টার্গেট ৫ লক্ষাধিক!
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। দলটির ঢাকা মহানগরসহ আশপাশের জেলাগুলোতেও এ প্রস্তুতির ঢেউ লেগেছে। জনসভায় রেকর্ড সংখ্যক কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতির মাধ্যমে সরকারকে ভবিষ্যত আন্দোলনের বার্তা দিতে চায় দলটি। এ জন্য পাঁচ লক্ষাধিক কর্মী-সমর্থকের সমাগম ঘটানোর প্রত্যাশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
সূত্র বলছে, বিএনপি তার এবারের সমাবেশকে শুধু একটি জনসভা হিসেবে দেখছে না। কারণ, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব দলের অংশগ্রহণে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক আগাম নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের যাওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে সেই দাবি নাকচ করে দেওয়ার পাশাপাশি বলা হচ্ছে, ‘২০১৯ সালের আগে কোনো নির্বাচন নয়।’ সেজন্য ভবিষ্যত সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামার আগে এই জনসভায় ব্যাপক লোকসমাগম ঘটিয়ে ক্ষমতাসীনদের আন্দোলনের বার্তা দিতে চায় বিএনপি।
বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক জড়ো করার চ্যালেঞ্জ থেকে জনসভার উত্তাপ ঢাকা ছাপিয়ে আশপাশের জেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। জেলাগুলোর শীর্ষ নেতারা ইতিমধ্যে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে জন¯্রােত নামবে বলে মনে করছে বিএনপি। সব মিলিয়ে পাঁচ লক্ষাধিক কর্মী-সমর্থক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘জনসভায় অনেক মানুষের উপস্থিত হবে। গাজীপুর থেকে নেতা-কর্মীরা জনসভায় যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।’
নরসিংদী বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন জানান, জনসভা সফল করতে একাধিকবার জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিটিং করা হয়েছে। সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা জনসভার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
মুন্সীগঞ্জ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর রিপন মোল্লা জানান, তার জেলা থেকে প্রায় ১৫ হাজার নেতা-কর্মী জনসভায় যাবেন।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগম ঘটবে বলে মনে করেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘সেদিন জনগণের ঢল নামিয়ে আমরাই আমাদের অতীত রেকর্ড ভাঙবো। ঢাকা জনসমুদ্রে পরিণত হবে।’
মহানগরের সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল জানান, জনসভার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অনুমতি জন্য অপেক্ষা করছি। অনুমতি পাওয়া গেলে মঞ্চ নির্মাণ ও আনুষাঙ্গিক কাজ শুরু হবে। নির্দিষ্ট করে না বললেও ব্যাপক লোকসমাগমের প্রত্যাশা করছেন তিনি।
দিবসটি উপলক্ষে প্রথমে ৭ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি দেওয়া হলেও পরে তা একদিন পিছিয়ে ৮ নভেম্বরের জন্য আবেদন করে বিএনপি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারের নিহত হওয়ার পর সেনাপ্রধানের দায়িত্বে আসেন জিয়াউর রহমান। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে একটি অভ্যুত্থান হয়, জিয়া হন গৃহবন্দী।
৭ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের আরেক সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়া। এর মধ্য দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন তিনি।
বিএনপি এই দিনকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস, আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস এবং জাসদ সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালন করে।
মন্তব্য চালু নেই