‘দেশের স্বার্থে কথা বললেই বিএনপি ভারতবিরোধী’

বিএনপি প্রতিবেশীর সঙ্গে মর্যাদা, সুষম ও সমতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব চায় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেছেন, আমরা দেশের স্বার্থের পক্ষে কথা বললেই আওয়ামী লীগ থেকে বলা হয়, আমরা ভারতবিরোধী।

আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘তিস্তার পানি আমরা পাইনি, বঞ্চিত রয়েছি। অথচ তিস্তার পানি না দিয়েই এখন ফেনী নদীর পানির কথা বলা হচ্ছে। ফেনী নদী তো একটি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানির সঙ্গে কেন ফেনী নদীর কথা বলা হচ্ছে?’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী বন্ধু দলের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শিরোনামে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শরিফ মোস্তফাজামান লিটু।

আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আজকে সীমান্ত সমস্যা দূর হতে ছিটমহলবাসীর জীবন থেকে ৪২টি বছর চলে গেছে। আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি ’৭১ সালে। অথচ ছিটমহলবাসী স্বাধীনতা পেল ৪২ বছর পর। আমরা এ কথা বললেই আমাদের ভারতবিরোধী বলা হয়।

তিনি বলেন, মোদির সফরের মাত্র দু’দিন আগে হঠাৎ করে কুমিল্লায় বাসে পেট্রোলবোমা মারা হল। এটা কেন করা হল। এটা করা হল ইস্যু তৈরির জন্য। কারণ তাদের কাছে তো কিছু বলতে ও দেখাতে হবে। সে জন্যই হঠাৎ করে এ হামলা।

বিএনপির অন্যতম সিনিয়র এই নেতা বলেন, বিএনপি এখন আন্দোলনে নেই। আজকে দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের জীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। দেশের মধ্যবিত্ত সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই ইস্যুতে আমাদের যে আন্দোলন করার কথা, আমরা তাও করছি না। কারণ বিএনপি সাংগঠনকে শক্তিশালী ও দলকে পুনর্গঠন করতে আমরা ব্যস্ত রয়েছি।

নোমান বলেন, ১৯৭১ সালে দেশে রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। সে দিন জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে দেশ স্বাধীন হতো না, হতো গৃহযুদ্ধ। বিশ্ব আমাদের স্বীকৃতি দিত না। শেখ মুজিব শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সংসদ অক্ষুণ্ন রেখে সমঝোতার চেষ্টা করেছেন। কারণ তার ইচ্ছা ও চেষ্টা ছিল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া। জনগণ যখন দিশেহারা তখন একজন মেজর এ দায়িত্ব নিলেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। এটাই সত্য। এটাই ইতিহাস। জিয়া সেই ইতিহাসের অমর চরিত্র।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, মোদির সফরকে কেন্দ্র করে আমাদের জাতীয় ঐক্যমত্যের প্রয়োজন ছিল। বিএনপি সরকারের প্রতি সেই আহ্বানই জানিয়েছিল। কিন্তু সরকার তা প্রত্যাখ্যান করেছে। জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হলে জনগণের মনে ভারতের সঙ্গে ২২ চুক্তি নিয়ে কোনো সন্দেহ-সংশয় তৈরি হতো না।

তিনি বলেন, আজও সময় ফুরিয়ে যায়নি। জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা হলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য নয়, জাতীয় ঐক্যমত হতে হবে জাতীয় স্বার্থ ও কার্যকর নির্বাচনের জন্য। সরকার এখনই জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠায় কার্যকর উদ্যোগ না নিলে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। আর এর দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণ সরকারকেই নিতে হবে।

আলোচনা সভায় অংশ নেন বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশারফ হোসেন, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই