দিনাজপুর সংবাদ (২৯/৫/১৪)
মোঃ মাহমুদুল হক মানিক, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
## বিরামপুরে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস উদযাপন ##
“আসুন নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করি” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিরামপুর উপজেলা সদরে বুধবার নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস-২০১৪ উদযাপিত হয়েছে।
বে-সরকারি মানব উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, বিরামপুর এডিপি’র স্বাস্থ্য প্রকল্পের আয়োজনে বেলা ১২টায় এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয়ে পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ওয়ার্ল্ড ভিশনের বিভিন্ন প্রজেক্টের ফ্যাসিলিটেটর, সিবিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে পৌরসভা সার্ভিস সেন্টারে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ার্ল্ড ভিশনের এডিপি ম্যানেজার লিটন মন্ডলের সভাপতিত্বে ও প্রজেক্ট ম্যানেজার টমাস লিংকন অধিকারীর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স-এর মেডিসিন কনসালটেন্ট ডাঃ ওয়াহেদুল হক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডেভেলপ দ্যা ভিলেজ (ডিভি) নির্বাহী পরিচালক সাংবাদিক মোরশেদ মানিক ও ব্র্যাকের পুষ্টি বিষয়ক কর্মকর্তা রেজাউল করিম।
## বিরামপুর কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কয়েন ##
পাঁচ, দশ, পঁচিশ, পঞ্চাশ পয়সার মুদ্রা এবং এক ও পাঁচ টাকার কয়েন এখনও আইনত চালু থাকলেও বিরামপুর হাট-বাজার বা কেনাকাটার লেনদেনে কোথাও তার প্রচলন নেই। এমনকি ভিক্ষুকও খুচরা পয়সা বা এক টাকার কয়েনে ভিক্ষা নিতে চায় না। তাহলে এতো খুচরা পয়সা বা কয়েন- আগে যা ব্যাপক হারে চালু ছিল- তা এখন গেল কোথায়? তার কোন হদিস নেই। সম্প্রতি বিরামপুর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করেও পাঁচ বা দশ পয়সার মুদ্রা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি পঁচিশ বা পঞ্চাশ পয়সার মুদ্রা মিললেও সংখ্যায় তা খুবই কম। এই মুদ্রাগুলোর প্রচলন না থাকার একমাত্র কারণ-কেনাকাটার কোন পর্যায়েই খুচরা পয়সার প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি এক টাকার কয়েন দিয়েও এখন কিছু কমদামি চকলেট ছাড়া আর কিছুই কিনতে পাওয়া যায়না। একটি খিলিপান বা ভাল চকলেট এমনকি একটি লিচু কিনতেই এখন প্রয়োজন হয় ২ টাকা। সেজন্য ১ টাকার কয়েনের অভাবে পান দোকানিরা বিনিময়ে চকলেট দিয়ে লেনদেন সারেন।
বিরামপুর বাজারে চালু মুদ্রাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলন বেশি রয়েছে ২ টাকা, ৫ টাকা আর ১০ টাকার কাগজের নোট। বাজারে পাঁচ টাকার কয়েনেরও কোন খোঁজ পাওয়া যায় না। নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের জিজ্ঞেস করে জানা গেছে, তারা পাঁচ বা ১০ পয়সার মুদ্রা কখনও দেখেনি। শুধু বইয়ে পড়েছে বা ছবি দেখেছে। কেননা তাদের কেনাকাটায় এসব মুদ্রার কোন প্রয়োজনই পড়ে না। অল্প সংখ্যক শিশু-কিশোর ২৫ এবং ৫০ পয়সার মুদ্রা চিনলেও সেগুলো কেনাকাটায় তারা কোন কাজে লাগাতে পারে না। এদিকে শিশু-কিশোরদের ২৫ পয়সা ও ৫০ পয়সার মুদ্রা দিলে তারা তা নিতেও চায়না, পকেটে রাখলে তা ভারি হবে এবং হাটাচলা করতে শব্দ হবে বলে তারা তা পছন্দ করে না বলে অনেক অভিভাবক জানিয়েছেন। এদিকে, ভিক্ষুকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের খুচরা পয়সা না নেয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে সারা দিনে জমানো ভিক্ষার খুচরা পয়সাগুলো দিয়ে কোথাও কোন কিছু কিনতে গেলে দোকানদাররা তা নিতে চান না। ফলে ভিক্ষায় অর্জিত খুচরা পয়সাগুলো টাকায় রূপান্তর করতে গিয়ে বা কেনাকাটা করতে তাদের চরম বিপাকে পড়তে হয়।
## রাস্তায় ধান ও খড় শুকানোর হিড়িক ##
দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন পাকা সড়ক হাইওয়ে সড়কে ধান ও খড় শুকানোর হিড়িক এবং চলছে ইরি বোরো ধান কাটা মৌসুম। বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মোটর সাইকেল, রিকশা ভ্যান, ইজি বাইক চালকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। উপজেলার বিভিন্ন পাকা সড়কে ধান মাড়াইয়ের কাজও চলছে। যানবাহন চলাচলের অসুবিধা করে পাকা সড়কে ধান মাড়াই, খড় ও ভুট্টা কাজ করা হচ্ছে। এসব কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও অনেকেই মহাসড়কে ধান, খড় ও ভুট্টা শুকাচ্ছেন। পাকা সড়কে ধান শুকানো প্রসঙ্গে এলাকাবাসীরা জানায়, বোরো ধানের মৌসুমে বাড়তি ঝামেলা এড়াতে পাকা সড়কের পার্শ্ববর্তী গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান মাড়াই, ঝাড়াই ও শুকানোর জন্য নিয়ে আসেন। তারা জানায়, পাকা সড়কের উপর ধান শুকালে সহজে ধানে ময়লা অথবা আবর্জনা পড়ে না। অনেকের বাড়িতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় তারা এ পদ্ধতি অবলম্বন করেন বলে জানা গেছে। জনৈক কৃষক জানান, বোরো ধান দ্রুত কাটা-মাড়াই করে শুকাতে হয় এবং গোলায় তুলতে হয় বলে তারা জমির পাশের পাকা রাস্তা পাওয়ায় তারা এ কাজটি করেন। সড়ক ও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে-গঞ্জে পাকা সড়কে একই চিত্র চোখে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আগে বহুবার আমরা তাদেরকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। কিন্ত মানুষ সচেতন না হওয়ায় দিন দিন এর ব্যাপকতা বাড়ছে। তবে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য এদের বিরুদ্ধে যে কোনো সময় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
## বিরামপুরে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ##
সারা দেশে আওয়ামী সরকারের অব্যাহত গুম, খুন, অপহরণ, ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এবং জামায়াতের শীর্ষনেতৃবৃন্দকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বুধবার বাংলাদেশ জামায়াতে বিরামপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও বিরামপুর উপজেলা আমীর অধ্যাপক মুহাদ্দিস এনামুল হক, উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আমজাদ হোসাইন, সেক্রেটারী অধ্যাপক মকছেদ আলী, বায়তুলমাল সেক্রেটারী হাফিজুল ইসলাম, পৌর আমীর অধ্যাপক এ, এস, এম ফারুক, সেক্রেটারী সাখাওয়াত হোসেন, তোতা মিয়া দেওয়ান, অধ্যাপক আবু আইয়ুব আলবেরুনী, অধ্যাপক মামুনুর রশীদ, শিবিরের জেলা সেক্রেটারী মীর শহীদ হোসেন, অর্থ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম ও মোফাখখারুল ইসলাম বাবুল প্রমূখ। প্রেসক্লাব মোড় থেকে শুরু হয়ে কৃষি ব্যাংক মোড়ে সমাবেশের মাধ্যমে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।
মন্তব্য চালু নেই