২৭ আগষ্ট

দিনাজপুরে সংবাদপত্র কালো দিবস আজ

২৭ আগস্ট। দিনাজপুর সংবাদপত্র কালো দিবস । পুলিশের হেফাজতে ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার পরবর্তী ঘটনায় ১৯৯৫ সালের এই দিনে একদল দুস্কৃতিকারী দিনাজপুর প্রেসক্লাব ভবনসহ স্থানীয় ৫টি দৈনিক পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ করে। দিনাজপুরের সাংবাদিক সমাজ এ দিনটিকে কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

পুলিশের হেফাজতে ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়। ইয়াসমিন হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ জনতার মিছিলে ২৭ আগষ্ট পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। গুলিতে প্রাণ হারায় সাম,কাদের ও সিরাজ সহ নাম অজানা ৭ জন প্রতিবাদকারী জনতা। এই উত্তাল দিনে আন্দোলনকে স্তব্দ করতে গনেশতলা রোডের সংবাদপত্র অফিসসহ দিনাজপুর প্রেসক্লাব, সরকারী অফিস ও পুলিশ ফাঁড়িতে ভাংচুর ও আগুন দেয় একদল দুষ্কৃতিকারী।

এরপরও আন্দোলন থেমে থাকেনি। জনতার আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যার্থ হলে শহরে বিডিআর নামানো হয় এবং ১৪৪ ধারা জারী করা হয়। এরপরও আন্দোলন না থামলে তৎকালীন সরকার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করে প্রশাসনে পরিবর্তন আনা হয়। গ্রেফতার করা হয় ধর্ষকসহ অভিযুক্তদের। এরপরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। এরপর থেকে দিনাজপুর ট্রাজেডী দিবস এবং সাংবাদিক সমাজ ২৭ আগস্টকে কালো দিবস হিসাবে পালন করে আসছে।

ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি তিনটি আদালতে ১২৩ দিন বিচার কাজ শেষে ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মতিন মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলার রায়ে আসামি পুলিশের এএসআই মঈনুল, কনস্টেবল আব্দুস সাত্তার ও পুলিশের পিকআপ ভ্যান চালক অমৃত লাল বর্মণের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ বিধান ‘৯৫-এর ৬ (৪) ধারায় ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুর আদেশ দেন। আলামত নষ্ট, সত্য গোপন ও অসহযোগিতার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এএসআই মঈনুলকে আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়।

অপরদিকে, দন্ডবিধির ২০১/৩৪ ধারায় আলামত নষ্ট, সত্য গোপন, অসহযোগিতার অভিযোগে অভিযুক্ত আসামি দিনাজপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার আবদুল মোতালেব, ডা. মহসীন, এসআই মাহতাব, এসআই স্বপন চক্রবর্তী, এএসআই মতিয়ার, এসআই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন।

চাঞ্চল্যকর ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয় আট বছর পর, ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। মামলার অন্যতম আসামী এএসআই মইনুল হক ও কনস্টেবল আব্দুস সাত্তারকে রংপুর জেলা কারাগারের অভ্যন্তরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ২০০৪-এর ১ সেপ্টেম্বর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয় । অপর আসামি পিকআপ ভ্যানচালক অমৃত লাল বর্মণ কে রংপুর জেলা কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করা হয় একই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ।



মন্তব্য চালু নেই