ঠিক মাঝরাতে দরজায় ঠক ঠক? খুললেই পড়তে পারেন এই মহা বিপদে…
১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগ। বেঙ্গালুরু শহরে দাবানলের মতো এক খবর ছড়িয়ে পড়ে। নিশুত রাতে নাকি কেউ দরজায় টোকা দিচ্ছে প্রায়শই। দরজা খুললে সর্বনাশ!
অনেকটা বাংলার নিশিডাকের মতোই এক আরবান লিজেন্ড গড়ে ওঠে বেঙ্গালুরুর মতো শহরে। কোনও পিশাচ অথবা ডাইনি নাকি তার রক্ততৃষা চরিতার্থ করতে রাতদুপুরে কড়া নাড়ে গৃহস্থের দরজায়। দরজা খুলে বাইরে গেলেই তার খপ্পরে পড়তে হবে। কেউ বলতে থাকেন, সেই অপ্রাকৃত জীবটি তার ডাকে সাড়া দেওয়া মানুষের রক্ত পান করে দেহটা ফেলে রেখে যায়। কেউ আবার আরও এক কাঠি উপরে গিয়ে বলতে থাকেন, মানুযের আত্মাকে সে তার ঝোলায় পোরে। তার পরে তার নিজের কাজে লাগায়।
এহেন পিশাচকে নিয়ে গুজব বাড়তে শুরু করে। এমতাবস্থায়, কে বা কারা যেন বেরও করে ফেলেন এই অপ্রাকৃতকে জব্দ করার দাওয়াই। তাঁরা জানান, বাড়ির সদর দরজার গায়ে খড়ি দিয়ে ‘নালে বা’ কথাটি লিখে রাখলেই সে জব্দ। কন্নড় ভাষার ‘নালে বা’ কথাটির বাংলাঅর্থ— ‘আজ নয়, কাল এসো’। এই নিরীহ বাক্যটি পড়েই নাকি সেই অপ্রকৃত নিঃসাড়ে চলে যাবে। এহেন দাওয়াই এতটাই বিখ্যাত হয়ে পড়ে যে, সেই অপ্রাকৃতের নামই দাঁড়িয়ে যায় ‘নালে বা’।
বিংশ শতক শেষ হয়ে একবিংশে গড়ায় দেশ। ১৯৯০-র বেঙ্গালুরুও আর নেই। তার চেহারা-চরিত্র বিপুল বদলেছে গত দু’-আড়াই দশকে। শহরের নতুন বাসিন্দারা জানেনই না, এক সময়ে কী পরিমাণ দাপাদাপি ঘটেছিল ‘নালে বা’ নামক এক জীবকে ঘিরে। কিন্তু শহরের আদি বাসিন্দারা আজও নিজেদের অন্তরে লালন করে চলেছেন ‘নালে বা’-র স্মৃতি। নিজেদের ব্লগে অনেক বেঙ্গালুরুবাসীই স্মৃতিচারণ করেন ‘নালে বা’-পীড়িত সেই সব দিনের। কেউ কেউ তো স্পষ্টই চাইছেন, ‘নালে বা’ ফিরে আসুক। শহরের এথনিসিটির স্বার্থেই নাকি তাকে প্রয়োজন!
মন্তব্য চালু নেই