টেকনাফে পানের বরজ নির্মাণের উপকরনের দাম বৃদ্ধি, বিপাকে পান চাষী
টেকনাফের অর্থকরী ফসল সমূহের অন্যতম হচ্ছে পান চাষ। এ চাষের উপর নির্ভর করে ৮০ ভাগ পরিবার। এ পরিবার গুলো বেশীর ভাগই নি¤œ বিত্ত। পানের মৌসুমে পান চাষ করে সারা বছরের খাদ্য ও সংসারের অন্যান্য ভরণ পোষণ যোগায়। অন্য কোন পেশা নেই তাদের। পানের মৌসুম আসলেই বিভিন্ন মহাজন থেকে কড়া সুদে ধারে টাকা নিয়ে পানের চাষ করে। মৌসুম ভাল হলে পান বিক্রয় করে কর্জ পরিশোধ করে সংসারের ব্যয়ভার মেটায়। না হয় পরবর্তী বছরে ঐ কর্জের দ্বিগুন পরিশোধ করতে হয়। টেকনাফের পান চাষী কবির আহাম্মদ, আবু ছৈয়দ, নজির আহাম্মদ, এনায়েত উল্লাহ, ফজল কবির সহ ১৫/২০জন চাষী জানায়, একটি ১০হতে ২০ হাজার চারার পানের বরজ চাষ করতে ১ হতে ২ লাখ টাকা খরচ পড়ে। যদি উপকরনের দাম কম হয় তাহলে ১ হতে দেড়লাখ টাকা দিয়ে করা সম্ভব হয়। চলতি মৌসুমে বাশঁ, বেত, মুরগীর বিষ্টা, গরুর গোবর সহ প্রতিটি উপকরনের দাম অস্বাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ১০ হাজার চারার বরজ করতে কমপক্ষে ২ লাখ টাকার উর্ধে খরচ পড়বে। যা চাষ করে নির্বাহ করা মোটেও সম্ভব হবেনা। এ ছাড়া আমরা নি¤œ বিত্ত পরিবার, এত টাকা কোথায় থেকে জোগাড় করব। মহাজনেরা এত টাকা আমাদেরকে দিতে চাইনা । যেহেতু আমাদের স্থাবর অস্থাবর কোন সম্পদ নেই। আমাদের রয়েছে শুধু মাত্র শারিরিক শক্তি । এদিকে টেকনাফের শত শত উৎপাদিত পান দেশ ছাড়াও বিদেশে রপ্তানী হচ্ছে। অথচ সরকারী ভাবে টেকনাফে পান চাষীদের কোন পৃষ্টপোষকতা নেই। নেই আধুনিক পান চাষের প্রশিক্ষণ। মানদান্দা আমলের পদ্ধতিতে পান চাষ করে আমরা যুগ যুগ ধরে সংসার চালিয়ে আসচ্ছি। কোন কোন সময় কারও কথায় আধুনিক পান চাষ করে ফলন ফলাতে পারিনা। এ সম্বন্ধে অভিজ্ঞতা না থাকায় পান চাষে বিভিন্ন মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়। তা প্রতিরোধের উপায় না পেয়ে পানের বরজ ফেলে চলে আসতে হয়। স্থানীয় পান চাষীদের অভিমত টেকনাফ পান চাষের উপযুক্ত স্থান। সরকারী পৃষ্টপোষকতা না থাকায় আমরা প্রতিবছর এখাত থেকে বিপুল অর্থ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এ ছাড়া রয়েছে আধুনিক পান চাষের উপর কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ ও তদারকি না থাকায় আমরা চাষীরা বিপুল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সরকারী পৃষ্টপোষকতা, ব্যাংকের ঋণ, আধুনিক প্রশিক্ষণ ও তদারকি পেলেই টেকনাফ থেকে উৎপাদিত পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করে প্রচুর বিদেশী মুদ্রা অর্জন করতে পারতাম।
মন্তব্য চালু নেই