দিনমজুরি করে এ-প্লাস পেয়েছে আল আমিন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : বাবার ক্ষুদ্র ব্যবসার টাকায় ৫ জনের সংসার টেনেটুনে চলছিল। মেধাবী আল আমিনের পড়াশুনা বন্ধ হবার উপক্রম। এ অবস্থায় নিজের খরচ চালাতে সমস্ত দ্বিধা ঝেড়ে দিনমজুরী করেছে সে । এভাবেই লড়াই করে পড়াগুনা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত সবাইকে চমকে দিয়ে চলতি এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। তার ফলাফলে গর্বিত কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন। তিনি জানান, আল আমিন সত্যিই একজন প্রতিভাবান ছাত্র। চরম দারিদ্রতার মধ্যে সে চেষ্টা আর পরিশ্রম করে এই সাফল্য পেয়েছে। প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে সে আরো অনেক দুর যেতে পারবে।

সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ভুবনেশ্বর গ্রামের খোকা মিয়ার পূত্র আল আমিন হক। ৫ সন্তানের মধ্যে সে ছিল মেধাবী। কিন্তু বাবার সামান্য ব্যবসা। আয় কম। ফলে গ্রামবাসীর চাঁদায় ফরম ফিলাপ করে তাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। সেই গ্রামবাসী আজ আল আমিনের রেজাল্ট শুনে ভীষণ খুশি। তারা দলবেধে আল আমিনের বাসায় এসেছে তাকে আশির্বাদ জানাতে।

আল আমিনের বাবা খোকা মিয়া জানান, বাড়ী ভিটাসহ ৫ শতক জমি ছাড়া তার কিছুই নেই। এক হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শাকের ব্যবসা করেন কাঁঠালবাড়ী বাজারে। দৈনিক আয় হয় এক থেকে দেড়শ টাকা। এই নিয়েই টানাটানির সংসার। ছেলে আল আমিনের অদম্য ইচ্ছের কারণে এই ফলাফল হয়েছে। সে দিনে আলু, ধান, সবজির ক্ষেতে নিড়ানিসহ নানা কাজ ধরনের করেছে। উপার্জিত অর্থ দিয়ে টেষ্ট পেপারসহ পড়ালেখার নানান খরচ চালিয়ে নিয়েছে।

ছেলের ভাল ফলাফলে আবেগ আপ্লুত মা লাভলী বেগম জানান, ‘শাক-আর ভর্তা ছাড়া ভাল খাবার জোটেনি ছেলের মুখে। অনেক সময় না খেয়ে স্কুলে যেত সে। একটা ভাল শার্ট ছিলনা। কখনও মেটাতে পারিনি ছেলের কোন আবদার’। নিজের চেষ্টা, বাবা-মায়ের উৎসাহ আর স্যারদের সহায়তা ছাড়া এই ফলাফল সম্ভব হতো না বলে মনে করেন আল-আমিন।



মন্তব্য চালু নেই