দুই ডজন শিবির নেতা ছাত্রলীগের কমিটিতে
ছাত্রশিবির বা ছাত্রদল কী নেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের কমিটিতে! সুপার ইউনিট খ্যাত ছাত্রলীগের এ কমিটিতে এমনও অনেক নেতা আছে যারা একই সঙ্গে ছাত্রদল বা শিবিরেও পদ পাওয়া নেতা।
কেন এমন অবস্থা! উত্তর খুঁজতে গেলে সামনে আসছে- দল ভারি করার প্রতিযোগিতার কথা, এলাকা প্রীতি আর ‘মাই ম্যান’ রাজনীতির চর্চা।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল ছাত্রলীগের কমিটিতে প্রায় দুই ডজন শিবির নেতা রয়েছে। এছাড়া ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন সক্রিয় কর্মীও কমিটিতে স্থান করে নিয়েছে। এ নিয়ে কমিটির বর্তমান নেতাদের অনেকেই প্রকাশ্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া শুরু করেছে।
সম্প্রতি জবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক পদধারী নেতা মাহিন আজাদের কয়েকটি ছবি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। ছবিতে মাহিনকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক ওমর ফারুক কাওসারের সাথে ছাত্রদলের শোডাউনে দেখা যাচ্ছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি এফএম শরিফুল ইসলামের সঙ্গেও তার ছবি রয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৩০ এপ্রিল একটি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদীকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করলে কর্মীরা তাকে বেধরক পেটায়। গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়, মেহেদী ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী। সে মূলত শিবিরের সক্রিয় কর্মী। সেই সাথে একই অভিযোগে রিসাতকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ দু’জন ‘মুখোশধারী’ ছাত্রলীগ নেতা, মূলত সাধারণ সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলামের আশীর্বাদ পুষ্ট বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জুনায়েদকে শিবির আখ্যায়িত করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে কমিটির আরেক সহ-সভাপতি হিমেলুর রহমান হিমেল। জুনায়েদ শরিফুল ইসলামের বন্ধু।
জবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন ওরফে গুডি জামাল এবং কামরুলের বিরুদ্ধে শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। সহ-সভাপতি সাবের মাহামুদ রিফাত, লুৎফর রহমানের নামে ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া সম্রাট, সোহেল রানা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পাশাপাশি ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছে।
জবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান জুয়েল তার ফেসবুকে কয়েকটি ছবি আপলোড করে স্ট্যাটাসে লিখেছে, ‘সাধু সাবধান…………..!জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮/১০ জন ছাত্রদলের কর্মী নিয়ে,যে ব্যক্তি গ্রুপ নেতা সেজেজেন,তাদের কে বলছি………….রাজনীতির ফায়দা লুটতে ছাত্রদল থেকে, ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের কাছে ধরনা দিয়েছিস। আমার কাছে ও এসেছিলি,ছাত্রদল করো যেনে,লাথি মেরে তখনি বের করে দিয়েছি। এখনো যারা সেই ছাত্রদলের ৮/১০ জন নিয়ে নোংরা রাজনীতির খেলায় লিপ্ত, তাদের কে বলছি,ছাত্রদল নিয়ে ছাত্রলীগের সন্মান নষ্ট করার অপচেষ্টা চালালে পালানোর পথ খুজে পাবিনা। যেখানেই অনুপ্রবেশকারী, সেখানেই গনধোলাই দিবো……..।’
এ ব্যাপারে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি এফএম শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মাহিন জবি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নয়।’
মাহিনের ছাত্রলীগের পদ উল্লেখ করে পোস্টার ছাপানোর ব্যাপারটি জানানো হলে তিনি বলেন, ‘সে যদি ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে এরকম করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তার পাশে বসে থাকা ছবিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কে, কখন, কোন সময় আমার পাশে আসছে সেটাতো আমি খেয়াল করি না।’ বাংলামেইল
মন্তব্য চালু নেই