তার খাওয়া খরচই দৈনিক তিন লাখ টাকা !

বক্সিং পরিচিত তার আদিম বন্যতার জন্য। আর বিশ্বের সেরা বক্সার যেমন হিংস্র অ্যাথলিট, তেমনই ম্যারাথন দৌড়বীদের মতই সহনশীল এবং কৌশলী।

থেঁতলে যাওয়া নাক, ঘুঁষিতে অনবরত রক্তক্ষরণ ও মস্তিষ্কে প্রবল আঘাত সত্ত্বেও যতক্ষণ না প্রতিদ্বন্দ্বী হার মানছে, বক্সারদের লড়াই চলতেই থাকে। পূর্বসুরীদের সেই শিকারি পরম্পরাকেই আরও উন্নত করে তুলেছেন ফ্লয়েড মেদওয়েদার জুনিয়র। যিনি জল্লাদের মতো একের পর এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে ধরাশায়ী করেছেন। এক এক করে ৪৮জনকে। সেই তালিকায় নয়া সংজোযন ম্যানি প্যাকিয়াও।

কারও কাছে তিনি প্রেটি বয়, কারও কাছে মানি মেওয়েদার। আবার কারও কাছে মেওয়েদার ‘টি বি ই’ (দ্য বেস্ট এভার)। যার একটা রূপ আবার বান্ধবী, স্ত্রী-চার সন্তানকেও আতঙ্কিত করে তোলে। বর্তমান প্রজন্মের সেরা বক্সারকেও জেলে যেতে হয়েছিল।

২০১০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তার তিন সন্তানের মা জোসি হ্যারিসের বাড়িতে ঢুকে তাকে মেরে প্রায়ে আধমরা করে ফেলেছিলেন মেওয়েদার। মায়ের আর্তনাদ শুনে ছুটে আসা সন্তানদের বলেছিলেন, ‘হয় পুলিশ ডাকো, নয়তো ছুটে পালিয়ে যাও।’

ছেলে পরে পুলিশের কাছে বাবার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিল। যদিও সমস্ত বক্সারই প্রকৃতিগতভাবে নৃশংস নন। মোহাম্মদ আলির মতো ভদ্রলোক রিং-এর বাইরে খুব কমই দেখা যায়। তারও আগে ২০০৩-এর আগস্টে বান্ধবী হ্যারিসের দুই সঙ্গিনীর সঙ্গে দেখা ‘প্রেটি ম্যান’-এর। তাদের সঙ্গে ঝামেলার জেরে সেই রনদেহি মুর্তিতে আবির্ভাব ঘটেছিল মেওয়েদারের।

এই রকম আরও অনেক ঘটনার ক্ষেত্রে অবশ্য সাক্ষী পায়নি পুলিশ। সাক্ষীদের স্মৃতি বিভ্রম ঘটতো প্রায়ই। কারণটাও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি নিজেই। ‘আমি কৃষ্ণাঙ্গ, আমি ধনী, আমি স্পষ্টবাদী’- মন্তব্য মেওয়েদারের। অথ্যাৎ, সেই কারণেই তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। আর তিনি সসম্মানে মুক্তি পেয়ে যান।

আরের হিসেব ধরলে ২০১৪-র সবচেয়ে ধনী ক্রীড়াবিদ। আমেরিকার সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়ের তালিকায় টাইগার উডসের পরেই তার স্থান। পাকিয়াওয়ের সঙ্গে দ্বৈরথের জন্য যে কলম দিয়ে স্বাক্ষর করেছিলেন, তার মূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় তিন লক্ষ। বিশ্বে এমন কলম আছে মোট ১২৪টি।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, নামি উপস্থাপক অপরা উইনফ্রে এই কলম ব্যবহার করেন। ১৮ ক্যারট সোনা দিয়ে তৈরী। তার খাবারের জন্য দৈনিক খরচ হয় তিন লক্ষ টাকারও বেশি। পাকিয়াওয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পর তার সম্পদের পরিমান ৫৮৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৪০ কোটি টাকা।

এই দ্বৈরথ প্রমাণ করল, মেওয়েদার একজন ধুরন্ধর ব্যবসায়ীও। গত বছর যিনি প্রতিটি লড়াই থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন। এবার যে অংক পৌঁছে গিয়েছে ১৮ মিলিয়ন ডলারে। ম্যানি প্যাকিয়াও কাপুরুষ নন। তিনবার হেরে গেলেও, রিংয়ে তাকে দেখে মৃত মনে হলেও নন। ট্রেনার ফ্রেডি রোচের দাবি, ‘ম্যানি জানে, হারটাও খেলারই অঙ্গ।’

কতটা ধনী মেওয়েদার
* গ্রীসে তিনটি ব্যাক্তিগত দ্বীপ কিনতে পারেন।
* ৩০ হাজার কেজি সোনা কিনতে পারেন।
* ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্তত ৫০টি ম্যাচের টিভিস্বত্ত্ব কিনতে পারেন।
* বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ি ল্যাম্বারগিনি রোডস্টার কিনতে পারেন ৯৫টি।
* প্রতিদিন খাবারের জন্য খরচ করেন ৩,১৩,৫৩১ টাকা।
* সাক্ষর করেন ১৮ ক্যারেট সোনার কলম দিয়ে। সেটারও মূল্য প্রায় তিন লক্ষ টাকা। বিশ্বে এমন এমন কলম আছে মাত্র ১২৪টি।



মন্তব্য চালু নেই