নওগাঁসহ উত্তরাঞ্চলের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে অর্ধশতাধিক নদী

সংস্কার না হওয়ায় নওগাঁর বেশক’টি নদীসহ উত্তরাঞ্চলের মানচিত্র থেকে বিলিন হয়ে যাচ্ছে প্রায় অর্ধশতাধিক নদী। উত্তরাঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া বর্তমানে কোন রকমে অস্তিত্ব টিকিয়ে নদীগুলো পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় মরা খালে পরিণত হয়েছে। এসব নদীতে এক সময় ঢেউয়ের তালে চলাচল করেছে অসংখ্য পালতোলা নৌকা। নদীকে কেন্দ্র করে এলাকা গুলোতে গড়ে উঠেছিল অনেক জনপদ ও হাট বাজারসহ বিভিন্ন লোকলয়। গড়ে ওঠা ঐসব জনপদসহ আশপাশের অসংখ্য মানুষ ওইসব হাটবাজারে ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে খুঁজে পেয়েছিলেন জীবন-জীবিকার পথ। এছাড়াও নদীপথে নৌ-যানের দ্বারা ব্যবসা-বানিজ্যের মাধ্যমে গড়ে উঠেছিল বানিজ্যিক কেন্দ্র।

এসব নদীর অথৈ পানি দিয়ে কৃষকরা দুই পাড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ধান, গম, পাট ও আখসহ নানান তরি তরকারীর ফসল ফলাতেন। প্রকৃতির অফুরন্ত পানিতে নানা ফল-ফসলে ভরে উঠেছিল মাইলের পর মাইল। সে যেন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। ছোট বড় নানা প্রজাতির মাছেরও অফুরন্ত উৎস ছিল এসব নদী। এসব এখন কেবলই কালের সাক্ষী। সময় গড়িয়ে চলার সাথে সাথে সেই ভরা যৌবনা নদীগুলো এখন মরা খালে পরিণত হতে চলায় নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ওইসব হাট বাজার এখন হয়েছে বিরান অঞ্চল, কৃষি জমিগুলো ধীরে ধীরে উর্বরা শক্তি কমে যাচ্ছে, জেলে পাড়াগুলোও হয়ে যেতে বসেছে বিলিন। এক কথায় থমকে গেছে নদী আর নিভে গেছে বিপুল সম্ভাবনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের পানি আগ্রাসন ও সংস্কারের অভাবে উত্তরাঞ্চলের অন্যতম নদী তিস্তা ও পদ্মার অস্তিত্ব এখন চরম হুমকীর মুখে পড়েছে। এছাড়া উত্তরের আত্রাই, ছোট যমুনা, পূণর্ভবা, তুলশিগঙ্গা, মহানন্দা, ধরলা, দুধকুমার, স্বতী, ঘাঘট, নীলকুমার, বাঙ্গালী, বড়াই, মানাশ, কুমলাই, লাউতারা, ধুম, বুড়িঘোড়া, সোনাভরা, হলহলিয়া, লোহিত্য, ঘরঘরিয়া, রতœাই, পিছলা, টাঙ্গান, ত্রিমোহনী, তালমা, ফুলকুমার, ধরণী, জিঞ্জিরাম, বুড়িতিস্তা, চাড়াল কাটা, ধানজাই, সানিয়া, কাঁটাখালি, সালমারা, রাইঢাক, খারুভাজ, যমুনেশ্বরী, চিকলি, করতোয়া ও ইছামতিসহ অর্ধ শতাধিক নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। এতে এসব নদীকে কেন্দ্র করে জেগে ওঠা বিপুল সম্ভাবনার প্রাণের স্পন্দন থেমে যাচ্ছে। স্থবির হয়ে পড়ছে লাখ লাখ মানুষের নদী কেন্দ্রীক জীবন-জীবিকা।

এ সম্ভাবনা একদিনে থেমে যায়নি। সম্ভাবনাময় নদীগুলো আস্তে আস্তে অস্তিত্ব সংকটে পড়লেও এ নিয়ে মাথা ঘামায়নি কেউ। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হলে অন্তত অস্তিত্ব সংকটে পড়তোনা এক সময়ের খরস্রোতা উত্তাল এসব নদীগুলো। এব্যাপারে দ্রুত আশু পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।



মন্তব্য চালু নেই