দুধ পানে নয় বিসর্জনেই ভক্তি!
গরু নিয়ে সম্প্রতি ভারতে চলছে নানা রকম মতবিরোধ। গরু জবাই থেকে শুরু করে খাওয়া থেকেও সবাইকে বিরত থাকতে বলছে ভারত সরকার। আর এজন্য খোদ ভারতেও নিজেদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা কোন্দল। একদল একে কট্টরবাদী হিন্দুতত্ত্ব বলে ব্যখ্যা দিলেও আর একদল তা মানতে নারাজ। সব মিলিয়ে গরু নিয়ে ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে চলছে ব্যাপক অস্থিরতা। আর তাতে গরু বলি না হলেও ধর্মের এই গোড়ামিতে বলি হচ্ছে অসহায় কিছু মানুষ।
কিছুদিন আগে বিবিসি থেকে পাওয়া এক খবরে দেখা গেল গরু পাঁচার বন্ধ করার জন্য সীমান্ত পাহাড়া দিচ্ছে একদল গ্রামবাসী। সবরকম গরু পাঁচার রোধ করাই তাদের মূল কথা। কিন্তু প্রশ্ন হলো ভারত থেকে গরু যদি অন্যান্য দেশে প্রেরণ না করা হয় তাহলে এতো গরু দিয়েই বা কি করবে ভারত সরকার। তবে এটা উল্লেখ না করলেই নয় ভারতীয়রা গরুর মাংস না খেলেও গরুর দুধকে বিভিন্ন কাজে লাগায়। গরু রক্ষা করার জন্য তারা গরু রাখার স্থানটিতে ঝুলিয়ে লাখে রাধা কৃষ্ণের ছবি।
এসোসিয়েটেড প্রেস(এপি) থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায় পুরো ভারতবর্ষে বছরে প্রায় ১৪০ মিলিয়ন মেট্রিক টন গরুর দুধ উৎপাদন হয়। আর তার ৫০ শতাংশ যায় যুক্তরাষ্ট্রে। এখন কথা হলো বাকি ৫০ শতাংশ দুধ দিয়ে কি করে ভারতবাসী। এর পুরোটাই কি তারা খাওয়ার কাজে ব্যবহার করে। এমন প্রশ্নের উত্তরের জবাব মিলবে না। দুধ পান করার চেয়ে তারা ধর্মীয় কাজেই ব্যবহার করে বেশি। দেবতার স্নান থেকে শুরু করে তাকে শুদ্ধিকরণের সমস্ত প্রক্রিয়ায় দুধ একটি অপরিহার্য উপাদান। এছাড়া দুধ দিয়ে নানারকম মিষ্টি জাতীয় খাবার ও ঘি বানানো হয় যা তারা পূজার কাজেই ব্যবহার করে থাকে।
তবে এটা স্বীকার না করে উপায় নেই, দুধ বিক্রি করে সাবলম্বী হচ্ছে ভারতের অনেক গ্রামবাসী। গোহাটি গ্রামের ২৪ বছরের শ্রীমতি মন্দাল দুই সন্তান ও স্বামীসহ চার সদস্যের এই পরিবারটি পুরোপুরি নির্ভর করে দুধ বিক্রির টাকা উপর। অপরদিকে প্রণতি দেবী যার তিনটি গরু প্রতিদিন প্রায় ছয় লিটার দুধ দিয়ে থাকে। দিল্লি ষ্টেশনে গেলে চোখে পড়বে শত শত দুধের পাত্র নিয়ে দাড়িয়ে আছে গোয়ালারা। তবে অবাক হবার বিষয় হলো দিন শেষে সবাইকে খালি পাত্র নিয়েই ঘড়ে ফিরতে হয়।
মন্তব্য চালু নেই