দেশে ফিরছেন মুশফিক-ইমরুল
মুশফিক-ইমরুল যে খেলছেন না তা দলের পক্ষে বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে তাদের দেশে ফেরার দিন তারিখ সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে তামিম কিছু বলেননি।
শুক্রবার নিউজিল্যান্ড সফরের শেষ খেলা ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট শুরুর আগে বাংলাদেশ দলের ভক্ত সমর্থকদের জন্যে একটি হতাশাজনক খবর হচ্ছে শেষ টেস্ট একাদশে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও ওপেনার ইমরুল কায়েস নেই। চোটের কারণে তারা দল থেকে ছিটকে পড়েছেন। সম্ভবত শনিবার এই দু’জনই দেশে ফিরে যাচ্ছেন। মুশফিকের জায়গায় দলকে নেতৃত্ব দেবেন সহঅধিনায়ক তামিম ইকবাল। আর গ্লাভস হাতে উইকেটের পেছনে অভিষেক হচ্ছে নুরুল হাসান সোহানের। ইমরুলের জায়গায় খেলবেন সৌম্য সরকার। মুশফিক-ইমরুল যে খেলছেন না তা দলের পক্ষে বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে তাদের দেশে ফেরার দিন তারিখ সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে তামিম কিছু বলেননি।
মুশফিকের চোটের সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে ব্যথা কমেনি তার চোট আক্রান্ত বাঁহাতের বুড়ো আঙুলের। ওয়েলিংটন টেস্টে তার ঘাড়ের আঘাতটা গত দুদিনে আর কোনও সমস্যাও করেনি। এটি নিয়ে তাই কোনও দুশ্চিন্তাও নেই। কিন্তু ডাক্তারি পরামর্শে এখনই সুযোগ ছিল না তার মাঠে নামার। বিশ্রাম দরকার কমপক্ষে দু’সপ্তাহ। কারণ এখন খেলায় নামলে ভবিষ্যতে যে কোনও সময় ফিরতেও পারে তার ঘাড়ের সমস্যা। এরপরও ডাক্তারি পরামর্শ উপেক্ষা করেই দেশের স্বার্থে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে মুশফিক খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আঙুলের ব্যথা নিয়ে তার খেলাও ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া সামনে ভারতের সঙ্গে টেস্ট। শ্রীলংকা সফরসহ
আরও অনেক ম্যাচ। সে কারণে চোট আক্রান্ত আঙুলে আবার আঘাত লাগলে দল থেকে ছিটকে যেতে পারেন আরও অনেকদিনের জন্য । সে কারণে এই মুহূর্তে তাকে দিয়ে খেলানোর ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। তাই দেশের জন্য খেলার ইচ্ছা থাকা স্বত্ত্বেও ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট তার খেলা হচ্ছে না।
ক্রাইস্টচার্চ আরেক দুঃখের নাম হয়ে থাকল মুশফিক-ইমরুলের জন্য। সংবাদ সম্মেলনে তামিম বলেছেন মুশফিকের ফিরে আসতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ, ইমরুলের দশ দিনের মতো সময় লাগবে। তবে তারা ভারতে টেস্টের আগেই দলে ফিরে আসবেন।
নিউজিল্যান্ড সফরের শুরুতে এই ক্রাইস্টচার্চের প্রথম ওয়ানডেতেই হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে মুশফিক প্রথম মাঠ ছাড়েন। এর কারণে গোটা সফরে তিনি আর অপর দুটি ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলতে পারেননি। ওই দুই সিরিজে বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশের পেছনে মুশফিকের চোটকেও অন্যতম কারণ মনে করা হয়। ওয়েলিংটন টেস্টের মাধ্যমে আবার মাঠে ফিরে আসেন তিনি। ওই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি লড়াকু একটি ইনিংসও খেলেছেন। কিন্তু ওই সময়েই তিনি বাঁ হাতের বুড়ো আঙুল আর ডান হাতের তর্জনিতে আঘাত পান। ওই অবস্থায় মুশফিক টেস্টের চতুর্থ দিনে খেলতেও নেমেছিলেন। কিন্তু আঙুল বাঁচাতে গিয়ে ওইবার আঘাত পান মাথায়। এরপর যে অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি মাঠ ছাড়েন, নিউজিল্যান্ডের মাঠে তার আর ফেরা হয়নি।
ক্রাইস্টচার্চের মাঠ প্রিয় একটি ভেন্যু ছিল ইমরুলের। বাংলাদেশের আগের সফরগুলোয় এ মাঠেই তিনি ভালো রান পেতেন। কিন্তু ওয়েলিংটন টেস্টের তৃতীয় দিনে ঊরুতে পাওয়া চোটের কারণে তিনিও ছিটকে পড়লেন শেষ টেস্ট থেকে। দলের বিপর্যয়ের মুহূর্তে ওয়েলিংটন টেস্টে বাংলাদেশের শেষ ইনিংসে তিনি খুঁড়িয়ে হেঁটে মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে আর নামতেই পারলেন না।
এদিকে রুবেল হোসেন শেষ ম্যাচ খেলবেন কিনা সে সম্পর্কেও নিশ্চিত বলেননি তামিম।
প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ভালোর খাতায় না থাকায় রুবেল এখন পর্যন্ত টেস্টের কোথাও নেই। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার রুবেল, বাংলাদেশ দল তার খরচাপাতি শুধু বয়েই বেড়াল! কিন্তু শুধু কোচের চিন্তায় না থাকার কারণে দুই টেস্টের একটিতেও তাকে খেলানো হলো না। সাইডে লাইনে বসে রুবেল শুধু পানি বালকের দায়িত্বই পালন করে গেলেন! বুধবার কোচের সঙ্গে বাংলাদেশি মিডিয়ার ব্রিফিংয়ে রুবেলকে অবজ্ঞার বিষয়টি উঠে এসেছিল। এতে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে এই শ্রীলঙ্কান কোচ বলেছেন রুবেলকে না নেওয়ার কোনও যুক্তি তিনি কাউকে দেবেন না।
কোচের রুবেল অবজ্ঞায় অবশ্য কপাল খুলেছে তিন তরুণ পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বী, তাসকিন আহমদ এবং শুভাশীষ রায়ের। ওয়েলিংটন টেস্টের মাধ্যমে শেষের দু’জনের টেস্ট অভিষেক হয়। দু’জনে ভালো বলও করেছেন। প্রথম ইনিংসে কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের উইকেটও পান তাসকিন। উইলিয়ামসনই তার প্রথম টেস্ট শিকার। এর আগে একমাত্র ঢাকা টেস্ট খেলা রাব্বী ওয়েলিংটন টেস্টে ৩ উইকেট পেয়েছেন। শুরুতে অবশ্য নিউজিল্যান্ড সফরের দলেই ছিলেন না তিনি। শফিউলের চোটের কারণে তার কপাল খোলে। পাওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে ওয়েলিংটন টেস্ট আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে বরিশালের ছেলে রাব্বীকে। সব ঠিক আছে। কিন্তু প্রতিপক্ষ যে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। যাদের পেস বোলারদের অভিজ্ঞতা শতাধিক টেস্ট খেলার।
মন্তব্য চালু নেই