ডাক্তারকে আপা সম্বোধন করায় রোগীর ছেলেকে মারধর
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে একজন ইন্টার্নি চিকিৎসককে আপা সম্বোধন এবং ফ্যানের সুইচ দেয়াকে কেন্দ্র করে ইন্টার্নি চিকিৎসকরা রোগীর সঙ্গে আসা একজনকে বেধরক মারপিট করেছে। পরে তারা জরুরি বিভাগে তালা বন্ধ করে কর্মবিরতি শুরু করেন।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল পৌনে ৪টা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চলে। সন্ধ্যার আগে হাসপাতালে কার্যক্রম সীমিত আকারে চালু করা হলেও বেশির ভাগ সেবাই বন্ধ ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের কোনাগাতি এলাকার আলাউদ্দিন (৬০) হৃদরোগে আক্রান্ত হলে রাত ৩টায় বগুড়া শজিমেক মেডিসিন বিভাগের ৪৭৫ নম্বর কক্ষের মেঝেতে ভর্তি করা হয়। হৃদরোগের পাশাপাশি তার অ্যাজমাও ছিল।
রোগীর ছেলে রফিক সরকার জানান, রোববার বেলা ১১টার দিকে তার বাবার অ্যাজমার টান দেখা দিলে তিনি ফ্যান বন্ধ করতে সুইচ কোথায় তা খুঁজছিলেন। এ সময় এক নারী ইন্টার্নি চিকিৎসক সেখানে আসেন। তাকে আপা বলে সম্বোধন করে ফ্যানের সুইচ কোথায় জানতে চান তিনি। এসময় ওই চিকিৎসক উত্তরে বলেন আমি কি আয়া নাকি? আমি কি এখানে থাকি? এর পরপরই ইন্টার্নি চিকিৎসক নাজের উদ্দিন ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি এসেই মারপিট শুরু করে বলেন, ‘এই তুই চিকিৎসকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করছিস কেন? তারপর একটি রুমে নিয়ে মারপিট ও কান ধরে একশ বার উঠবস করে আটকে রাখে তাকে।’
মেডিকেল ফাঁড়ির টিএসআই শাহআলম জানান, মারপিটের ঘটনা শুনে রফিক সরকারকে উদ্ধার করা হয়। এরপরই আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা।
ইন্টার্নি চিকিৎসক কুতুব উদ্দিন জানান, চিকিৎসকদের নিরাপত্তাসহ সাত দফা দাবিতে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে আমরা জরুরি বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে কর্মবিরতি পালন করছি। সাত দফা দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
শজিমেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মাসুদ আহসান জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা জরুরি সভা করছি। জরুরি বিভাগ চালুসহ চিকিৎসা কাজ অব্যাহত রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, জরুরি বিভাগ বন্ধ থাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া রোগী, শিশুসহ অন্তত ৪০/৫০ জন রোগী ফিরে গেছে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান করছেন।
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলাউদ্দিন সরকার রোববার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় মারা যান। তার স্বজনরা দাবি করেছেন বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক আলাউদ্দিনের খোঁজখবর নেননি। যে কারণে বিনা চিকিৎসায় আলাউদ্দিন মারা গেছেন।
মন্তব্য চালু নেই