নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘ডাক্তার ডেভিড ইয়াংয়ের কথাটাই আপনাদের শুনিয়ে দেই। বিশ্বকাপের সময় মেলবোর্নে এই সার্জনের সঙ্গে দেখাও করেছিলাম। উনি বললেন, ৪৫-৫০ বছর বয়সের মধ্যে তোমার জন্য হুইলচেয়ার মাস্ট। আমাকে হাঁটুর আরেকটা অপারেশন (নি রিপ্লেসমেন্ট) করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন তিনি।’

পরে আবার নকল হাঁটুর ব্যাখ্যাও দেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। নকল হাঁটু নিয়ে খেলা যায় না। ওটা খেলা ছাড়ার পরের ব্যবস্থা। বয়স হলে এমন অবস্থা যাতে না হয় যে আমি হাঁটতেই পারছি না, সেজন্য ওই অপারেশন। স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য খেলা ছাড়ার পরেই উনি আমাকে হাঁটু রিপ্লেস করিয়ে নিতে বলেছেন।’

প্রায় ৬ বছর কোন টেস্ট খেলতে পারেন না মাশরাফি। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে চোট পেয়ে ছিটকে পড়েছিলেন তিনি। সেই যে টেস্ট থেকে দুরে সরে যেতে হলো, আর ফিরতে পারলেন না।

টেস্টকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জাননো হয়নি মাশরাফির। তবে ‘হাঁটু’ তাকে টেস্টে নামতে দিচ্ছে না গত অর্ধযুগ। কিন্তু লড়াকু বলেই মাশরাফি এখনও স্বপ্ন দেখছেন টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার। স্থানীয় ওই পত্রিকাকে মাশরাফি বলেন, ‘এখনও স্বপ্ন দেখি টেস্টে ফেরার। তবে, সেটা এত সহজ নয়। আগে প্রমান করতে হবে আমি সত্যি সত্যি টেস্টের জন্য উপর্যুক্ত কি না। অনেক বেশি প্রথম শ্রেনীর ম্যাচ খেলতে হবে। বেশি বেশি করে চারদিনের ম্যাচগুলো খেললেই বোঝা যাবে, আমি সত্যি সত্যি ফিট কি না। তবে লং ভার্সনের ম্যাচ খেলতে গিয়ে যদি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাই, তাহলে সেটা করা ঠিক হবে কি না সেটাও ভেবে দেখতে হবে।’

এখনও তিন-চার বছর খেলার স্বপ্ন দেখেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘এখন ৩১ বছর বয়স আমার। আরো তিন-চার বছর দিব্যি ওয়ানডে খেলতে পারব বলে বিশ্বাস। বিশ্বাস করি অন্তত আরো দুই বছর টেস্ট খেলার সামর্থ্যও আমার আছে। তবে প্রচুর চার দিনের ম্যাচ খেলেই আমি টেস্টে ফেরার সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাই। একটি-দুটি খেলে কিছু বোঝা যাবে না। সামনের জাতীয় লিগ দিয়েই তাই ফেরার চেষ্টা করব।’



মন্তব্য চালু নেই