টিভি, ওয়াইফাই কী নেই টয়লেটে!
সুপারমার্কেট হোক আর চাই পথের পাশে, পাবলিক টয়লেটটি ঝকঝকে,স্বাস্থ্যসম্মত হলেই সবাই খুশি। তবে উন্নত থেকে অনুন্নত, অনেক দেশেই পাবলিক টয়লেট নোংরা থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে সম্প্রতি চীন এসব অভিযোগ থেকে দূর করার চেষ্টা করছে। নিজেদের ভাবমূর্তি বিদেশিদের কাছে উজ্জল করতে ঝকঝকে-তকতকের পাশাপাশি একটু ভিন্ন ধাঁচের পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা করেছে। এসব টয়লেটে টেলিভিশন, ওয়াইফাই সবই রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আধুনিক প্রযুক্তির কল্যানে চীনের মানুষের জীবনযাত্রার ধরণটাই পাল্টে দিয়েছে। শহরগুলি অনেক আধুনিক হয়েছে। একশ কোটিরও বেশি জনগণের সবার কাছেই রয়েছে মোবাইল ফোন। তবে একটি জিনিস প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম অপরিবর্তিত ছিল। আর সেটা হচ্ছে শহরগুলির পাবলিক টয়লেট। সেই পুরোদিনের মতো ইট-পাথরের সাদা-মাটা টয়লেট ব্যবস্থাই রয়েছে শহরগুলির গণজমায়েতপূর্ণ স্থানে। তবে সম্প্রতি সরকার এ ব্যবস্থা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী তিন বছরের মধ্যে রাজধানী বেইজিংয়ের কাছে ফাংশান জেলায় ৫৭ হাজার টয়লেট নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে অনেকগুলিতেই থাকবে উন্নততর প্রযুক্তি।
ইতিমধ্যে ফাংশানে উন্নততর প্রযুক্তি সম্পন্ন কয়েকটি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। এসব টয়লেটে রয়েছে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য আলাদা টেলিভিশন, ওয়াইফাই ব্যবস্থা, মৃদু বাদ্যযন্ত্র সঙ্গীত, জানালা ঘেঁষে অ্যালোভেরা গাছের চারা। প্রাকৃতিক ক্রিয়া শেষে টয়লেটে ফ্ল্যাশ করার শব্দটিও ভিন্ন। এছাড়া টয়লেটের সঙ্গে লাগোয়া বিশ্রামকক্ষে রয়েছে ভেন্ডিং মেশিন, এটিএম বুথ, মোবাইল ফোন চার্জব্যবস্থা এবং ইলেকট্রিক গাড়ি চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা।
সরকারের এ উদ্যোগে অনেকে অবশ্য বিরক্তিও প্রকাশ করেছে। লি নামে এক বিক্রয়কর্মী বেশ ক্ষুব্ধ স্বরেই বলেন, ‘সরকারের হয়েছেটা কী? তাদের আসলে এতো টাকা হয়েছে যে খরচ করার জায়গা পাচ্ছে না।’
লি জুনিয়াং নামে ফাংশানের এক কৃষক বলেন,‘ টয়লেট এতো সুন্দর করার দরকারটা কী? সরকার হাত বাড়াচ্ছে এবং জনগণকে কর দিতে বলছে। এসবের পরিবর্তে তারা কেন দরিদ্রদের পেছনে অর্থ ব্যয় করছে না?
সরকারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের পাশাপাশি এবার টয়লেট ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক কর্ম সারার সময় ফ্রি ওয়াইফাই আর টেলিভিশন দেখার সুবিধা পেয়ে অনেকে লম্বা সময় টয়লেটে অবস্থান করছেন।
সম্প্রতি লি পিলিং নামে এক দন্ত চিকিৎসক সহকারী পাঁচ মিনিট অপেক্ষার পরও টয়লেট ফাঁকা পাননি। শেষ পর্যন্ত তাকে চিৎকার করে বলতে হয়েছে-‘ সময় শেষ। আমাদের কারো কারো কাজে যাওয়া প্রয়োজন।’
মন্তব্য চালু নেই