পাউবোয় আশার আলো
তিস্তায় হঠাৎ বাড়ছে পানি
তিস্তার সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকায় আকস্মিকভাবে পানি প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে। চারশ কিউসেকে নেমে আসা প্রবাহ এক লাফে ছাড়িয়ে গেছে দুই হাজার কিউসেকে। গত ২৪ ঘণ্টায় যে পানি উজান থেকে এসেছে তা দিয়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, উজান থেকে ধীরে ধীরে আরো পানি আসছে। আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি।
গত ১৯ মার্চ তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার ওপর আস্থা রাখার কথা জানিয়েছিলেন। পরে ভারতে গিয়ে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে সায় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দেন।
এ ঘটনার পরে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে হঠাৎ করেই তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকায় বাড়তে শুরু করে পানি প্রবাহ।
পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নিবার্হী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তিস্তায় হঠাৎ করেই পানি প্রবাহ বেড়ে গেছে। শুক্রবার সকালে এ প্রবাহ দুই হাজার কিউসেক ছাড়িয়ে গেছে। এতে আমরা আশার আলো দেখছি।
প্রকৌশলী মাহবুবুর আরো বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে তিস্তায় উজানে পানি প্রবাহ কিছুই ছিল না। উজান থেকে যে টুকু পানি এসেছে তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট আটকিয়ে সেচখালে সরবরাহ করা হয়। ওই পানিতে ২১ জানুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত মাত্র নয়শ’ হেক্টর বোরো জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছিল। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় যে পানি পাওয়া গেছে তা দিয়ে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব।
পাউবো সূত্রমতে, গত এক মাসে সর্বসাকুল্যে তিস্তাতে পানি পাওয়া যায় খুবই কম। পহেলা ফেব্রুয়ারি চারশ’ ৮৪ কিউসেক, ১০ ফেব্রুয়ারি সাতশ’ ৭৫ কিউসেক, ২০ ফেব্রুয়ারি ১১শ ৫৫ কিউসেক আর সর্বশেষ শুক্রবার ৬ মার্চ পানি বেড়ে গিয়ে ব্যারেজের মুল গেটে প্রবাহ দেখা গেছে দুই হাজার ছয়শ কিউসেক।
তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা জানায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সফরের আগ পর্যন্ত তিস্তায় পানি কমতে কমতে চারশ কিউসেকে নেমেছিল। চোয়ানো পানির সরু নালায় পরিনত হয়েছিল তিস্তা। ফলে যতদূর চোখ যায় শুধু ধূ-ধূ বালুচর। নদীতে পানির অভাবে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকার কৃষকরা সেচ থেকে বঞ্চিত হয়। নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
চরের মানুষজন জানায়, নদীতে কিছুটা পানি বেড়ে যাওয়ায় তাদের উৎপাদিত জমির ফসলসহ নিজেরাও নৌকা চালিয়ে নদী পারাপার করছেন।
মন্তব্য চালু নেই