দিনাজপুরে কলেজ ছাত্রী রুমানা হত্যার অভিযোগে প্রেমিক গ্রেফতার
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে আলোচিত কলেজ ছাত্রী রুমানা হত্যার জট খুলেছে। এ নৃশংস হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে রুমানার দু’প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তবে একজনকে ছেড়ে দেয়া হলেও অন্যজনকে প্রেরণ করা হয়েছে জেল-হাজতে।
এ নিয়ে সোমবার রাতে বীরগঞ্জ থানা পুলিশ প্রেস ব্রিফিং করেছে। পুলিশ সাংবাদিকদের জানিয়েছে, এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
১৬ জুলাই দুপুরে ঈদের কাপড় কিনতে বের হয়ে আর ঘরে ফিরেনি কলেজ ছাত্রী রুমানা আক্তার মৌ (১৮)। ওইদিন রাত ৮টার দিকে রুমানাকে নৃশংসভাবে হত্যার পর তার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয় দৃর্বৃত্তরা। বীরগঞ্জ উপজেলার বড় শীতলাই গ্রামের আব্দুল মালেকের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে রুমানা আক্তার মৌ নওগাঁ নাপিতপাড়া নামক স্থানে এ নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হয়।
বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন সোমবার রাতে লিখিত প্রেস ব্রিফিং-এ জানান, ওই রাতেই নিহতের পিতা আব্দুল মালেক বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ১৪ । মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে এসআই গাবুর আলী সরদার দায়িত্বভার গ্রহন করেন। চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা বিধায় দক্ষ তদন্তকারী কর্মকর্তা গাবুর আলী সরদার, ওসি প্রশাসন মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন এবং ওসি তদন্ত বেলাল হোসেনের পরামর্শ সাপেক্ষে বিভিন্ন সোর্স মোতয়েন সহ নির্ভরযোগ্য তথ্যমতে, নানাবিধ প্রযুক্তি প্রয়োগ সর্বোপরি র্যাপিড এ্যকশান ব্যাটেলিয়ান র্যাব-এর সহায়তায় নিহত রুমানার বিবাহিত দুই প্রেমিক চাকাই গ্রামের সহিদুলের পূত্র মাহফুজ আলম ওরফে মানিক এবং বড় শীতলাই গ্রামের মৃত তহিরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মাহামুদুর রহমান ওরফে বাবু কে গ্রেফতার করা হয়। পরে মাহামুদুর রহমান বাবুকে ছেড়ে দেয়া হলেও মাহফুজ আলম মানিককে আদালতে সর্পদ করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের ব্রিফিং কালে অফিসার ইনচার্জ জানান, কারাগারে আটক মানিক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ও বিজ্ঞ আদালতে নিজের জবানবান্দিতে রুমানাকে নতুন তৈরী করা দেশীও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ইট দ্বরা মাথায় আঘাত ও নিহতের শরীরে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগে মৃত্যু নিশ্চিত করার কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ প্রেস ব্রিফিং-এ আরও জানায়, বিয়ের পুর্ব তথা ২০১১ ইং সন থেকে রুমানার সাথে মানিকের প্রেমের সম্পর্ক হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার মূহুর্ত পযর্ন্ত অব্যাহত ছিল। তাদের প্রেমের সম্পর্ক অপেন টু অল,সবার জানা ও সকলের মুখে মুখে।
অপরদিকে, রুমানা আক্তার মৌ তার প্রতিবেশী চৌধুরী পরিবারের ধনাঢ্য ব্যাক্তি মাহমুদুর রহমান বাবুর সাথে বেশ কিছুদিন থেকে চুটিয়ে প্রেম করে আসছিল। এমন কি রুমানার সাথে বাবু’র দৈহিক সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রী’র মতই চলত বলে অনেকর অভিযোগ। এ কারণে দু’পো বিবাহিত প্রেমিক পরিবারে স্বামী-স্ত্রী’র মাঝে অশান্তির দানা বাধে, কলহ-বিবাদ, ঝগড়া-ঝাটি লেগেই আছে। অবৈধ প্রেম ও দাম্পত্য কলহে এক সন্তানের জননী বাবুর স্ত্রী বর্তমানে তার (বাবু) শ্বশুরালয় একই গ্রামে বাবুল কাপুড়িয়ার বাড়ীতে প্রায় ৬মাস যাবত অবস্থান করছে।
গ্রামবাসী ও সমাজের সচেতন অংশ এমন কি মানিকের স্ত্রীসহ নিকটাত্বীয়রা মন্তব্য করেন, পুলিশ ও র্যাব অনেকটা নিশ্চিত হয়েই দু’জনকে আটক করে কিন্তু বাবুকে ছেড়ে দেয়ার পিছনে রহস্য লুকায়িত রয়েছে। তাদের দাবী মানিক একজন মানসিক রোগী দির্ঘদিন থেকে তার চিকিৎসা চলছে। এ হত্যাকান্ডের পেছনে বাবু’র হাত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বাবু রুমানার পিতা মামলার বাদী মালেককে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে কি না তাও তদন্ত প্রয়োজন বলে দাবী করছে এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, রুমানা আক্তার মৌ ঠাকুরগাও হলদিবাড়ি ডিগ্রী কলেজজের ২য় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
মন্তব্য চালু নেই