ত্যাগের মহিমায় পালিত হলো বউ দিবস

‘আমরা বউ পাগল নই-বউ প্রেমী, সুস্থ ও অসুস্থ বউকে ছেড়ে না যাই’ এমন শ্লোগানকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরশিশু পার্কে পালিত হলো বউ দিবস। রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় আলোচনা, মিষ্টিমুখ এবং দু’জন ত্যাগী সংসারী বউসেবীর জীবন কাহিনীর উপর আলোকপাতের মধ্যে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বউসেবী দু’জন হলেন কুমারখালী শহরের এলঙ্গীপাড়ার নিখিল কুমার কুণ্ডু ও খোকসার হেলালপুর গ্রামের আশরাফ আলী মৃধা।

নিখিল কুমার কুণ্ডু দীর্ঘ পনের বছর ধরে স্ত্রী মিলি রানী কুণ্ডুকে শুধু পরিচর্যায় করছেন না, যাবতীয় কাজও করছেন সংসারের। বিয়ের দু’বছর পর স্ত্রী মিলি রানী সন্তান সম্ভাব্য হন। সন্তান হতে যেয়ে মিলি রানী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হয়ে যান। ভারতের বিভিন্ন জায়গা এবং ঢাকার স্কয়ার, অ্যাপোলো হাসপাতালসহ অনেক জায়গায় চিকিৎসা করানোর পরেও তিনি সুস্থ হননি।

চিকিৎসক জানান, তার স্ত্রীর ব্রেনের দুটি পার্ট বিকল। একটি অনুভূতি ও বুদ্ধিপরিচালনা সবই অসাড়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত স্ত্রী মিলি রানীর খাওয়া দাওয়া, গোসল, বাথরুম সব নিজে হাতে করছেন নিখিল কুমার কুণ্ডু। এখন পর্যন্ত কোন সন্তান নেননি। কেননা সন্তান নিলে তার স্ত্রীকে বাঁচানো সম্ভব নয়।

আরেকজন হলেন আশরাফুল হক মৃধা। খোকসার হেলালপুরে বাড়ি। ১৯৯১ সালে বিয়ের চার বছর পর প্রথম সন্তান আকাশের জন্ম হবার পর থেকে স্ত্রী চম্পা রানী অসুস্থ হয়ে যান। সেই থেকে এখন পর্যন্ত অসুস্থ তিনি।

বউ দিবসকে সামনে রেখে মজার আড্ডার পরিবেশ যদিও কিছুক্ষণ অন্যরকম অনুভূত হয়। তবুও উপস্থিত সবাই এ দিবসকে সমর্থন করেন এবং আগামী বছরে বৃহৎ কলেবরে পালনের পরামর্শ ও মতামত দেন।

অনুষ্ঠানে কবি, নাট্যকার লিটন আব্বাসের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সাংবাদিক দীপু মালিক। সংসার জীবনে বছরে অন্তত একটা দিন বউদের জন্য রেখে তাদের হাসিখুশির যথাযথ মূল্যায়ন, মর্যাদার উপর গুরুত্বারোপ করে বক্তৃতা করেন ইউজিআইসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে এম এমদাদুল কবির নিটোল, তার পত্নী সুমি খন্দকার, ভোরের কাগজ প্রতিনিধি হাবীব চৌহান, মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন, সাংবাদিক আ: রাজ্জাক। উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক শরীফুল ইসলাম, সাংবাদিক এম এ ওজাব, প্রভাষক রাসেল মোশাররফ চৌধুরী, মাসিক কৃষিকণ্ট পত্রিকার সম্পাদক মাহবুবুর রহমান উল্লাস, জে এ রতন, সাংবাদিক নাছির উদ্দিন প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই