দেশে ফেরা অনিশ্চিত সালাহ উদ্দিনের

আইসিইউতে সালাহ উদ্দিন

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদকে ভারতের মেঘালয়ের নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সেস (নেগ্রিমস) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।

বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনির বরাত দিয়ে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান দ্য রিপোর্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, সালাহ উদ্দিনের শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। পায়ে পানি জমেছে। তার কিডনিতে পাথর ধরা পড়ায় কিডনির আকার বড় হয়ে গেছে।’

বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালে তার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। শুক্রবার তার রিপোর্ট দেওয়ার কথা রয়েছে।

দুই মাস ধরে নিখোঁজ সালাহ উদ্দিন আহমেদের খোঁজ মেলে গত সপ্তাহের মঙ্গলবার। ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ের মানসিক হাসপাতালে পুলিশি হেফাজতে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরে ২০ মে (বৃহস্পতিবার) সালাহ উদ্দিনকে নেগ্রিমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দেশে ফেরা অনিশ্চিত সালাহ উদ্দিনের
সহজেই দেশে ফেরা হচ্ছে না বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের। ভারতের মেঘালয়ে আটক হওয়া সালাহউদ্দিন আহমেদকে আদালতে পেশ করার প্রক্রিয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে যাচ্ছে।

মেঘালয় রাজ্যের পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিনি ‘পুরোপুরি সুস্থ’ হওয়ার আগে তাকে আদালতে নেওয়া হবে না। কিন্তু এ ব্যাপারে ডাক্তারদের ছাড়পত্র কবে মিলবে সে ব্যাপারে তারা কিছুই বলতে পারছেন না।

শিলংয়ে ইস্ট খাসি হিলস থানার পুলিশ সুপার এম খারক্রাং বলেন, ‘বিষয়টা এখন আমাদের হাতে নেই, এটা ডাক্তারদের ওপরই নির্ভর করছে।’

মেঘালয়ের রাজধানীর এই থানার অধীনেই সালাহ উদ্দিন আহমেদ এখন বন্দি আছেন। বুধবার সন্ধ্যায় সালাহউদ্দিন আহমেদকে শিলংয়ের সিভিল হাসপাতাল থেকে ‘উন্নত চিকিৎসা’র জন্য সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ‘নেগ্রিমসে’ স্থানান্তরিত করা হয়।

গত মার্চ মাসে ঢাকায় অপহৃত হওয়ার প্রায় দু’মাস পর ১১ই মে ভারতের শিলংয়ে রহস্যজনকভাবে আবির্ভূত হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের দায়ে সে দিনই তার বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৪৬ অনুযায়ী মামলা দায়ের করে পুলিশ, কিন্তু তার দশদিন পর এখনও তাকে সেই মামলায় আদালতে হাজির করা হয়নি।

সালাহউদ্দিন আহমেদের হৃদযন্ত্রের ও কিডনি ঘটিত অল্প কিছু সামান্য আছে বলে চিকিৎসকরা এর আগে জানিয়েছেন, এবং নেগ্রিমসে বিশেষজ্ঞ কার্ডিওলজিস্ট ও নেফ্রোলজিস্টদের দিয়ে তাঁর জন্য বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে। ফরেনার্স অ্যাক্টে যার বিরুদ্ধে মামলা ঝুলছে, সেরকম একজন বিচারাধীন বন্দির জন্য চিকিৎসার এই ধরনের আয়োজন ভারতে শুধু বিরল নয়, সম্ভবত নজিরবিহীনও।

মেঘালয় পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, আসলে তারা চাইছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ এখন যত দিন সম্ভব হাসপাতালেই থাকুন। দিল্লি থেকে তার ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ না এলে এই মামলায় যে এখনই খুব একটা অগ্রগতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই, সেটাও তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

এদিকে সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদসহ তার পরিবারের কয়েকজন বন্ধু-আত্মীয় ও বিএনপির নেতা গত কয়েকদিন ধরে শিলংয়ে আছেন।
তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ স্বামীর জন্য শিলং হাইকোর্টের একজন আইনজীবী নিয়োগ করেছেন। স্বামীর সঙ্গে রোজই প্রায় দু’বেলাই তিনি দেখাও করছেন।

কিন্তু হাসিনা আহমেদ আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার স্বামীকে সিঙ্গাপুরের মতো তৃতীয় কোনও দেশে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার কথা বললেও সেরকম কোনও সম্ভাবনা এখন আদৌ দেখা যাচ্ছে না।

আগামী কিছুদিন সালাহউদ্দিন সালাহউদ্দিন আহমেদকে বিচারাধীন বন্দী হয়ে থাকতে হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, যাদের মাধ্যমে ঢাকার ইন্টারপোল দফতর আহমেদের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট নোটিশ পাঠিয়েছে, তারাও বলছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ কবে বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন তা এখনই বলা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশে আর একজন ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ আসামি, নারায়ণগঞ্জ হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত নূর হোসেন যে প্রায় এক বছর হতে চলল ভারতেরই একটি জেলে আটক আছেন সে কথাও তারা মনে করিয়ে দিয়েছেন।

সুত্র: বিবিসি।



মন্তব্য চালু নেই