দুই দলই সমঝোতা চায়, তবে…

দুই মাসেরও বিশি সময় ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি একটা অস্থিরতার মধ্যদিয়ে চলছে। বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট টানা দুই মাস ধরে মাঠে রয়েছে।

প্রথম দিকে আন্দোলনে একটা গতি থাকলেও আস্তে আস্তে আন্দোলনে ভাটা পড়তে থাকে।তবে প্রথমে দিকের পেট্রলবোমার ভীতি এখনো তাড়া করছে সাধারণ মানুষকে। তবে ককটেল ও পেট্রলবোমার ভীতি নিয়েই সাধারণ মানুষ কাজে নেমে পড়েছে।আটকে আছে কেবল এসএসসি পরীক্ষার্থীরা।

তবে বর্তমানে দেশ যেভাবে চলছে তাকে আর যাই হউক না কেন স্বাভাবিক বলা যাচ্ছে না। দেশকে এই অবস্থা থেকে বের করে আনতে চাইছে সরকার ও বিরোধীদলগুলো।

ফলে ভেতরে ভেতরে দুই পক্ষই ঐক্যমতের একটা জায়গায় আসতে চাইছে। সমঝোতায় আসতে পর্দার আড়ালে আলোচনাও হচ্ছে দুই পক্ষের মধ্যে।তবে নানা শর্তের কারনে সমঝোতায় গতি আসছে না।

দুই দলেরই রয়েছে শর্তযুক্ত প্রস্তাব।এ কারণেই সমঝোতা বা সংলাপে বসতে কালক্ষেপণ হচ্ছে বলে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যোগাযোগ করে জানা গেছে।

সূত্র বলছে, সম্প্রতি ১৬ দেশের কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপের কারণে দুই দলের মধ্যেই সমঝোতার মনোভাব তৈরি হয়েছে। আর এতে প্রধান বাধা হিসাবে কাজ করছে সংলাপে বসার শর্ত। তবে দুই দলই সমঝোতায় বসতে শর্ত জুড়ে দিয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে-আলোচনায় বসতে হলে প্রথমে বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে হবে। চলমান কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে হবে। সন্ত্রাসের পথ ছাড়তে হবে। এরপর আলোচনার পরিবেশ তৈরি হলেই সংলাপ-সমঝোতায় বসা যাবে।

আর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার যদি আগে প্রকাশ্যে সংলাপে বসার ঘোষণা দেয় তাহলে তারা কর্মসূচি তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করবে। দুই দলের এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। কারো পক্ষ থেকেই এখনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলে সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি সংলাপ-সমঝোতার বিষয়ে কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে একটি প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। সে প্রস্তাবের মধ্যে রাষ্ট্রপতির অধীনে জাতীয় সরকার গঠন করে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন খালেদা জিয়া। যেটা জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট একিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল-আলম লেলিন বলেন, আমরা কোনো সমঝোতার মধ্যে নাই। কারণ সমঝোতা বলেন আর সংলাপই বলেন আগে তার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। এখন কি সেই পরিবেশ আছে?’

তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি বিএনপিকে রাজনীতি করতে হলে আগে জামায়াতকে ছাড়তে হবে। সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। তারপর জনগণ চাইলে সংলাপ-সমঝোতা হতে পারে। কারণ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল। সব সময়ই শান্তি এবং গনতন্ত্রের পক্ষে।’

লেলিন বলেন, ‘আমাদের বিদেশি বন্ধুরা আগে সংলাপ-সমঝোতা নিয়ে কথা বললেও এখন কিন্তু তারা অনুধাবন করতে পেরেছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন, সংলাপ করতে হলে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। তারপর অন্যকিছু।’

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রত্যেকটি সমস্যার একটি সমাধান আছে। আমরাও তাই চাইছি। আর বর্তমান সমস্যার সমাধান করতে হলে সংলাপ-সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই। এটি আন্তর্জাতিক বিশ্বও চাইছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আলোচনা হলে তো ছাড় দিতেই হয়। ছাড় না দিলে তো আলোচনা ফলপ্রসূ হয় না। দুই পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে। অনঢ় অবস্থান কোনো সমাধান দেয় না।’

সমঝোতার বিষয়ে সরকার সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আলোচনা তো হতেই হবে। তবে আলোচনা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।’



মন্তব্য চালু নেই