থমকে গেছে ঐক্যের ডাক : তারেক নিয়ে ব্যস্ত বিএনপি
উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস রুখতে বিএনপির জাতীয় ঐক্য গড়ার যে উদ্যোগ নিয়েছিল তা হঠাৎ থমকে গেছে। দলটি এখন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অর্থ পাচার মামলায় সাজাপ্রাপ্তি নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ব্যস্ত রয়েছে। এ ইস্যুতে শনিবার সারাদেশে প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি পালন করবে দলটি। যদিও গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন ডেকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস রুখতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। তবে এই বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পায়নি দলটি। এ অবস্থায় এককভাবেই জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার পক্ষে মত দিয়েছিল ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। দলের নেতাদের ভাষ্য, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ইস্যু আড়াল করতেই বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এই সাজানো মামলার নাটক করা হয়েছে।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দল গোছানোর পাশাপাশি বর্তমান জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত ছিল বিএনপি। তবে গত বৃহস্পতিবার অর্থ পাচার মামলায় তারেক রহমানের সাজা হওয়ার পর থেকেই দলের কর্মসূচিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। কর্মসূচিগুলোর মধ্যে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে বিএনপিসহ দলের অঙ্গ সংগঠনগুলোর বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিলেই জোর দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং জাতীয় ঐক্য নিয়ে গত দুইদিন ধরে বিএনপি ভাবছে না সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানায়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমার মতে, জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাস, নিজেদের ব্যর্থতা ও বিএনপির জাতীয় ইস্যুকে জনগণের দৃষ্টি থেকে আড়াল করতেই তারেক রহমানের রিরুদ্ধে এই রায় দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, জাতীয় ঐক্যে গড়তে ইতোমধ্যে দেশে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এমনকি দলের অঙ্গ-সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনার এবং আলোচনা সভায় অংশ নিয়েও জঙ্গিবাদ রুখতে সরকারকে বারবার আহবান জানিয়েছেন দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তবে এসব অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাতীয় ঐক্যে তো অবশ্যই, এর বাইরে নিজেদের ব্যর্থতা ও জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাস রুখতে ব্যর্থ এবং দেশে-বিদেশ থেকে সরকারের পদত্যাগের জন্য যে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে সেটা থেকে জনগণের দৃষ্টি আড়াল করতেই বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এই রায়।
গত বৃহস্পতিবার অর্থ পাচার মামলায় তারেক রহমানকে ৭ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে। মুদ্রাপাচার মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আপিলের শুনানি করে ২০ জুলাই বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি
মন্তব্য চালু নেই