টেস্টেও হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

দ্বিতীয় দিন শেষে টাইগারদের মনে ছিল জয়ের স্বপ্ন। তবে সেই স্বপ্ন চতুর্থ দিনে এসে হতাশায় পরিণত হয়। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় মাত্র ১৭৩ রানে অলআউট বাংলাদেশ দল। আর এতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০৯ রানের। আর রাভালের উইকেট হারিয়ে সহজেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কিউইরা। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর টেস্টেও হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।

৬৫ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের ষষ্ট ওভারে সাউদির করা অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিচেল স্যান্টনারকে ক্যাচ দেন মুশফিকের ইনজুরিতে দায়িত্ব পাওয়া তামিম ইকবাল (৮)। তামিমের দ্রুত বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহ। দুইজনে মিলে গড়েন ৪১ রানের জুটি।

তবে এরপরই হয় ছন্দপতন। গ্র্যান্ডহোমের বলে গালিতে জিত রাভালের দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরে ফিরে যান সৌম্য সরকার (৩৬)। সৌম্যের বিদায়ের পর দুইবার জীবন পেয়েও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি সাকিব। ব্যক্তিগত ৮ রান করে সাউদির বলে গ্র্যান্ডহোমের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে গেছেন টাইগার এই অলরাউন্ডার।

এরপর সবাই তাকিয়ে ছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাটের দিকে। তবে সবাইকে হতাশ করে ব্যাটের কানায় লেগে ওয়াগনারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান রিয়াদ (৩৮)। একই ওভারে সাব্বির ও সোহানকে বিনা রানে ওয়াটলিংয়ের তালুবন্দি করান ওয়াগনার। মাটি কামড়ে পড়ে থাকা তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শান্তকে (১২) বোল্ড করেন ট্রেন্ট বোল্ট। শান্তের বিদায়ের পর শূন্য রানে জীবন পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ ফিরেন ৪ রানে। ট্রেন্ট বোল্টের শর্ট বলে টম ল্যাথামকে শর্ট লেগে সহজ ক্যাচ দেন এই তরুণ।

মিরাজের বিদায়ের পর নবম উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়ে লিড ১০০ পার করেন তাসকিন আর রাব্বি। একটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩০ বলে ৩৩ রান করে বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তাসকিন। এরপর রুবেল হোসেনকে ফিরিয়ে ওয়াটলিংয়ের তালুবন্দি করে বাংলাদেশকে ১৭৩ রানে গুটিয়ে দেন টিম সাউদি।
এর আগে সোমবার ক্রাইস্টচার্চে হ্যাগলি ওভালে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা আধা ঘণ্টা আগে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও উইকেট আর্দ্র থাকার কারণে তা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় আগের দিনের ৭ উইকেটে ২৬০ রান নিয়ে ব্যাটিং করতে নামে নিউজিল্যান্ড। দিনের শুরুতেই ফিরে যেতে পারতেন টিম সাউদি। ব্যক্তিগত ১৬ রানে কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে সহজ ক্যাচ মিস করেছে মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। এক্সট্রা কভারে সেই মিরাজের তালুবন্দি করেই তাকে ফেরান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

এরপর নেইল ওয়াগনারকে নিয়ে দলের হাল ধরেন নিকোলস। ৫৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে ক্রমেই বিজ্জনক হয়ে উঠছিলেন তারা। তবে তাদের থামান মিরাজ। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছানোর আগেই তাকে বোল্ড করেন এ তরুণ। তবে এ আউটে কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছেন মিরাজ। এগিয়ে এসে বলকে অনেকটা ইয়র্কার বানিয়ে ফেলেন নিকোলস। বল ব্যাটের কানায় লেগে স্ট্যাম্পে আঘাত হানলে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন তিনি। ১৪৯ বলে ১২টি চারের সাহায্যে ৯৮ রান করেন তিনি।

এরপর অনেকটা অলসভাবেই দৌঁড়ে বাংলাদেশকে নিজের উইকেট উপহার দেন ওয়েগনার। তবে এ আউটে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের চৌকসতা ফুটে ওঠে। বলে ধরে দারুণ ভাবে উইকেট ভাঙেন তিনি। ওয়াগনার উইকেট ফিরেও লাফিয়ে ওঠায় আউট হয়ে যান। তবে আউট হওয়ার আগে দলের পক্ষে মূল্যবান ২৬ রান যোগ করেন তিনি। বাংলাদেশের পক্ষে ৫০ রানে ৪টি উইকেট পেয়েছেন সাকিব। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মিরাজ ও রাব্বি। এছাড়া ১টি উইকেট পেয়েছেন তাসকিন।



মন্তব্য চালু নেই