টাঙ্গাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত ৩
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষকালে তিন জন নিহত হয়েছেন।
মা ও ছেলেকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের প্রতিবাদে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ও টিয়ার শেল ছোড়ে। এ ঘটনায় তিনজন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়।
শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনার পর টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকেলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় হাসপাতালে দু জনের মৃত্যু হয়। অপর জন ঢাকা আনার পথে মারা যান।
নিহতরা হলেন- কালিহাতী উপজেলার সাতুটিয়া গ্রামের ফারুক হোসেন, ঘাটাইল উপজেলার কালিয়া গ্রামের শামিম মিয়া ও শ্যামল চন্দ্র সরকার (৩৫)। শামীম টাঙ্গাইল মেডিক্যালে ও ফারুক হোসেন কালিহাতী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মারা যান।
নিহতদের দাফনের জন্য তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।
কালিহাতীতে পরকীয়ার জেরে স্ত্রীর প্রেমিকের মাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী বৃহস্পতিবার সড়ক অবরোধ করে। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ।
তারই জের ধরে শুক্রবার জুমার নামাজের পর এলাকাবাসী কালিহাতী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ করে। পরে তারা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে রাখে। পুলিশ অবরোধ ওঠাতে গেলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়ে। সে সময় তারা এক পুলিশ সদস্যকে আটক করে মারধর করতে থাকে।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে অবরোধকারীদের ধাওয়া দেয়। সে সময় পুলিশ অবরোধকারীদের হঠাতে লাঠিপেটা, প্রায় ৬০ রাউন্ড গুলি, রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এতে এক নারীসহ ছয় জন গুলিবিদ্ধ হন। এ ছাড়া আরো প্রায় অর্ধশত আহত হয়। গুলিবিদ্ধদের কালিহাতী স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও টাঙ্গাইল মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।
প্রসঙ্গত, কালিহাতী উপজেলা সদরের সাতুটিয়া এলাকার মোজাফফর হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম ওরফে রোমার স্ত্রী হোসনে আরার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল উপজেলার শ্রমজীবী আলামিনের (১৭) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কয়েক মাস আগে আলামিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় হোসনে আরা। পরে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর গত ১২ সেপ্টেম্বর আবারো আলামিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় হোসনে আরা।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে রোমা ও তাদের পরিবারের লোকেরা আলোচনার কথা বলে আলামিন, তার মা ও হোসনে আরাকে রোমাদের বাড়িতে ডেকে আনা হয়। পরে বাড়ির উঠানে আলামিনকে বিবস্ত্র করেন রোমা ও তার ভগ্নিপতি হাফিজ। এ সময় আলামিনের মাকেও বিবস্ত্র করা হয়। মারধরের পাশাপাশি আলামিনের মাকে ঘরে নিয়ে রোমা ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মন্তব্য চালু নেই