‘তালাকের পরও স্বামীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করেছি’

“খুব সমস্যায় পড়ে ম্যাসেজ দিলাম। ২০১০ সালে সহপাঠীর সাথে আমার প্রেম হয়, তখন আমি দশম শ্রেনীর ছাত্রী। সেসময় সময়গুলো বেশ ভালোই কাটত। সম্পর্কের প্রথম থেকেই আমার প্রেমিক সন্দেহ করত। আমদের মাঝে সবকিছুই ঘটেছে। ও আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে কিন্তু আমাকে অনেক অনেক বার আঘাত করেছে। বর্তমানে ওকে ভালোবাসার কোন কারণ সত্যিই খুঁজে পাইনা। সবসময় ও আমাকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। যাই হোক, তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ওকে বিয়ে করবো, তাহলে হয়ত আমাকে নিয়ে ওর আর সন্দেহ থাকবেনা।

২০১৪ সালে ২২শে আগস্ট আমরা বিয়ে করি। কিন্তু ও ভালো হওয়ার বদলে আরো পালটে গেল। আরো বেশি সন্দেহ করা শুরু করলো। বিয়ের সময় আমরা দুজন দুজনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে আমাদের বিয়ের কথা কাউকেই জানাবো না। কিন্তু ২ মাস পরই ও আমার বাসায় জানিয়ে দিয়েছিলো। দুজনের পরিবারের কেউই রাজী ছিলোনা শেষে তাই আমি বাসা থেকে পালিয়ে গেলাম। ৬ দিন ওর সাথে ছিলাম। তখন আমার পরিবার কোনরকমে রাজী হল, কিন্তু ওর পরিবার কিছুতেই রাজী হলনা। আমাকে আর আমার পরিবারকে খুব অপমান করে।

২০১৫ সালের জানুয়ারীতে আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেল। আমার প্রেমিকই ডিভোর্স দিয়েছে। এরপর ৪ দিন পর ও আবার আমার জীবনে ফিরে আসে এবং আমি ওকে গ্রহণ করি। উল্লেখ্য যে বিয়ের আগে ও পরে ওর সাথে আমার শারীরিক সম্পর্ক ছিলো। একটা সন্তানও নষ্ট করেছি। এমন আরো অনেক কিছু। কিন্তু এতকিছুর পরও একটুও মানসিক শান্তি আমি পাইনি। বিশ্বাস আর ভালোবাসার অনেক অভাব আছে আমাদের এই সম্পর্কে। ও খুব খারাপ ভাষায় গালাগাল করে।

এখন আমি বিবিএস পড়ছি, ঠিকভাবে পড়াশোনাও করতে পারছিনা। ও আমাকে কোথাও যেতে দেয়না। বন্ধু, পরিবার, আত্মীয় সবার সাথে আমার সম্পর্ক নষ্ট করে দিয়েছে ও। আমি আমার পরিবারের খুব আদরের ছোট মেয়ে। এত অপরাধের পরও মা বাবা আমাকে আগলে রেখেছে এখনও। আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। ওর পরিবারের সাথে আমার পরিবারের তুলনা করলে আমার পরিবার ১০ ধাপ এগিয়ে থাকবে কিন্তু ওর পরিবার একদমই রাজী না। ওকে বিয়ের কথা বললে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলে। পরিবার নাকি কখনোই মানবেনা। ও পরিবারের বড় ছেলে। আমার সাথে পড়াশোনা করছে। আরো দুই বোন, এক ভাই আছে ওর। আমি এখন কী করবো? আমি ওকে অনেক ভালোবাসি কিন্তু আমাদের সম্পর্কে কোন শান্তি, সম্মানবোধ কিছুই নাই। কী করা উচিত আমার?”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানিয়েছেন নিজের সমস্যার কথা।

পরামর্শ:

আপু, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করছি এই সম্পর্ক আপনার আর চালিয়ে যাওয়া উচিত হবে না। এবং নিজের মনের কোথাও না কোথাও আপনিও জানেন সেটা। প্রথমত , ছেলেটিকে বিয়ে করেই আপনি ভুলটা করেছিলেন। সন্দেহ বাতিক যাদের আছে, বিয়েতে তাঁদের এই সমস্যা যায় না। দ্বিতীয় ভুলটা করেছিলেন ডিভোর্সের পরও তাঁর সাথে সম্পর্ক রেখে। যে মানুষ পরিবারের চাপে আপনাকে ডিভোর্স দিয়ে দিতে পারে, তাঁর জন্য কীসের ভালোবাসা। এটা তখনও আপনার বুঝে নেয়া উচিত ছিল যে এই ছেলেটি কখনো আপনার জন্য লড়াই করবে না। এবং দেখুন, সে করছেও না। সে কাপুরুষ এবং সেরকমই আচরণ করছে সে।

দেখুন আপু, ইতিমধ্যেই মা বাবার মনে অনেক দুঃখ দিয়ে ফেলেছেন। আমার মনে হয় আর দেয়া উচিত হবে না। এই সম্পর্কে থাকলে কেবল কষ্টই বাড়বে আপনার। সাথে পিতা মাতার। তাঁদের সাথে আলোচনা করুন, তাঁরা যদি এই সম্পর্ক ত্যাগের পক্ষে মত দেন, তাহলে দ্রুত এটা থেকে বের হয়ে আসুন। সম্পর্কে তীব্র প্রেমের চাইতে শান্তি ও সম্মান অনেক বেশী জরুরী, নাহলে দাম্পত্য চালিয়ে নেয়া যায় না।



মন্তব্য চালু নেই