ধূমপান ছেড়ে দেয়ার সহজ উপায়

এবার ছেড়েই দেবো। সিগারেটের অভ্যাসটি নতুন বছরে আর রাখতে চাই না। ছেড়ে তো দেবোই, শেষ বারের মতো সাধ মিটিয়ে খেয়ে নিই। নিজেকে শাসিয়ে, তবে হ্যা আর ধূমপান নয়- এমন চিন্তা করেন অনেক ধূমপায়ী। ঠিক এই চিন্তা করেই আরও বেশি আসক্ত হয়ে পড়েন। ছাড়বো, ছাড়বো করে আর ছাড়া হয়ে ওঠে না। বন্ধুদের সঙ্গে তাদের আড্ডাও জমে না সিগারেট ছাড়া। অনেকের নাকি পেটের ভাতও ঠিকমতো হজম হয় না। অথচ সামান্য এই অজুহাতে সিগারেটের নিকোটিন নামক বিষ নিচ্ছেন শরীরে। বাড়িয়ে চলেছে ক্যানসার ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। বায়ু দূষণে একজন ধূমপায়ীর ভূমিকার কথা না হয় বাদ দিলাম। কিন্তু আপনার সিগারেটের ধোঁয়ায় শারীরিক ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হচ্ছে পরিবারের অন্য সদস্যরা।

সিগারেটের নিকোটিনের ওপর ব্রেইন অনেক ক্ষেত্রে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তাই কোনো ধরনের থেরাপি বা মেডিকেশন ছাড়া ধূমপান ছাড়া ঠিক নয়। তাই শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই সিগারেটের বিকল্প নিয়ে ভাবতে হবে।

মুখের মধ্যে চুইং গাম বা লজেন্স রাখতে পারেন। একা একা ধূমপান না ছেড়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্য (যদি ধূমপায়ী থাকেন), বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীদের উৎসাহিত করে একসঙ্গে ধূমপান ত্যাগের ঘোষণা দিন। ধূমপান ছাড়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে যেসব বন্ধুরা ধূমপানে অভ্যস্ত না তাদের সঙ্গে চলাফেরা করা। প্রয়োজনে ধূমপান পছন্দ করেন না- এমন কারো সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলুন। তার চাওয়া পাওয়াকে প্রাধান্য দিন।

ধূমপান ছাড়ার জন্য সিগারেট, লাইটার, অ্যাস্ট্রেসহ সব সরঞ্জামাদি ছুঁড়ে ফেলুন। ধূমপানের আসক্তি মেটায় এরকম কোনো উপাদানের সঙ্গে থাকতে পারেন। প্রয়োজনে সঙ্গে জিনজার কুচি রাখতে পারেন। মুখের মধ্যে রাখলে সিগারেটের নেশা ভুলিয়ে রাখতে পারে। ড্রাই ফ্রুটস বা তাজা ফলও রাখতে পারেন। মাঝে মাঝেই একটু খেয়ে নিলে সিগারেটের নেশা খুব বেশি তাড়া করবে না।

মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে হালকা ম্যাসাজ নিন। অ্যালকোহলের অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিতে হবে। মনোযোগ অন্যদিকে নিতে নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখতে পারেন। ধূমপান ছেড়ে দেয়ার প্রথম দিকে ইচ্ছে করেই সিগারেট খেতে দেরি করুন। এভাবে আস্তে আস্তে বাদ দিলে দ্বিতীয় বার আর করবেন না। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে, অনুধাবন করতে হবে ধুমপান ছেড়ে দেয়া কোনো কঠিন কাজ নয়। এই সহজ কাজটি আপনিও খুব ভালোভাবে পারবেন।

ধূমপান ত্যাগে নিয়মিত ব্যায়াম দারুণ কাজ দেয়। প্রচুর পরিমাণ সবুজ শাক-সবজি ও রঙিন ফলমূল খান। ধূমপান বন্ধ করে যে আর্থিক সাশ্রয় আপনার হবে তার একটা অংশ হালকা বিনোদনে ব্যয় করুন। দেহ মন দুটোয় সুস্থ থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই