সুখরঞ্জনের ‘মুজিব হত্যার ষড়যন্ত্র’

তাজউদ্দিনকেও হেয় করার চেষ্টা করছে সরকার

কেবল জিয়াউর রহমান নন তাজউদ্দিন আহমেদকেও নেতিবাচকরূপে চিহ্নিত করতে সরকার অত্যন্ত নিঁখুত পরিকল্পনায় ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের ‘মুজিব হত্যার ষড়যন্ত্র’ গ্রন্থটি এ মূহুর্তে আলোচনায় এনেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত ‘তাজউদ্দীনের কাছে সেনা অভ্যুত্থানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জিয়া’ এমন প্রতিবেদনের ব্যাখায় রিজভী এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘পরিকল্পনাকারীদের টার্গেট শুধু জিয়াউর রহমানই নয়, টার্গেট তাজউদ্দিন সাহেবও। সম্প্রতি তাজউদ্দিন সাহেবের মেয়ে শারমিন যে বইটি লিখেছেন তাতে ক্ষমতাসীনরা মর্মাহত হয়েছেন, সুতরাং সরাসরি তাজউদ্দিন সাহেবকে কিছু বলা যাচ্ছে না, তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তাকে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

বর্তমান অবৈধ সরকারের এই মূহুর্তে হিংস্র খুনী রুপটি পর্দা দিয়ে আড়াল করার জন্য এই অপচেষ্টা করছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘গত পরশু (৩১ মে) দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত তাজউদ্দীনের কাছে সেনা অভ্যুত্থানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন জিয়া শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়ে বিস্মিত হয়েছি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের ‘মুজিব হত্যার ষড়যন্ত্র’ গ্রন্থে এ বিষয়টি নাকি লেখা আছে। তাজউদ্দিন সাহেবের মতো একজন সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতার কাছে গিয়ে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান সেনানায়ক অভ্যুত্থানের প্রস্তাব দিবেন এটি লোক হাসানো কল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছু ভাবা যায় না।’

রিজভী বলেন, ‘এরশাদ সাহেবও বইটির জন্য বাহবা দিলেন গ্রন্থকার সুখরঞ্জন দাসকে তারপরও বইটি বাংলাদেশে প্রকাশিত হলো না, আর এরশাদ সাহেবের আমন্ত্রণ পেয়েও গ্রন্থকার বাংলাদেশে আসলেন না। এগুলো এখন অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবেই রচনা করা হচ্ছে।’

রিজভী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘তাজউদ্দিন সাহেবের পরিবার, তার সহকর্মীরা কেউ কিছু জানলেন না, অথচ সেনা অভ্যুত্থানের বিষয়টি জানলেন বিদেশি এ সাংবাদিক। সেনাবাহিনীর একজন উপ-প্রধান মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সরকারের প্রধান এবং সরকারের একজন সাবেক মন্ত্রীকে এ ধরণের প্রস্তাব দিলেন আর তাজউদ্দিন সাহেব এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কোনো তৎপরতায় দেখালেন না, তার অর্থ কি তাহলে এই দাঁড়ায় তিনিও এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত?’

আসলে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসেবেই সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের গ্রন্থে জিয়াউর রহমান ও তাজউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে অলীক কল্পকাহিনী রচনা করা হচ্ছে। প্রতিদিনের গুম, খুন, হত্যা, চাঁদাবাজি, মুক্তিপণ আদায়সহ সারাদেশকে রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য অপপ্রচারের ধুম্রজাল সৃষ্টি করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির দপ্তর সম্পাদক বলেন, ‘বর্তমান আইনমন্ত্রী আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের নেতা ছিলেন এর আগে কারো জানা ছিল না। এখন অবৈধ সরকারের মন্ত্রী হয়ে সাচ্চা আওয়ামী লীগার হয়ে ওঠার জন্য কুরুচিপূর্ণ কথা বলার আওয়ামী সংস্কৃতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়েছেন।’ আইনমন্ত্রীকে হাস্যস্পদ সরকারের মন্ত্রী বলেও অভিহিত করেন তিনি।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে মতিয়া চৌধুরীরও কঠোর সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘অশ্লীল বক্তব্য প্রদানে আওয়ামী সংস্কৃতির প্রধান ধারক মতিয়া। তিনি জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে নিজ নেত্রীর কৃপা লাভ করেন। যদিও তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পিতার কী দিয়ে কী বানাতে চেয়েছিলেন তা দেশবাসী ভালভাবেই জানে।’



মন্তব্য চালু নেই