তরুণীকে দেখে কুৎসিত মন্তব্য, পরে জানা গেল তিনি পুলিশ!

বাইক চড়ে ঘুরে বেড়ানো যুবকেরা আকর্ষণীয় চেহারার সোনুকে দেখে সহজেই ফাঁদে পা দেয়। বাইক থেকে সোনুর দিকে উড়ে আসতে থাকে কুৎসিত মন্তব্য, অশালীন প্রস্তাব। আর তখনই নিজের পুলিশ অবতার প্রকট করে তোলেন সোনু।

রাস্তায় এমন ঘটনা নতুন নয়। যুবতী ও তরুণীদের দেখে কিছু ‘রোডসাইড মজনু’র মুখ থেকে ভেসে আসে অশ্লীল মন্তব্য। প্রতিবাদ করতে গেলে ঝামেলা বাড়বে- এই আশঙ্কায় মেয়েরাও সব কিছু মুখ বু‌ঝে সহ্য করেন। কিন্তু এবার এক তরুণীকে উত্যক্ত করার চরম মূল্য দিতে হল ঢোলপুরের রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো নীচ মনোভাবাপন্ন যুবকদের। হবে না-ইবা কেন। ওই তরুণী তো আর যে সে মেয়ে নন। তিনি হলেন ঢোলপুর থানার এসআই টিনু সোগরওয়াল।

বেশ কিছু দিন ধরেই রাজস্থানের শহর ঢোলপুরের এসপি-র অফিসে আসছিল অভিযোগ। জানানো হচ্ছিল, শহরের গার্লস স্কুল এবং কলেজের সামনে কিছু বাইকবাজ যুবকের আনাগোনা বাড়ছে। স্কুল বা কলেজর ছাত্রীদের যথেচ্ছ উত্যক্ত করছে তারা। মেয়েরা রাস্তায় বেরোলেই তাদের দিকে ছুড়ে দিচ্ছে অশালীন মন্তব্য।

কয়েক বার এই সমস্ত রোডসাইড রোমিওদের শায়েস্তা করতে মেয়েদের স্কুল কলেজের সামনে পুলিশ পোস্টিং করা হয়েছিল। কিন্তু খাকি উর্দিধারী পুলিশকে দেখেই রোমিওরা সতর্ক হয়ে যেত। এ বার তাই পুলিশের তরফে অভিনব পন্থা নেওয়া হয়। কলেজছাত্রী সেজে জিনস ও জ্যাকেট পরিহিত এসআই সোনু সোগরওয়াল গার্লস কলেজের সামনে ঘোরাফেরা শুরু করেন। অন্যান্য পুলিশ কর্মীরাও সাদা পোশাকে পোস্টেড থাকেন আশেপাশেই।

বাইক চড়ে ঘুরে বেড়ানো যুবকেরা আকর্ষণীয় চেহারার সোনুকে দেখে সহজেই ফাঁদে পা দেয়। বাইক থেকে সোনুর দিকে উড়ে আসতে থাকে কুৎসিত মন্তব্য, অশালীন প্রস্তাব। আর তখনই নিজের পুলিশ অবতার প্রকট করে তোলেন সোনু। কলার চেপে ধরে বিরাশি সিক্কার চড় কষিয়ে দেন মন্তব্যকারী যুবকের গালে। কাউকে আবার ধাক্কা দিয়ে বাইক থেকেই ফেলে দেন। বাজে মন্তব্য করে পালানোর চেষ্টা করছিল এক যুবক। সোনু ছুটে গিয়ে তার পিছনে কষালেন এক লাথি। অন্য পুলিশ কর্মীরাও ছুটে এলেন তড়িঘড়ি। চড়-থাপ্পড় সহযোগে হাতেনাতে যুবকের অপরাধের সাজা চুকিয়ে দিলেন তাঁরা।

এলাকাবাসীরা পুলিশের এ হেন উদ্যোগে খুশি। মেয়েরা বলছেন, তাঁরাও এ বার কয়েকটা দিন নিশ্চিন্তে হাঁটাচলা করতে পারবেন রাস্তায়। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এখনই অভিযুক্ত যুবকদের বিরুদ্ধে কোনও গুরুতর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রথমবার কেবল চড়-থাপ্পড় দিয়েই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর পরেও যদি তারা না শুধরোয়, তা হলে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে তাদের।

আর যাঁকে কেন্দ্র করে এত কিছু, সেই সোনু কী বলছেন? মিষ্টি হেসে তিনি জানাচ্ছেন, ‘আমি তো আমার কর্তব্য করেছি মাত্র। ভবিষ্যতে দরকার হলে আবারও এমন কাজ করব।’



মন্তব্য চালু নেই