‘দুই নেত্রীর মধ্যে সমঝোতা জরুরি’
বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র ও সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় দুই নেত্রীর মধ্যে সমঝোতা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
মঙ্গলবার টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক প্রেস বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র ও সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় দুই নেত্রীর মধ্যে পারস্পারিক সমঝোতা অর্জন অত্যন্ত জরুরি। কারন সংকট থেকে উত্তরণের চাবিকাঠি দুই নেত্রীর হাতেই রয়েছে। তাই উভয় পক্ষের নেতৃস্থানীয় অবস্থানে অধিষ্ঠিতজনদের সংহত ও দায়িত্বশীল আচরণ অপরিহার্য।’
তিনি বলেন, ‘তাঁদের রাজনীতি যে বাস্তবেই জনগণের স্বার্থে, জনগণের অধিকার খর্ব করার জন্য নয়, জনগণকে জিম্মি করে শক্তি পরীক্ষার জন্য নয়, তার প্রমাণ দেবার সময় তাদেরই।’
দেশে সুশাসন ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পথে ঝুঁকি বাড়ছে উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা ও বলপ্রয়োগের অসুস্থ প্রতিযোগিতা যে অমানবিক ও নৃশংস রূপ ধারণ করেছে, যেভাবে সাধারণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হরণ হচ্ছে তা উদ্বেগজনক।
এ পরিস্থিতিতে সব প্রকার বলপ্রয়োগ, সহিংস ও অগণতান্ত্রিক আচরণ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমঝোতার পথ অনুসন্ধান করা উচিত।
ড. জামান বলেন, ‘গণতন্ত্রের নামে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক পক্ষ শক্তি প্রদর্শন ও বল প্রয়োগের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হওয়ায় শিশু, নারী ও তরুণসহ সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার নিষ্ঠুরভাবে খর্ব হচ্ছে।
জনগণের স্বাভাবিক জীবন যাপন থেকে শুরু করে স্বাভাবিক মৃত্যুর অধিকার ভূলুন্ঠিত হচ্ছে। এক পক্ষ যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় টিকে থাকতে, অন্য পক্ষ যে কোন প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে জনগণ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন।
তিনি বলেন, ‘জনসভা, মিছিল ও মানববন্ধনসহ সব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সব নাগরিক ও সংগঠনের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন করে আন্দোলনের নামে একদিকে সহিংস কর্মসূচি এবং অন্যদিকে পুলিশ, বিজিবি ও র্যািবের মতো আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক আইনের ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবার হুমকি যেমন লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী তেমনি রাজনৈতিক অঙ্গনে উগ্র অগণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশের চাবিকাঠি।’
ড. জামান আরো বলেন, ‘চলমান রাজনৈতিক সংকট দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে শুধু পেছনে ঠেলে দিচ্ছে তাই নয়, বরং সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি চর্চার অভাবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো আজ অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে রাজনীতিকে এক বিভৎস রূপে তুলে ধরে রাজনীতি বিমূখতার বীজ বপন করা হচ্ছে।’
তাই দেশের স্বার্থে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশেষ করে বড় দুটি দলকে সমঝোতা ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের আহ্বানও জানান টিআইবি প্রধান।
মন্তব্য চালু নেই