ডিয়ার গভর্নমেন্টঃ “তিনি আমার পিতা, এটিএম বুথ নন”

শ্রদ্ধেয় শিক্ষামন্ত্রী,

আপনার চোখ যদি খুব বেশি খারাপ না হয়ে পরে তাহলে…ছবিতে লুঙ্গি পরা অতিব সহজ সরল একজন মানুষকে দেখতে পারছেন।

তিনি গত দেড় বছর যাবত ঘরে কবুতর পালন করে আসছেন।

তিনি জেগে জেগে স্বপ্ন দেখেন তার এই কবুতরের থেকে বাচ্চা হবে, সেই বাচ্চা কবুতরগুলোকে হাটে বেচে দিয়ে তার ছেলের সেমিস্টার ফি’র চার ভাগের একভাগ টাকা তিনি দেবেন।

কারণ তার ছেলে চার বছর আগে এক বড় পাপ করেছে। যেই পাপের শাস্তি সে মৃত্যুর পরও পাবে কিনা সন্দেহ!

সে চার বছর আগে কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধার কমতি থাকার কারণে চান্স পায়নি, এমতাবস্থায় পড়াশুনা ছেড়ে দেওয়া উচিৎ থাকলেও সে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার প্রকৌশলী হবার জন্য ভর্তি হয়েছে।

সে এখন শেষ বছরে অধ্যায়নরত।

গত চারটা বছরে তার প্রতিটি সেমিস্টার ফি যোগার করতে গিয়ে আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে প্রতিবারই, কিন্তু কি করে জানি মাটি আরো শক্ত হয়ে গিয়েছে।

ক্ষুধার কষ্ট আর পড়ার কষ্ট যেন এক হয়ে গিয়েছে ।

এই বছর এসে তিনি জানতে পারলেন তার অথর্ব সন্তানের সেমিস্টার ফি এর জন্য ১০ অথবা ৭% ভ্যাট এখন থেকে দিতেই হবে, নইলে সরকার না খেয়ে মারা যাবে।

আরো হাজারো সন্তান/পরিবার না খেয়ে মারা গেলেও সরকারের বেঁচে থাকাটাই যেন এখানে মূখ্য!

বিশ্বাস করুন, ৭% ভ্যাটে অতিরিক্ত ৩৫০০টাকা না দিলে হয়তো ভদ্রলোক এই মাসের বিদ্যুৎ বিলের জন্য বাড়িওয়ালার থেকে কথা শুনবেন না, কিংবা স্ত্রীর জন্য একটা ৭০০ টাকার মধ্যে ভালো শাড়ি, নয়তো, মেয়েটা শশুর বাড়ি যাবার বেলায় হাতে ৫০০টাকার একটা নোট দিতে পারবেন তিনি….।

বিশ্বাস করুন সরকার, লোকটার পিঠ ঠেকে গিয়েছে, উনি এর চেয়ে আর বেশি কিছু দিতে পারবেন না, হয়তো তিনি চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়বেন।

ঔষধ কিনবার জন্য সেই ভ্যাটের টাকাটা হলে কিন্তু এই যাত্রায় বেঁচে যাওয়া যায়…।

মনে রাখবেন, আমাদের মত পরিবার গুলোর দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও মেরুদণ্ড কখনো বেঁকে যায় না, আমরা প্রতি মূহুর্তে যুদ্ধ করব।

‘অধিকার আদায়ের যুদ্ধ, করুণা কিংবা ভিক্ষা পাওয়ার যুদ্ধ নয়।’

ডিয়ার গভর্নমেন্ট, “হি ইজ মাই ফাদার নট এটিএম বুথ”।

একজন মূর্খ্য সন্তান, শান

ফয়সাল মোহাম্মদ শান
শিক্ষার্থী,
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)



মন্তব্য চালু নেই