‘ডাহা মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা’
অবৈধ সম্পদ কিংবা উৎকোচের বিনিময়ে অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদানসহ সব অভিযোগকে ‘ডাহা মিথ্যা’ বললেন সিটি এসবির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিআইজি (প্রটেকশন) রফিকুল ইসলাম।
রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে টানা সোয়া তিন ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ডিআইজি রফিক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে দুদককে জানিয়েছি। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কোন ধরনের মন্তব্য করবো না।
এ সময় এক থেকে দশ লাখ টাকার বিনিময়ে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ডাহা মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা।’
প্রায় শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাকে দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। দুদকের উপপরিচালক হামিদুল হাসান তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে দুদক সূত্রে জানা যায়, ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ রফিকুল ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। পিতা মরহুম হাতেম আলী মোল্লা ছিলেন গ্রাম্য ডাক্তার। বহু কায়-ক্লেশে সন্তানদের বড় করেন তিনি।
রফিকুল ইসলাম ১৯৮৬ সালে চাকরিতে ঢোকার সময় গ্রামের বাড়িতে ছিল সাধারণ একটি টিনের ঘর। পরে কালিয়াকৈর ফুলবাড়িয়া বাজারে খাস জমিতে একটি টিন শেড বাড়ি করেন রফিক। চাকরির কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পান। পদ-পদবি ব্যবহার করে দু’হাতে কামাতে থাকেন অর্থ। কম করেও এখন তিনি শত কোটি টাকার মালিক।
তার অর্জিত সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ৩টি বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি টাকা। উত্তরায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের একটি বাড়ি কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছেন। রফিকুল ও তার পরিবারের সদস্যরা দুটি দামি গাড়ি ব্যবহার করেন, যার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি টাকা। সূত্রমতে, ডিআইজি রফিকুল ইসলামের মালিকানায় কালিয়াকৈরের নাবিবহর মৌজায় রয়েছে ৮০/৮৭৭, ৮৭৮, ৮৭৯, ৮৮১ ও ৮৮৩ নম্বর দাগে ৭৪ শতাংশ জমি। যার আনুমানিক মূল্য ৩২ লাখ টাকা।
দুদক সূত্রে আরো জানা যায়, মুথাজুড়ি মৌজার ছলংগায় ১২ বিঘা জমি রয়েছে পুলিশের ওই কর্মকর্তার। যার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। একই মৌজায় ২৬৯৩ ও ৮৮৪৪ নম্বর দাগে ২৪ শতাংশ জমি। যার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা। কড়ই চালায় ২০ বিঘা জমি, মূল্য ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ফুলবাড়িয়া বাজার সংলগ্ন ২০৯৮ নম্বর দাগে ১৪০ শতাংশ জমি। যার মূল্য ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ফুলবাড়িয়া উত্তরপাড়ায় রয়েছে ২৪ শতাংশ জমি। যার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা। মুথাজুড়ি বাজার সংলগ্ন ২১২১ নম্বর দাগে ১০০ শতাংশ জমি, যার মূল্য প্রায় ৮০ লাখ টাকা। একই মৌজার ২৪৭৩ নম্বর দাগে ১৭৫ শতাংশ জমি। মূল্য প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২২৪২ নম্বর দাগে রয়েছে ১৪২ শতাংশ জমি, মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ ছাড়া রফিকুলের স্ত্রী শিরীন আক্তারের নামে মুথাজুড়ি মৌজার ৩০০৩, ৩০০৪, ৩০১১ ও ৩০১২ নম্বর দাগে ফুলবাড়িয়া দক্ষিণ পাড়ায় (কসাইর চালা) রয়েছে ৮ বিঘা জমি। যার আনুমানিক মূল্য ৬ কোটি টাকা। এ ছাড়াও নামে-বেনামে রয়েছে বিপুল নগদ অর্থ। তিনি অন্তত ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলেও জানা গেছে।
মন্তব্য চালু নেই