ঢাবির ফেসবুকে বঙ্গবন্ধুর আগে ড. ইউনূসের নাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গত বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মারক গ্রন্থে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করায় কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। এবার ৫০তম সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে দেয়া স্ট্যাটাসে গর্বিত ছাত্রদের বর্ণনা দিতে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগে নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া বাদ দেয়া হয়েছে জাতির জনক খেতাবও।

শুক্রবার রাত ১১টার দিকে স্ট্যাটাসটি দিলে নজরে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং অন্যান্যদের। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচনা ঝড় উঠতে শুরু করে। সমালোচনার মধ্যে রাত ১টার দিকে পুনরায় স্ট্যাটাসটি সংশোধন করে কর্তৃপক্ষ।

তবে সংশোধনে বাদ পড়েছে দেশের প্রথম নোবেল জয়ী এ অর্থনীতিবিদের নাম। তার জায়গায় স্থান দেয়া হয়েছে কবি শামসুর রাহমানকে। তবে এবার বঙ্গবন্ধুর নাম উল্লেখ করা হয়েছে গর্বিত ছাত্র হিসেবে প্রথমে। যোগ হয়েছে জাতির জনকও। প্রথম স্ট্যাটাসে সত্যেন বসুকে ছাত্র হিসেবে উল্লেখ করা হলেও সংশোধিত স্ট্যাটাসে রয়েছেন শিক্ষক।

প্রথমে দেয়া স্ট্যাটাসটি ছিল- ‘অজস্র বাঁধা পেরিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২১ সালে। প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২৩-এ। তিলে তিলে বাড়তে বাড়তে আজ আমরা ৫০তম সমাবর্তনের দোরগোড়ায়। আমাদের এই যাত্রায় আমরা সাক্ষী হয়েছি `৪৮, `৫২, `৬২, `৬৯, `৭১ এবং `৯০-এর। আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মতো বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি ডঃ মুহাম্মাদ ইউনূস, সত্যেন বসু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ছাত্রদের ধারণ করতে পেরে।

আমাদের এই পথচলায় অবদান আছে আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ, গবেষক, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের। এবং বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের। আমাদের সমাবর্তনের সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা তাদেরকে। #৫০তমসমাবর্তন’।

সংশোধিত স্ট্যাটাসটি হচ্ছে- ‘অজস্র বাঁধা পেরিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২১ সালে। প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২৩-এ। তিলে তিলে বাড়তে বাড়তে আজ আমরা ৫০তম সমাবর্তনের দোরগোড়ায়। আমাদের এই যাত্রায় আমরা সাক্ষী হয়েছি `৪৮, `৫২, `৬২, `৬৯, `৭১ এবং `৯০-এর। আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মতো বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুর রাহমানের মতো ছাত্র; সত্যেন বসুদের মতো শিক্ষকদের ধারণ করতে পেরে।

আমাদের এই পথচলায় অবদান আছে আমাদের শিক্ষার্থী, শিক্ষকবৃন্দ, গবেষক, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের। এবং, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের। আমাদের সমাবর্তনের সুবর্ণ জয়ন্তীতে শুভেচ্ছা তাঁদেরকে। #৫০তমসমাবর্তন’।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান লিমন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে সমালোচনা করে লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে যে জামাতি ভুত ভর করছে তার প্রমাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড পেইজে। বঙ্গবন্ধুর নামের আগে ইউনূসের নাম।’

উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই ঢাবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মারক গ্রন্থের বঙ্গবন্ধু হলের বর্ণনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত বলে উল্লেখ করা হয়। একইভাবে জিয়া হলের বর্ণনায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকেও প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেব উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ হলে ওই লেখাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তৎকালীন রেজিস্টার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে তাৎক্ষণিকভাবে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বাজেয়াপ্ত করা হয় স্মারক গ্রন্থটি। দাবি উঠে উপাচার্যের পদত্যাগেরও।



মন্তব্য চালু নেই