তারেকের জন্মদিনে বিএনপির নানা আয়োজন
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫০তম জন্মদিন বৃহস্পতিবার। তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা
সভা, কোরআন খানি, মিলাদ মাহফিল, কেক কাটা ও গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণ।
বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিটে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ৫০ পাউন্ড কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হয়। খালেদা জিয়াসহ দলের সিনিয়র ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান। ১৯৬৫ সালের এ দিন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম পিনু। তারেক রহমান ঢাকার শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
১৯৯৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব হোসেনের বড় মেয়ে ডা. জোবাইদার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারেক।
৫০তম জন্মদিনের এই মুহূর্তে তারেক রহমান বাংলাদেশে নেই। এক-এগারোর সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেই ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গ্রেপ্তারের পর ১৩ দিন রিমান্ডে নেয়ার কারণে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন তারেক রহমান। তাকে টানা ৫৪৪ দিন অর্থাৎ এক বছর দুই মাস ২৪ দিন কারাগারে থাকতে হয়।
২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন। লন্ডনে থাকা অবস্থায়ই তারেক রহমান সর্বসম্মতিক্রমে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এর আগে তারেক ১৯৯১ সালে বগুড়ার গাবতলী থানা বিএনপির সদস্য পদ লাভের মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক প্রবেশ করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে জেলা বিএনপির সদস্য হন। ওই সময় থেকেই তিনি সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন। ২০০২ সালের ২২ জুন তিনি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হন। তিনি স্বেচ্ছাসেবী অরাজনৈতিক সংগঠন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনেরও প্রেসিডেন্ট। এ সংগঠনের মাধ্যমে একটি উদ্যোগ একটু চেষ্টা/এনে দেবে স্বচ্ছলতা স্লোগান নিয়ে তিনি সারাদেশে গরিব-অস্বচ্ছল মানুষকে হাঁস-মুরগি ও ছাগল বিতরণসহ আনুষঙ্গিক সহায়তা দিয়ে গেছেন।
গরিব অথচ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা দিয়েছেন। কমল বীজ উদ্ভাবন এবং তা কৃষকের মাঝে বিতরণ করে বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছেন।
শুধু তা-ই নয়, তারেক রহমান রাজনীতিতে যোগ দিয়েই বিএনপিকে সংগঠিত করার দায়িত্ব নেন। এজন্য প্রণয়ন করেন ব্যাপক কর্মসূচি। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের মধ্যেই তিনি বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা করেন। এসব সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দলের তৃণমূল নেতারা সরকারি কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন এবং মন্ত্রী, এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করার সুযোগ পান।
তিনি ২০০৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ২৩টি ভেন্যুতে ইউনিয়ন প্রতিনিধি সভা করেন। এসব সভায় দলের একেবারে তৃণমূল নেতারা বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন। তাদের এসব পরামর্শ পরে সুপারিশ আকারে সরকারের বিবেচনার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দেয়া হয়।
কর্মসূচি
তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ছাত্রদল ও বিএনপির সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে অন্যান্য বছরের মতো এবার রাজধানী ঢাকাতে কোন শোভাযাত্রা বের করেনি। তবে বুধবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
এছাড়া বুধবার রাত ১২টা ১ মিনিটে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে রাত ১২টায় কেক কাটা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বগুড়ায় জনসভা, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া এবং তিন এতিমকে বিবাহ দেয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া দেশব্যাপী জেলা/মহানগর/ বিশ্ববিদ্যালয় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, কোরআন খানির মাধ্যমে জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯.৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় সংসদের উদ্যোগে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও শিশু কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি ও বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা হবে। উদ্বোধন করবেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অন্য সংগঠনগুলোও নিজেদেও মতো কওে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দুপুর ২টায় কেন্দ্রীয় সংসদের উদ্যোগে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন দেশের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ । একই দিন সন্ধ্যা ৬ টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্ত হবে।
এছাড়া জেলা/মহনগর/বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হবে।
তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবারের মতো এবারো বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করেছে ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব।ক্যাম্পে গরীব ও দুস্থদের মাঝে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।
মন্তব্য চালু নেই