সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন
দ্বিধাবিভক্ত আ.লীগ-বিএনপি ॥ অপ্রয়োজন মনে করছে র্যাব
দেশের আসন্ন তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনকে ঘিরে নতুন প্রশ্ন ও আলোচনার ঝড় উঠছে। সেনা মোতায়েনের প্রশ্নে আওয়ামীলীগ-বিএনপির মতবিরোধের সাথে যোগ হয়েছে সুশিল সমাজও। বিএনপির নেতারা ও বিএনপি ঘরণার সুশিল-বুদ্ধিজীবী সমাজ যখন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছেন ঠিক তখনই বিপরীত ভাবে-ই আ.লীগের অনেক নেতা ও আ.লীগ ঘরণার সুশিল-বুদ্ধিজীবী সমাজ সেনা মোতায়েনের বিরোধীতা করছেন।
এ’ দুই দলের বিরোধীতা ও দ্বিধাবিভক্তিকে সাধারণ জনগণ অনেকটা স্বাভাবিক মনে করলেও সেনা মোতায়েনের অপ্রয়োজনীয়তা নিয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনীর মনোভাবকে বাঁকা চোখে দেখছেন রাজনীতি সচেতনরা। ২৮এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশ প্রধানের তারিখ বলার মতো র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালকের কথায় উঠে এসেছে সেনা মোতায়নের অপ্রয়োজনীয়তার কথা। ফলে নির্বাচনে সেনা মোতায়ন আদৌ হচ্ছে না এমনটাই মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন- ২/১দিনের মধ্যে সেনা মোতায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন কমিশনের সাথে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বৈঠক শেষে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল জিয়াউল আহসান সাংবাদিকদের বলেন, জনগণ সেনাবাহিনীকে নামে ভয় পায় আর র্যাবকে কাজে ভয় পায়। তাই সিটি নির্বাচনে সেনা বাহিনী নামানোর প্রয়োজন নেই। যে দলেরই হোক না কেন কোন প্রার্থী সহিংসতার চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হবে, রেহাই দেয়া হবে না।
তিনি আরো বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের সময় যারা জ্বালাও পোড়াও করে, পেট্রোল বোমা ছোড়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। একই সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদ জানান, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে কিনা আগামী দু’এক দিনের মধ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সিইসি জানান, আইন-শৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে জানা গেছে যে, দেশের পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে। সিটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে দু’এক দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ওই বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসন্ন তিনটি সিটি নির্বাচনের তফশীল ঘোষনার আগে নির্বাচন কমিশনে এক বৈঠক শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন ২৮এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের কথা। ওই কথার জের ধরে নির্বাচন কমিশনার, কমিশনের সচিবসহ কয়েক কর্মকর্তারা অসন্তোষও প্রকাশ করেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই সেই ‘২৮এপ্রিল’কেই নির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে তফশীল ঘোষনা করা হয়।
ওই ঘটনার মতোই আইন-শৃংখলা বাহিনীর মনোভাব অনুযায়ী হয়তো আদৌ সেনা বাহিনী মোতায়েন হবে না কিংবা হলেও বসিয়ে রাখা হতে পারে বলে আশংকা ও মনে করছেন নির্বাচন ও রাজনীতি সচেতন অনেকে।
আরো পড়ুন :
মন্তব্য চালু নেই